E-Paper

মানতে হবে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের নির্দেশ, অনুদানের টাকার নয়ছয় রুখতে পদক্ষেপ নবান্নের

যিনি ডিবিটি-উপভোক্তার তথ্য নথিবদ্ধ করছেন বা যাঁর হাত দিয়ে তা অনুমোদিত হচ্ছে, তাঁদের চিহ্নিত এবং দায়বদ্ধ করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। ১৬ দফা করণীয় (এসওপি) চূড়ান্ত করেছে অর্থ দফতর।

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৬:৩৮
সব মিলিয়ে ১৬ দফা করণীয় (এসওপি) চূড়ান্ত করেছে অর্থ দফতর।

সব মিলিয়ে ১৬ দফা করণীয় (এসওপি) চূড়ান্ত করেছে অর্থ দফতর। —ফাইল চিত্র।

সব অনুদান প্রকল্পে উপভোক্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা পাঠানোর পদ্ধতিতে (ডিরেক্ট বেনিফিট ট্রান্সফার বা ডিবিটি) প্রতিটি দফতরকে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের সুরক্ষাবিধি মানার নির্দেশ দিল নবান্ন। যিনি ডিবিটি-উপভোক্তার তথ্য নথিবদ্ধ করছেন বা যাঁর হাত দিয়ে তা অনুমোদিত হচ্ছে, তাঁদের চিহ্নিত এবং দায়বদ্ধ করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে ১৬ দফা করণীয় (এসওপি) চূড়ান্ত করেছে অর্থ দফতর। আধিকারিকদের একাংশের মতে, ট্যাব-কাণ্ডের পরেই এই পদক্ষেপ। তবে অনেক প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকের ধারণা, আর্থিক সুবিধা দেওয়ার নানা প্রকল্পে আরও আগে এমন সুরক্ষাবিধি কার্যকর করা উচিত ছিল। এ বার নিয়ম চালু হলে টাকা নয়ছয় অনেকটা ঠেকানো যাবে। উল্লেখ্য, লক্ষ্মীর ভান্ডার, ট্যাব, কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, কৃষকবন্ধু-সহ সব অনুদান প্রকল্পের টাকা ডিবিটি মারফত মানুষের হাতে দেয় সরকার।

প্রতিটি দফতরের কর্তাকে লিখিত ভাবে অর্থ দফতর জানিয়েছে, ডিবিটি পদ্ধতিতে মানতেই হবে সুরক্ষাবিধি। সব উপভোক্তার তথ্য যাচাই করাতে হবে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের অধীন এনপিসিআই মারফত। যে সব ক্ষেত্রে নেটে আবেদনপত্র জমা পড়বে, সেখানে কাগজপত্র থাকতে পারবে না। পুরোটাই পরিচালিত হবে অনলাইনে। তবে পরিষেবা পেতে লিখিত ভাবে
আবেদনকারীদের জন্য আলাদা পোর্টাল থাকবে। এমন ভাবে তা তৈরি হবে, যাতে সরকারের পক্ষে যিনি তথ্য নথিবদ্ধ করছেন বা যিনি সায় দিচ্ছেন তাঁদের সহজে চিহ্নিত করা যায়।

আধিকারিকদের একাংশের মতে, ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পে পড়ুয়াদের ট্যাব দেওয়ার টাকা বেহাত হওয়া নিয়ে যথেষ্ট শোরগোল পড়েছে প্রশাসনের অন্দরে। প্রকৃত উপভোক্তাদের এড়িয়ে কয়েক কোটি টাকা বেহাত হয়েছে। সরকারের আরও কিছু ডিবিটি প্রকল্পেও একই সমস্যা চিহ্নিত হয়। এ নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে রাজ্য।

অর্থ দফতর জানিয়েছে, এ বার নির্দিষ্ট জায়গায় উপভোক্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর দু’বার নথিবদ্ধ করতে হবে। প্রথমবার নথিবদ্ধ অ্যাকাউন্ট নম্বরগুলি দেখা যাবে না (মাস্কড)। দ্বিতীয়বার ফের তা নথিবদ্ধ করতে হবে। তাঁর ব্যাঙ্কের পাসবুকের প্রথম পাতা বা বাতিল চেকের ছবি আপলোডের ব্যবস্থা থাকবে। তা-ই হবে অ্যাকাউন্ট নম্বর, আইএফএসসি কোড ইত্যাদির প্রমাণ। বিভিন্ন নামে একটি অ্যাকাউন্ট থাকলে তা-ও ধরা পড়বে। রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের আইএফএসসি তালিকা অনুযায়ী যাচাই হবে সংশ্লিষ্ট নম্বর। তাঁর ব্যাঙ্ক শাখা এ রাজ্যে রয়েছে কি না, দেখা হবে। অ্যাকাউন্টের তথ্য অনুমোদন করবেন গ্রুপ-এ পর্যায়ের আধিকারিক। কোনও কারণে টাকা পাঠানো না গেলে তা সংশোধন করা যাবে না। সেই টাকা সরকারের ঘরে ফিরবে। গ্রাহককে এসএমএস পাঠিয়ে প্রাপ্যের পরিস্থিতি জানাবে সরকার।

একাংশ বলছেন, অর্থের বেহিসেবি খরচ রাজ্যের পক্ষে চালানো অসম্ভব। তার উপর বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে টাকা বেহাত হওয়া নিয়ে ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। ভুল বার্তা যাচ্ছে মানুষের কাছে। তাই এই পদক্ষেপ তাৎপর্যপূর্ণ।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Nabanna Bank Account Fund

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy