আমেরিকার আইনসভায় নাগরিক বাদে অন্যান্যদের বিদেশে পাঠানো রোজগারের (রেমিট্যান্স) উপরে ৫% কর চাপানোর প্রস্তাবে ইতিমধ্যেই চিন্তায় পড়েছেন বহু অনাবাসী ভারতীয়। কারণ এ দেশে পরিবার-পরিজনকে অর্থ পাঠাতে তাঁদের খরচ বাড়বে। এ বার এই দেশের বাণিজ্য উপদেষ্টা জিটিআরআই-এর বক্তব্য, প্রস্তাবটি পাশ হয়ে আইনের আকারে কার্যকর হলে আমেরিকায় কর্মরত পেশাদারদের ভারতে অর্থ পাঠানো কমতে পারে। চাপে পড়তে পারে সেই টাকায় জীবনধারণ করা বহু পরিবার। বিদেশি মুদ্রার সরবরাহ কমায় টাকার দামেও কিছুটা ধাক্কা লাগা অসম্ভব নয়।
সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, এমনিতেই মূল্যবৃদ্ধি সব কিছুর খরচ বাড়ানোয় জীবনযাপন আগের থেকে কঠিন হয়েছে। এ বার যদি আমেরিকার এই সিদ্ধান্তে ভারতীয় পরিবারগুলিতে বিদেশ থেকে অর্থ আসা কমে যায়, সেটা অনেক ক্ষেত্রেই সমস্যার কারণ হতে পারে। কারণ, বহু প্রবীণ বাবা-মা বিদেশে কর্মরত সন্তানের পাঠানোর অর্থের উপর নির্ভরশীল। অনেক ক্ষেত্রে ভারতে রয়ে যাওয়া স্ত্রী-সন্তানের ভরণপোষণ ধাক্কা খেতে পারে এতে।
গত ১২ মে আমেরিকার প্রতিনিধিসভায় পেশ হওয়া বিলে বলা হয়েছে, গ্রিনকার্ডধারী এবং অস্থায়ী ভিসা (এইচ-১বি, এইচ-২এ) নিয়ে সে দেশে কাজ করা পেশাদারদের অন্য দেশে পাঠানো রোজগারের উপরে কর চাপানো হোক। আমেরিকার নাগরিকদের ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য হবে না। জিটিআরআই-এর বক্তব্য, ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে বিদেশে থাকা ভারতীয়েরা এ দেশে মোট ১২,০০০ কোটি ডলার পাঠিয়েছিলেন। টাকার অঙ্কে প্রায় ১০,২৭,২০০ কোটি। এর মধ্যে ২৮% মতো আমেরিকা থেকে এসেছিল। প্রায় ২,৮৭,৬১৬ কোটি টাকা।
জিটিআরআই বলছে, ‘‘আমেরিকার এই প্রস্তাবে ভারতে উদ্বেগ বাড়ছে। প্রস্তাব শেষ পর্যন্ত কার্যকর হলে বিপুল বিদেশি মুদ্রা হারাতে হতে পারে এ দেশকে।’’ সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা অজয় শ্রীবাস্তব বলেন, ‘‘৫% কর বসলে এ দেশে যাঁরা রোজগারের একটা অংশ পাঠান, তাঁদের খরচ অনেকটাই বেড়ে যাবে। তার প্রভাবে এ দেশে পৌঁছনো ডলারের পরিমাণ কমে যেতে পারে প্রায় ১০%-১৫%।’’
শ্রীবাস্তব আরও জানান, আমেরিকা থেকে ডলার আসা কমলে বিদেশি মুদ্রার ভান্ডার কিছুটা হলেও ধাক্কা খেতে পারে। যার বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে ভারতীয় মুদ্রার দরে। সে ক্ষেত্রে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ককে হস্তক্ষেপ করতে হতে পারে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)