Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
পাখির চোখ ২০১৯

গ্রামের ক্ষতে প্রলেপের চেষ্টা বাজেটে

সরকারি সূত্রের খবর, প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে অর্থ মন্ত্রকে নির্দেশ গিয়েছে বাজেটে কৃষি-অর্থনীতি চাঙ্গা করতে দাওয়াই খোঁজার।

অরুণ জেটলি

অরুণ জেটলি

প্রেমাংশু চৌধুরী
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:০৪
Share: Save:

লোকসভা ভোটের বাদ্যি ২০১৯ সালে। তাই ২০১৮ সালের বাজেট জনমোহিনী হওয়ারই কথা। তার উপর গুজরাতে নরেন্দ্র মোদীর রথ কিছুটা হোঁচট খাওয়ায় অনেকেই বলছেন, ওই বাজেটের ভবিষ্যৎ এখন থেকেই স্পষ্ট। সেখানে সম্ভবত কল্পতরু হবেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। বাজেট হবে গ্রাম-গরিব-কৃষকের দিকে তাকিয়ে। হয়তো লক্ষ্য হবে আয়কর ও কোম্পানি কর কমিয়ে শিল্প ও মধ্যবিত্তের মন জয়ও। যদিও জিএসটি চালুর পরে রাজস্ব আদায় ধাক্কা খাওয়ায় সেটা কতটা সম্ভব হবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে যথেষ্ট।

সরকারি সূত্রের খবর, প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে অর্থ মন্ত্রকে নির্দেশ গিয়েছে বাজেটে কৃষি-অর্থনীতি চাঙ্গা করতে দাওয়াই খোঁজার। জেটলি এবং অর্থসচিব হাসমুখ আঢিয়া সেই মন্ত্রেই বাজেটের নীল নক্‌শা তৈরি করছেন।

ঘনিষ্ঠ মহলে জেটলির ইঙ্গিত, গুজরাতের গ্রামীণ এলাকার ভোট ফলাফল পর্যালোচনা করা হবে। প্রাথমিক ভাবে ধারণা, সেখানে বিজেপি ধাক্কা খেয়েছে। চাষিদের অসন্তোষ সারা দেশে। তাই কৃষি, কৃষক ও গ্রামের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা হবে। বরাদ্দ বাড়তে পারে একশো দিনের কাজ, প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক প্রকল্প এবং আবাস যোজনায়।

অর্থ মন্ত্রকের এক কর্তা বলেন, ‘‘আয় কমায় অনেক চাষি, খেতমজুর হিসেবে বা নির্মাণ শিল্পে কাজ করছেন। ওই তিন প্রকল্পে বরাদ্দ বাড়লে, কাজের সুযোগ বাড়বে।’’ মোদী সরকারের তিন বছরে কৃষিতে গড় বৃদ্ধি ১.৭%। ইউপিএ-র শেষ ৩ বছরেও তা ছিল ৩.৫%! তার উপর ২০২২-এর মধ্যে চাষিদের আয় দ্বিগুণ করার স্বপ্ন দেখিয়েছেন মোদী।

এমন নয় যে কৃষিতে বরাদ্দ বাড়েনি। ফসল বিমা যোজনা চালু হয়েছে। কিন্তু তৃণমূল স্তরে সুফল পৌঁছয়নি। কেন্দ্রের নীতি ছিল, চাষিদের মন জিততে শুধুই ন্যূনতম সহায়ক মূল্য না-বাড়ানো। কিন্তু চাষিদের ক্ষোভ, ওই দামও জুটছে না। সে ক্ষেত্রে ন্যূনতম মূল্যের থেকেও দর পড়ে গেলে, ফারাকটুকু ভর্তুকি হিসেবে মেটানো নিয়ে চিন্তা চলছে।

অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, গরিব ও মধ্যবিত্তের কথা মাথায় রেখে ভর্তুকি ছাঁটাইয়ে কড়া হবেন না জেটলি। শ্রম আইন সংস্কারও শিকেয় তোলা থাকবে। সরকারের অবশ্য যুক্তি, কৃষি ও গ্রাম চাঙ্গা হলে, তার সুফল পাবে শিল্প তথা পুরো অর্থনীতিই।

গুঞ্জন

গ্রাম-গরিব-চাষি

• একশো দিনের কাজ, গ্রাম সড়ক প্রকল্প, আবাস যোজনায় বাড়তি বরাদ্দ

• ফসলের দর ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের থেকে কমলে ভর্তুকির ভাবনা

• ন্যূনতম সহায়ক মূল্য নিশ্চিত করতে নতুন নীতি

• কৃষিতে উৎপাদন বাড়াতে নতুন প্রযুক্তিতে জোর

• চাষের বাইরেও রোজগারের সুযোগ তৈরির পরিকল্পনা

শিল্প ও মধ্যবিত্ত

• মধ্যবিত্তের মন পেতে আয়করের বোঝা কমানোর ভাবনা

• নোটবন্দি ও জিএসটির জোড়া ধাক্কায় নাকাল শিল্পকে খুশি করতে চিন্তা কোম্পানি কর কমানো নিয়েও

কিন্তু প্রশ্ন

• বৃদ্ধি ধাক্কা খেয়েছে। সঙ্গে দোসর জিএসটি। এই সাঁড়াশি আক্রমণে রাজস্ব আদায় কমেছে কেন্দ্রের। সঙ্গে রয়েছে ভোটের মুখে সামাজিক খাতে ব্যয় বৃদ্ধির বাধ্যবাধকতা। সব সামলে আদৌ কতটা সম্ভব হবে কর কমানো?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Agricultural economy Central Government Budget 2018
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE