Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

আঠারো মাসে টাওয়ার, ব্যবস্থা ছবি বদলের

মোবাইল ফোনের খারাপ পরিষেবার জন্য ক্ষুব্ধ গ্রাহকের কাঠগড়ায় টেলি সংস্থাগুলি। শিল্পের আবার পাল্টা দাবি, পরিকাঠামো গড়ার ছাড়পত্র পেতে দেরির হওয়াতেই ভুগছে পরিষেবা। জট কাটাতে তাই সংস্থাগুলি যাতে দ্রুত ছাড়পত্র পায় সে জন্য নতুন ব্যবস্থা গড়ছে রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি ও বৈদ্যুতিন দফতর।

দেবপ্রিয় সেনগুপ্ত
শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০১৮ ১৬:২৬
Share: Save:

কথায় বলে ১৮ মাসে বছর। এ দেশে মোবাইলের টাওয়ার বসাতে বোধহয় সময় লাগে আরও একটু বেশিই। সেই ছবিই পাল্টানোর লক্ষ্যে এ বার কোমর বেঁধে নেমেছে রাজ্য। এ জন্য নতুন ব্যবস্থা তৈরি করছে তারা।

মোবাইল ফোনের খারাপ পরিষেবার জন্য ক্ষুব্ধ গ্রাহকের কাঠগড়ায় টেলি সংস্থাগুলি। শিল্পের আবার পাল্টা দাবি, পরিকাঠামো গড়ার ছাড়পত্র পেতে দেরির হওয়াতেই ভুগছে পরিষেবা। জট কাটাতে তাই সংস্থাগুলি যাতে দ্রুত ছাড়পত্র পায় সে জন্য নতুন ব্যবস্থা গড়ছে রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি ও বৈদ্যুতিন দফতর। সরকারি সূত্রে খবর, মাস দুয়েকের মধ্যে বিষয়টি চূড়ান্ত হবে।

সাধারণ ফোন বা মোবাইল, সব ধরনের সংযোগের ক্ষেত্রেই মাটির নীচ দিয়ে অপটিক্যাল ফাইবার কেব্‌ল বা তার নিয়ে যেতে হয় টেলি সংস্থাগুলিকে। মোবাইলের ক্ষেত্রে সেই তারের সঙ্গে বসাতে হয় টাওয়ারও। টেলি শিল্পের সংগঠন সিওএআইয়ের অভিযোগ, দু’টি ক্ষেত্রেই সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে তাদের।

মাটির তলা দিয়ে তার নিয়ে যেতে স্থানীয় পুরসভা বা প্রশাসনের কাছে ‘রাইট অব ওয়ে’র ছাড়পত্র নিতে হয়। টাওয়ার বসাতেও কেন্দ্রীয় টেলিকম দফতরের (ডট) নিয়ম অনুযায়ী লাগে স্থানীয় প্রশাসনের ছাড়পত্র। এ জন্য জেলাস্তরে কমিটি তৈরির কথা। কিন্তু শিল্পের অভিযোগ, ডটের নির্দেশ সত্ত্বেও রাজ্যে সেই ব্যবস্থা পুরোদস্তুর গড়ে ওঠেনি। ফলে ছাড়পত্র পেতে দেরি হয়। আটকে যায় পরিকাঠামো গড়ার কাজ। মার খায় পরিষেবা।

সম্প্রতি জেলাস্তরের কমিটি গঠন ও রাইট অব ওয়ের নিয়মকানুন তৈরির জন্য টেলিকম ও মোবাইল টাওয়ার সংস্থাগুলির সঙ্গে বৈঠক করেছেন রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি ও বৈদ্যুতিন দফতরের প্রধান সচিব দেবাশিস সেন। তিনি জানান, সংস্থাগুলি সমস্ত শর্ত পূরণ করার পরে যাতে দ্রুত ছাড়পত্র পায়, সে জন্য এক জানলার ধাঁচে ব্যবস্থা তৈরির ভাবনা রয়েছে রাজ্যের।

সরকারি সূত্রের খবর, টাওয়ার বসানো বা মাটির নীচে তার পাতার জন্য সংস্থাগুলিকে যে শর্তগুলি মানতে হয়, তা খতিয়ে দেখবে জেলাশাসকের নেতৃত্বাধীন জেলা স্তরের কমিটি। কলকাতার ক্ষেত্রে কমিটির শীর্ষে আছেন কলকাতা পুরসভার কমিশনার। পূর্ত দফতরের মতো সংশ্লিষ্ট দফতরগুলির প্রতিনিধিও থাকবেন তাতে। আর নোডাল সংস্থা হিসেবে কাজ করবে তথ্যপ্রযুক্তি ও বৈদ্যুতিন দফতর। সব শর্ত পূরণ করলে সংস্থাগুলি যাতে দ্রুত ছাড়পত্র পায়, সেটাই দেখবে তারা। রাজ্যের আশা, এর ফলে দ্রুত পরিকাঠামো তৈরি হলে পরিষেবা উন্নত হবে।

কিছু দিন আগে সিওএআইয়ের ডিজি রাজন ম্যাথুজ অভিযোগ করেন, সংস্থাগুলি টাকা ঢালতে রাজি। কিন্তু মূলত প্রশাসনিক সমস্যার জন্যই ২০১৭-১৮ সালে দেশে প্রায় ৬০ হাজার টাওয়ার বসানো যায়নি। তাঁর দাবি ছিল, পরিকাঠামো গড়তে কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্য স্তরে নীতির অমিলই বহু ক্ষেত্রে এ জন্য দায়ী। এখনও পর্যন্ত ছটি রাজ্য— হরিয়ানা, ঝাড়খণ্ড, রাজস্থান, কেরল, ওড়িশা ও মহারাষ্ট্র কেন্দ্রীয় নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য এনেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

mobile tower optical fibre mobile phone
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE