বাড়ির ছাদে সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন করে সাধারণ গৃহস্থ গ্রাহকও যাতে তা গ্রিডে দিতে পারেন, প্রস্তাবিত সৌর নীতিতে সেই দরজাই খোলার কথা ভাবছে রাজ্য। পাশাপাশি, বাণিজ্যিক সংস্থাকেও এর আওতায় নিয়ে আসার প্রস্তাব রয়েছে। তবে কারা, কত দামে, কী পদ্ধতিতে গ্রিডে বিদ্যুৎ দিতে বা বিক্রি করতে পারবে, তার চূড়ান্ত রূপরেখা পরে তৈরি হবে। বিদ্যুৎ দফতর সূত্রে খবর, নতুন নীতির খসড়া প্রস্তাবটি এখন অর্থ দফতরের অনুমোদনের অপেক্ষায়।
খসড়া প্রস্তাবে বলা হয়েছে, বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহার করে এমন শিল্প সংস্থা বণ্টন সংস্থার কাছ থেকে বিদ্যুৎ কিনে প্রয়োজন মেটাবে। আর যে সৌর বিদ্যুৎ তারা উৎপাদন করবে, সেটা রাজ্যের গ্রিডে বিক্রি করে বণ্টন সংস্থার কাছ থেকে দাম নেবে। এই ব্যবস্থাটিকে বিদ্যুৎ দফতর ‘গ্রস মিটারিং’ ব্যবস্থা বলছে। যা এখন রাজ্যে নেই।
তবে সৌর বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে রাজ্যে এখন ‘নেট মিটারিং’ ব্যবস্থা চালু রয়েছে। এই নিয়মে এখন কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা সরকারি ভবন সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহার করে উদ্বৃত্ত অংশ গ্রিডে দিতে পারে। নতুন নীতিতে সাধারণ গৃহস্থ গ্রাহককেও এই নেট মিটারিং ব্যবস্থায় আনার প্রস্তাব রয়েছে।
রাজ্যে উৎপাদন ক্ষমতা: প্রায় ৫০ মেগাওয়াট
সরকারি প্রকল্পে লক্ষ্যমাত্রা: বাড়তি ৪৩৮ মেগাওয়াট
বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা এমন এক নীতির কথা ভাবছি, যাতে রাজ্যে সৌর বিদ্যুতের উৎপাদনও বাড়ে, আবার বণ্টন সংস্থাগুলিও ক্ষতির মুখে না পড়ে। কারণ সবাই যদি সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহার করার পাশাপাশি গ্রিডে দিতে থাকে, তা হলে বণ্টন সংস্থাগুলির বিক্রি কমবে।’’ মন্ত্রী জানান, নতুন নীতিতে গ্রাহক থেকে বাণিজ্যিক সংস্থা সকলের স্বার্থরক্ষার কথা যেমন ভাবা হচ্ছে, একই ভাবে কেন্দ্রের কাছেও বণ্টন সংস্থাগুলিকে ভর্তুকি দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে।
নেট মিটারিং কী
ব্যবহার না হওয়া বিদ্যুৎ গ্রিডে দেওয়ার ব্যবস্থা
বিদ্যুতের বিল থেকে বাদ দেওয়া হবে তার দাম
গ্রস মিটারিং কী
শুধু শিল্প সংস্থার জন্য
প্রথাগত বিদ্যুৎ ব্যবহার করে বিল মেটাবে সংস্থা
সৌর বিদ্যুৎ গ্রিডে দিলে সেই খাতে দাম পাবে তারা
সৌর নীতি নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরেই রাজ্যের বণ্টন সংস্থাগুলির সঙ্গে বিদ্যুৎ দফতরের কর্তাদের মতপার্থক্য চলছিল। বণ্টন সংস্থাগুলির বক্তব্য ছিল, সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন করে ব্যবহারের পাশাপাশি সবাই গ্রিডে বিক্রি করলে তাদের রাজস্ব ক্ষতি হবে। কারণ নেট মিটারিং ব্যবস্থায় যে সমস্ত স্কুল, কলেজ রয়েছে, তাদের বিদ্যুৎ বিল অনেকটাই কমে গিয়েছে।
এ সব মাথায় রেখেই সমাধানের পথ বার করার চেষ্টা হয়েছে। গ্রস মিটারিং থাকলে গ্রাহক বণ্টন সংস্থার বিদ্যুৎ কিনে ব্যবহার করবে। ফলে তাদের বিক্রি কমবে না। আবার সৌর বিদ্যুৎ গ্রিডে বিক্রি করলে সংস্থাগুলি যেমন টাকা পাবে, বণ্টন সংস্থাও সস্তায় বিদ্যুৎ পাবে। জাতীয় গ্রিড থেকে চড়া দামে তা কিনতে হবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy