Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

নেট নিরাপত্তার বাজার ধরার দৌড়ে কলকাতাও

একসঙ্গে একশো দেশের ‘চোখে জল’ এনে দিয়েছে সাইবার দস্যু ‘ওয়ান্না ক্রাই’। সদ্য ১ কোটি ৭০ লক্ষ গ্রাহকের তথ্য চুরি গিয়েছে রেস্তোরাঁয় খাবার অর্ডার দেওয়ার মোবাইল-অ্যাপ জোম্যাটোতে। এ ভাবে হুড়মুড়িয়ে বাড়া সাইবার হানার সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাড়তে থাকা সাইবার নিরাপত্তার বাজারে জায়গা করে নিচ্ছে বিভিন্ন ছোট দেশি সংস্থা। সেই দৌড়ে সামিল কলকাতার সংস্থাও।

গার্গী গুহঠাকুরতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ মে ২০১৭ ০৩:২১
Share: Save:

একসঙ্গে একশো দেশের ‘চোখে জল’ এনে দিয়েছে সাইবার দস্যু ‘ওয়ান্না ক্রাই’। সদ্য ১ কোটি ৭০ লক্ষ গ্রাহকের তথ্য চুরি গিয়েছে রেস্তোরাঁয় খাবার অর্ডার দেওয়ার মোবাইল-অ্যাপ জোম্যাটোতে। এ ভাবে হুড়মুড়িয়ে বাড়া সাইবার হানার সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাড়তে থাকা সাইবার নিরাপত্তার বাজারে জায়গা করে নিচ্ছে বিভিন্ন ছোট দেশি সংস্থা। সেই দৌড়ে সামিল কলকাতার সংস্থাও।

২০১৬ সালে ১২টি সাইবার নিরাপত্তা সংক্রান্ত স্টার্ট-আপ তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে লগ্নি টেনেছে ৭টি। এ রকম একটি সংস্থার প্রধান পবন কুশাওয়ার দাবি, ডিজিটাল আর্থিক লেনদেনের কারণে এই নিরাপত্তার বাজার বাড়ছে। ২০১৬ সালেই হ্যাক হয়েছে ৩২ লক্ষ ডেবিট কার্ড।

কলকাতার সংস্থা ভিহিয়ার-এর কর্তা প্রবীণ জয়সওয়ালের দাবি, ডিজিটাল লেনদেনের সঙ্গে বাড়ছে নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার ঝুঁকি। তাকে পুঁজি করেই সংস্থা নতুন ব্যবসা চালু করছে। তাঁর মতে, তথ্য বিশ্লেষণ ও তার নিরাপত্তা ব্যবস্থা এখন বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার কাছেও জরুরি হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এত দিন শুধু সরকারি প্রকল্পের জন্য তথ্য বিশ্লেষণ ও সাইবার নিরাপত্তা সংক্রান্ত কাজ করা ভিহিয়ার এখন নিজেদের দক্ষতা ব্যবহার করছে কর্পোরেট দুনিয়াতেও।

এক নজরে

• ১০০টি দেশে সাইবার দস্যু ‘ওয়ান্না ক্রাই’-এর তাণ্ডব

• গত বছর হ্যাক হয়েছে ৩২ লক্ষ ডেবিট কার্ড

• বিশ্বে প্রতি ১৩১টি ই-মেলের একটি ম্যালওয়্যার আক্রান্ত। ভারতে ১৫০ টিতে একটি

• সাইবার নিরাপত্তার বাজার বাড়ছে ১১% হারে।

• ২০১৭ সালে তা ছাড়াবে ১২৪ কোটি ডলার

কলকাতার আর এক সংস্থা আইএসওএইচ ডেটা সিকিউরিটির প্রধান সন্দীপ সেনগুপ্ত জানান, ঝুঁকি এড়াতে এখন সাইবার নিরাপত্তায় জোর দিতে বাধ্য হচ্ছে সংস্থাগুলি। ফলে সাইবার হানার বিপদের হাত ধরেই খুলে যাচ্ছে ব্যবসার নতুন সুযোগ। প্রায় ১১% হারে বাড়তে থাকা নেট নিরাপত্তার বাজার ধরতে ঝাঁপাচ্ছে ছোট সংস্থাগুলি।

তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলির সংগঠন ন্যাসকমের মতে, পাঁচ বছরে সাইবার নিরাপত্তার হাব হবে ভারত। ন্যাসকম কর্তা আর চন্দ্রশেখর বলেন, ‘‘ভারতে স্মার্ট ফোন ব্যবহারের হার সবচেয়ে বেশি। সেই সূত্রে সাইবার নিরাপত্তার প্রয়োজনও বেশি।’’ ডেটা সিকিউরিটি কাউন্সিল ও ন্যাসকম যৌথ ভাবে এ বিষয়ে রোডম্যাপও তৈরি করেছে।

সাইবার হানার বাড়বাড়ন্তের পরিসংখ্যান থেকেই এই ব্যবসার সম্ভাবনা স্পষ্ট। তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা সিমেন্টেকের বার্ষিক রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৬ সালে বিশ্বে প্রতি ১৩১টি ই-মেলের মধ্যে একটি ম্যালওয়্যার আক্রান্ত। অথচ এক বছর আগেও তা ছিল ২২০ ই-মেলে একটি। ভারতেও এখন ১৫০ ই-মেলে একটি। এই বিপদের আঁচ পেয়েই ২০১৬ সালে সাইবার নিরাপত্তা ব্যবসার অঙ্ক দাঁড়িয়েছে ১১২ কোটি ডলার। যা ছিল ১০০ কোটি ডলার। গবেষণা সংস্থা গার্টনারের দাবি, ২০১৭ সালে এই ব্যবসা ১২৪ কোটি ডলার ছাড়াবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE