অনলাইনে লেনদেন বৃদ্ধির সঙ্গে তাল মিলিয়ে বেড়েছে প্রতারণা। আর তার মধ্যে অন্যতম যে বিষয়টি দেশ জুড়ে ত্রাস তৈরি করেছে, তা হল ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’ বা অনলাইনে গ্রেফতারি। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, এ ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষই প্রতারকদের নিশানা। নানা বিষয়ে আইন ভাঙার অভিযোগে গ্রেফতারির ভয় দেখিয়ে প্রতারকেরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা তাঁদের নেট মাধ্যমে আটকে রেখে অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এমন ঘটনা দেশে ক্রমশ বাড়ছে বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে দেশবাসীকে এর থেকে রক্ষা করতে কিছু পরামর্শ দিল আর্থিক লেনদেন নিয়ন্ত্রক ‘ন্যাশনাল পেমেন্টস কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া’ (এনপিসিআই)। এ নিয়ে তাদের জারি করা বিবৃতিতে বলা হয়েছে—
- সিবিআই, পুলিশ পরিচয় দিয়ে কেউ ফোন করে যদি কোনও আইনগত সমস্যার কথা বলেন, তা হলে তাতে ভয় পাবেন না। কারণ, যদি সত্যিই এই ধরনের কোনও সমস্যা দেখা দেয়, তা হলে সেটা ফোনের মাধ্যমে জানানো হয় না। বাস্তবে সরাসরি দেখা করতে বলা হয় অভিযুক্তকে এবং তার পরে এই নিয়ে পদক্ষেপ করা হয়।
- এই জালিয়াতেরা ভিডিয়ো কল কিংবা অডিয়ো কলে গ্রেফতারের কথা বলে এবং দ্রুত বিপাকে ফেলা ব্যক্তির থেকে টাকা চায়। এই ধরনের কথা শুনলেই সতর্ক হওয়া জরুরি। কোনও সরকারি আধিকারিক এ রকম ব্যবহার করেন না কিংবা টাকা চান না। কারণ, তা বেআইনি।
- ফোন করে কেউ ডিজিটাল গ্রেফতারের ভয় দেখালে, টাকা চাইলে বা অন্য কোনও হুমকি দিলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে ফোনের অপর প্রান্তে শান্ত থাকতে হবে। ধৈর্য্য ধরে কথা বলতে হবে এবং একটু পরেই ফোন কেটে দিতে হবে। কারণ, এগুলি জালিয়াতদের ফাঁদ। জালিয়াতেরা ওটিপি কিংবা ব্যাঙ্কের তথ্য জানতে চাইবে।
- প্রতারণার কথা জানাতে সঙ্গে সঙ্গে ফোন নম্বর-সহ সঞ্চার সাথি পোর্টালে অভিযোগ দায়ের করতে হবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে।
- এই ধরনের কল পেলে তা রেকর্ড করে ১৯০৩-এ ফোন করে অভিযোগও জানাতে পারেন যে কেউ।
এনপিসিআই-এর তরফে জানানো হয়েছে, জালিয়াতেরা দ্রুত সমস্যা মেটানোর জন্য অর্থের দাবি করে। এতেই বুঝে নিতে হবে প্রতারকের খপ্পরে পড়েছেন। ফলে তখন ফোন কেটে যথাযথ জায়গায় অভিযোগ জানানোই শ্রেয়।
ডিজিটাল গ্রেফতারি কী
এক ধরনের নেট জালিয়াতি। যেখানে প্রতারকেরা ফোন মারফত (অডিয়ো বা ভিডিয়ো) আইনের রক্ষক হিসেবে ভুয়ো পরিচয় দেয়। আর্থিক নয়ছয় যুক্ত বলে বা অন্য কোনও ভাবে আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে বা পরিবারের কোনও সদস্যকে গ্রেফতার করার ভয় দেখায়। সমস্যা কাটাতে তারা টাকা চায়। ডিজিটাল অ্যারেস্টের ঘটনায় শেষ ক’বছরে ৩০০০ কোটি টাকার বেশি খুইয়েছেন দেশের মানুষ।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)