সামনেই আমের মরসুম। এ বার আম গাছে প্রচুর মুকুল এসেছে। আম খেতে ইচ্ছে করলে হয় তা বাজার থেকে কিনতে হবে, অথবা সুযোগ থাকলে গাছ থেকে তা পেড়েও খাওয়া যেতে পারে। ঠিক একই ভাবে আপনি কিনতে পারেন শেয়ারও। হয় বাজার থেকে, না-হয় সরাসরি সংশ্লিষ্ট কোম্পানি থেকে, নতুন ইস্যু বা ইনিশিয়াল পাবলিক অফারের (আইপিও) মাধ্যমে।
আমের মুকুলের মতোই এ বার বাজারে আসতে চলেছে একঝাঁক নতুন ইস্যু। শেয়ার বাজার বেশ কিছু দিন ধরে তেজ ধরে রাখায় অনেক সংস্থা নতুন ইস্যু আনতে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে। গত কয়েক মাসে যে-সব নতুন ইস্যু বাজারে এসেছে, তাদের বেশ কয়েকটি ভাল লাভের সন্ধান দেওয়ায় সাধারণ লগ্নিকারীরাও এ বার আবেদন করতে উৎসাহিত হচ্ছেন।
সম্প্রতি বিএসই ইন্ডিয়ার (আগের নাম বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জ) আইপিও-তে আবেদন জমা পড়েছিল প্রয়োজনের তুলনায় ৫০ গুণেরও বেশি। ভাল লাভের সুযোগ করে দিয়েছে আরবিএল ব্যাঙ্ক, পিএনবি হাউসিং ফিনান্স, বিএসই ইন্ডিয়া, আইসিআইসিআই প্রু ইনশিওরেন্স-সহ বেশ কিছু সংস্থা। সঙ্গের সারণিতে দেওয়া হল কিছু তথ্য।
যাঁরা শেয়ার বাজারে প্রথম প্রবেশ করতে চান, তাঁরা তা করতে পারেন নতুন ইস্যুর পথ ধরে। এর জন্য প্রয়োজন শুধু একটি ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট খোলার। এখন আবেদনের সঙ্গে টাকাও জমা করতে হয় না। অ্যাপ্লিকেশন্স সাপোর্টেড বাই ব্লক্ড অ্যামাউন্ট বা ‘অ্যাসবা’ ফর্ম সই করে দিলেই হল। আপনার নামে শেয়ার অ্যালট বা বণ্টন হলে তবেই আপনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কেটে নেওয়া হবে। অ্যালটমেন্টও করা হয় ইস্যু বন্ধ হওয়ার মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই। দ্রুত হয়ে যায় নথিভুক্তিও। ভাল দাম পেলে চটজলদি বিক্রি করে লাভ ঘরে তুলে নেওয়া যায়। অথবা ধরে রাখা যায় ভবিষ্যতে আরও বাড়বে এই আশায়।
ইকুইটিতে লগ্নির বড় সুবিধা আছে পরের দিকে। শেয়ারের উপর পাওয়া ডিভিডেন্ড পুরোপুরি করমুক্ত। অন্য দিকে, এক বছর শেয়ার ধরে রাখার পরে বিক্রি করে যদি কোনও লাভ হয়, তার উপরও কোনও করের দায় বর্তায় না। নতুন ইস্যুতে শেয়ার হাতে পাওয়ার এক বছরের মধ্যে বিক্রি করলে অবশ্য লাভের উপর কর দিতে হবে ১৫ শতাংশ হারে।
মার্চ মাসে বাজারে আসছে একগুচ্ছ নতুন ইস্যু। উত্তরপ্রদেশ-সহ ৫টি রাজ্য বিধানসভার নির্বাচনের ফলাফল যদি বাজারে জল ঢেলে না দেয়, তবে নতুন ইস্যুর রমরমা চলবে নতুন অর্থবর্ষের গোড়াতেও। আগামী কয়েক সপ্তাহে আমরা যে-সব আইপিও-কে বাজারে দেখতে পাব, তা দেওয়া হল সঙ্গের সারণিতে। এ ছাড়া ভবিষ্যতে যে-সব নতুন ইস্যু বাজারে আসার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে তার মধ্যে আছে ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ, গো এয়ার, এসবিআই লাইফ ইনশিওরেন্স, স্টেট ব্যাঙ্ক হোম ফিনান্স, হিন্দুজা লেল্যান্ড ফিনান্সের মতো সংস্থার নাম।
এদের প্রায় প্রত্যেকটিরই বাজারে বেশ সুনাম আছে। অর্থাৎ ইস্যুর দাম যদি অত্যধিক না-হয়, তবে এই সব শেয়ারে লগ্নি প্রথম থেকেই লাভজনক হতে পারে। সব ইস্যুই যে সমান ভাল, তা নয়। একটু দেখেশুনে আবেদন করতে হবে। দেখতে হবে, সংস্থার মানের সঙ্গে আইপিও-র দামের সামঞ্জস্য আছে কি না। প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। ভাল ইস্যুতে শেয়ার উঠলে তা বড় লাভের সন্ধান দিতে পারে।
আইপিও-তে বর্তমানে ন্যূনতম আবেদনের অঙ্ক ১৪-১৫ হাজার টাকা। ফলাফল জানতে বেশি অপেক্ষা করতে হয় না। সফল হলে ব্যাঙ্ক থেকে যেমন টাকা সংশ্লিষ্ট কোম্পানির অ্যাকাউন্টে চলে যায়, তেমনই আপনার ডিম্যাট অ্যাকাউন্টে চলে আসে অ্যালট হওয়া শেয়ার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy