আপাতত টালবাহানা শেষ। বাজারে প্রথম বার শেয়ার ছাড়তে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়া (সেবি)-র কাছে বুধবার খসড়া প্রস্তাবনাপত্র দাখিল করল এনএসই।
এই ড্রাফ্ট রেড হেরিং প্রসপেক্টাস অনুযায়ী প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার শেয়ার বাজারে ছাড়ার কথা। ২০১০ সালে কোল ইন্ডিয়ার ১৫ হাজার কোটি টাকার পরে এত বড় মাপের ইস্যু ভারতের বাজারে আসেনি। গত প্রায় এক বছরেরও বেশি সময় ধরে মূলত শেয়ার নথিভুক্তির প্রশ্নে আটকে ছিল এই পাবলিক ইস্যু। কর্তৃপক্ষ চেয়েছিলেন, শেয়ার নথিবদ্ধ হোক এনএসই-তেই। তবে বাজারের দেখভালের দায়িত্বে থাকা সেবি-র নিয়ম অনুযায়ী নিজের এক্সচেঞ্জে নয়, বিএসই-তে নথিভুক্ত করতে হবে। এনএসই সূত্রের ইঙ্গিত, শেয়ার ছাড়তে দেরির পিছনে আর একটি কারণ হল শেয়ার লেনদেন ও তার বাইরে থাকা অন্য ব্যবসাকে আলাদা করে দেওয়া নিয়ে মতানৈক্য। শেয়ার নথিভুক্তির আগেই তা সেরে ফেলার পক্ষে ছিলেন এনএসই কর্তৃপক্ষের একাংশ। শেষ পর্যন্ত অবশ্য বাজারে শেয়ার আনায় আর দেরি না-করার পথেই হাঁটল এনএসই। তারা নিজেরাই খসড়া প্রস্তাবনাপত্র পেশ করার ব্যাপারে ২০১৭-র ৩১ জানুয়ারিকে সময়সীমা ধরে এগোনোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল জুন মাসে। তার আগেই তা দাখিল করা হল।
এক নজরে
• ১০ হাজার কোটি টাকা তোলার ইঙ্গিত
• বাজারে আসবে প্রায় ১১ কোটি শেয়ার, যা মোট শেয়ারের ২২.৫%
• ২০১০ সালে কোল ইন্ডিয়ার পরে এত বড় ইস্যু ছাড়া হয়নি
এ দিন এনএসই সূত্রে খবর, বাজারে আসার পরে বিএসই-তেই নথিভুক্ত হবে এনএসই শেয়ার। তবে বিএসই যেহেতু প্রতিযোগী স্টক এক্সচেঞ্জ, তাই ইস্যুর পরে লেনদেন নিয়ে স্বাধীন নজরদারি কমিটি গড়তে এনএসই আর্জি জানিয়েছে সেবি-র কাছে। বাজারে বিক্রি করা হবে ১১ কোটির কিছু বেশি ইকুইটি শেয়ার, যা এনএসই-র মোট শেয়ারের ২২.৫%। বর্তমান শেয়ারহোল্ডারদের হাতে থাকা শেয়ার বিক্রি করেই (অফার ফর সেল) ইস্যু ছাড়া হবে। ১৫.৮% ইকুইটি বাজারে আসবে বিদেশি শেয়ারহোল্ডারদের মারফত, ৬.৭% দেশি শেয়ারহোল্ডারদের কাছ থেকে। সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি, ইস্যু অনুসারে এনএসই-র মূল্যায়ন দাঁড়াতে পারে ৫০-৫৫ হাজার কোটি টাকা।
দ্রুত শেয়ার ছাড়তে ইস্যু ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সিটিগ্রুপ, মরগ্যান স্ট্যানলি, জেএম ফিনান্সিয়াল ইন্সটিটিউশনাল সিকিউরিটিজ ও কোটাক মহীন্দ্রা ক্যাপিটালকে। গড়া হয়েছে নথিভুক্তি সংক্রান্ত কমিটিও। তবে এ মাসেই এমডি-সিইও চিত্রা রামকৃষ্ণ আচমকা ইস্তফা দেওয়ায় ইস্যু নিয়ে প্রস্তুতি কিছুটা ধাক্কা খেয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের ইঙ্গিত। গত ৩০ সেপ্টেম্বর শেষ হওয়া ছ’মাসে এনএসই-র নিট মুনাফা ছিল ৫৮৮.৩২ কোটি টাকা। মোট আয় ১৩৪৩.৫১ কোটি টাকা।
বিএসই ইতিমধ্যেই বাজারে প্রথম শেয়ার ছাড়ার পথে এগিয়েছে। সেপ্টেম্বরে সেবি-র কাছে পেশ করা প্রস্তাবনাপত্রের ইঙ্গিত, ইস্যুর আকার ১৫০০ কোটি টাকার মধ্যে। বিএসই প্রতিষ্ঠিত সেন্ট্রাল ডিপজিটরি সার্ভিসেস-ও ৩.৫ কোটি টাকার শেয়ার ছাড়তে ইতিমধ্যেই খসড়া পেশ করেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy