পেট্রল-ডিজ়েলের দাম কমার সম্ভাবনা দূর অস্ত!
বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দাম কমছে। বিমানের জ্বালানি কমছে। হোটেল-রেস্তরাঁয় ব্যবহৃত রান্নার গ্যাস সিলিন্ডারের দামও কমছে। ফলে আশা, এ বার পেট্রল, ডিজ়েল, বাড়িতে রান্নার গ্যাসের দামও কমবে। কিন্তু তেল মন্ত্রকের কর্তারা ‘ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি’ দেখে সতর্ক। বলছেন, একবার দাম কমালে, তা আবার চট করে বাড়ানো যাবে না। তার নেতিবাচক রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া হবে। তাই আরও অপেক্ষা করে দেখেশুনে পা ফেলবে তেল মন্ত্রক এবং রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থার কর্তারা।
কলকাতায় আইওসি-র পাম্পে পেট্রলের লিটার ১০৫.০১ টাকা, ডিজ়েল ৯১.৮২ টাকা। গত বছর লোকসভা ভোটের আগে দু’টিই ২ টাকা করে কমেছিল। ২০২২-এর মে মাসের পরে দামে রদবদল বলতে এটুকু। অথচ সম্প্রতি বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের ব্যারেল ৫৯ ডলারের নেমেছে। গত চার বছরে যা সর্বনিম্ন। তার পরে তা থিতু হয় ৬১-৬২ ডলারে। এখন ৬৫-র আশেপাশে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক যুদ্ধের ঘোষণা ঘিরে অনিশ্চয়তাই এর কারণ। তার উপর তেল উৎপাদক দেশগুলির গোষ্ঠী ওপেক-প্লাস জুলাই থেকে উৎপাদন বাড়াবে। ডলারের দামও পড়ছে।
তা হলে কেন দেশে পেট্রল-ডিজেলের দাম কমছে না?
তেল মন্ত্রকের এক শীর্ষকর্তা বলেন, ভূ-রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা থাকছেই। ভারত রাশিয়া থেকে বহু দিন ধরে সস্তায় তেল কিনছে। কিন্তু আমেরিকার সেনেটর রিচার্ড ব্লুমেন্থল রাশিয়াকে চাপে ফেলতে বিল আনছেন। তাতে প্রস্তাব, রাশিয়া থেকে তেল-গ্যাস আমদানি করা দেশগুলির উপরে ৫০০% হারে শুল্ক চাপানো হবে। এই নীতি বিপাকে ফেলবে ভারত-চিনকে।
তবে তেল সংস্থার কর্তাদের বক্তব্য, দেশে পেট্রল-ডিজ়েলের দাম শুধু অশোধিত তেলের উপরে নির্ভর করে না। তার সঙ্গে জড়িত বাজারে বাস্তব ও প্রত্যাশিত চাহিদা, বিশ্ব বাজারে বাণিজ্যিক লেনদেন এবং ডলার-টাকার বিনিময় মূল্য। এ কথা ঠিক, ডলারের দাম পড়ার কারণেও ভারতে তেল আমদানির খরচ কমার কথা। কিন্তু মুশকিল হল, টাকার দামও পড়ছে। ফলে আমদানির খরচ ততটা কমছে না। তেল মন্ত্রকের এক কর্তা বলেন, ‘‘বিমানের জ্বালানি বা বাণিজ্যিক এলপিজি-র দাম একবার কমিয়ে ফের বাড়াতে সমস্যা হয় না। কিন্তু পেট্রল-ডিজ়েল, রান্নার গ্যাস একবার কমিয়ে ফের বাড়ানো রাজনৈতিক ঝুঁকির বিষয়। তাই দেখেশুনে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)