মোদী সরকার আয়কর আইনের সরলীকরণ করতে গিয়ে তা আরও জটিল করেছে বলে বিরোধীরা অভিযোগ তুললেন। বিরোধীদের দাবি, নতুন করে আয়কর আইনের প্রয়োজনীয় তাই ছিল না।
আজ কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন লোকসভায় নতুন আয়কর আইনের বিল পেশ করেছেন। তারপর অর্থমন্ত্রীই তা বিস্তারিত আলোচনার জন্য সিলেক্ট কমিটির কাছে পাঠানোর প্রস্তাব এনেছেন। সিলেক্ট কমিটিকে সংসদের আগামী অধিবেশন বা বাদল অধিবেশনের প্রথম দিনের মধ্যে রিপোর্ট পেশ করতে বলা হবে। সরকারি সূত্রের খবর, ৬২২ পৃষ্ঠার আয়কর বিল নিয়ে কম সময়ের মধ্যে বিস্তারিত আলোচনা প্রয়োজন। তাই অর্থ মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির কাছে এই বিল না পাঠিয়ে তার জন্য পৃথক সিলেক্ট কমিটি গঠন করা হবে।
আজ এই বিল পেশের সময়েই কংগ্রেস সাংসদ মণীশ তিওয়ারি, তৃণমূলের সৌগত রায়, আরএসপি-র এন কে প্রেমচন্দ্রন তার বিরোধিতা করেন। মণীশের আপত্তির বিষয় ছিল, নতুন আয়কর বিল আরও জটিল হয়েছে। বর্তমান আয়কর আইনে ২৯৮টি ধারা ছিল। নতুন আয়কর বিলে ৫০০-র বেশি ধারা আছে। সৌগত বলেন, মোদী সরকারের যুক্তি হল, আইনে জটিল ভাষার বদলে সরল ভাষা ব্যবহার হলে কর জমার পরিমাণ বাড়বে। এই যুক্তির কোনও ভিত্তি নেই। বর্তমান আয়কর আইনে কাজ চলছিল। প্রতি বছর প্রয়োজন মতো, সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাতে সংশোধন হচ্ছিল। নয়া বিলের দরকারই ছিল না।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ১৯৬১ সালে আয়কর আইন তৈরির সময় তাতে ২৯৮টি ধারা ছিল। বছরের পর বছর সংশোধন হয়ে, নানা ধারা ও উপধারা যোগ হয়ে, বাস্তবে আইনের ধারার সংখ্যা ৮১৯-এ পৌঁছেছে। নয়া বিলে ৫৩৬টি ধারা রয়েছে। আইনের শব্দসংখ্যা ৫.১২ লক্ষ থেকে ২.৬০ লক্ষে নামিয়ে আনা হয়েছে। যান্ত্রিক ভাবে রদবদল না করে আইন নতুন করে লেখা হয়েছে। তাতেই শব্দসংখ্যা কমেছে। আইনের কাঠামোগত বদল না হলেও সহজ ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে। অর্থ মন্ত্রকের দাবি, নতুন আয়কর বিল তৈরি করতে মোট ৬০ হাজার ঘণ্টার শ্রম ব্যয় হয়েছে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)