যাঁদের মোট আয় করযোগ্য নয়, তাঁরা উৎসে কাটা কর (টিডিএস) ফেরত পেতে নির্দিষ্ট সময়সীমার পরে রিটার্ন জমা দিলেও টাকা পাওয়া আটকাবে না— নতুন আয়কর আইনে এমন ব্যবস্থা চালুর সুপারিশ করেছে সংসদের সিলেক্ট কমিটি। মোদী সরকারের আনা নতুন আয়কর বিলের খসড়া খতিয়ে দেখার পরে সম্প্রতি তারা যে সব পরামর্শ দিয়েছে, তার মধ্যে টিডিএস-এর নিয়ম শিথিল অন্যতম। এ ক্ষেত্রে দেরিতে রিটার্ন জমার জন্য জরিমানা না করার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। সোমবার বাদল অধিবেশনের প্রথম দিনে সংসদে পেশ করা হয়েছে বিল নিয়ে সিলেক্ট কমিটির রিপোর্ট।
বর্তমানে চালু ১৯৬১-র আয়কর আইন বাতিল করে নতুন আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। এই লক্ষ্যে প্রস্তাবিত বিলটি সংসদে পেশ হয়েছে আগেই। সেটিরই বিচার-বিশ্লেষণ করে একগুচ্ছ সুপারিশ সম্বলিত রিপোর্ট দিয়েছে সংসদের ৩১ জন সদস্যকে নিয়ে গঠিত সিলেক্ট কমিটি, যার চেয়ারম্যান বিজেপির বিজয়ন্ত পান্ডা। এ দিন ৪৫৭৫ পাতার ওই রিপোর্ট পেশ হয় সংসদে। সুপারিশগুলি নিয়ে আলোচনার পরে বিলটি আইনে পরিণত করার প্রক্রিয়া শুরু হবে।
কমিটির অন্যতম সুপারিশ, যাঁদের আয় করযোগ্য নয়, তাঁরা যেন টিডিএস-এর টাকা ফেরত পাওয়া নিয়ে অযথা মামলায় না জড়ান। তাই তাঁদের দেরিতে জমা রিটার্ন জরিমানা ছাড়াই গ্রাহ্য হওয়া দরকার। কারণ, তাঁরা শুধু কেটে নেওয়া ফেরত পেতেই রিটার্ন জমা দেন। কমিটি মোট ৫৬৬টি বিষয়ে সুপারিশ বা মন্তব্য লিখেছে রিপোর্টে। তার মধ্যে রয়েছে— মুনাফা করা উদ্দেশ্য নয়, এমন ধর্মীয় তথা দাতব্য অসরকারি সংস্থাগুলির (এনপিও) সংজ্ঞা, আয় এবং অনুদান নিয়ে পুরনো নিয়মই চালু রাখা। এনপিও-তে অজ্ঞাত ব্যক্তি বা সংস্থার অনুদানও করের আওতার বাইরে রাখার ব্যবস্থা বহাল। এ সংক্রান্ত বদল সংস্থাগুলির উপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে।
নতুন আয়কর বিলে ‘প্রিভিয়াস ইয়ার’ এবং ‘অ্যাসেসমেন্ট ইয়ার’-এর পরিবর্তে শুধু ‘ট্যাক্স ইয়ার’ চালুর প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে সিলেক্ট কমিটি। তবে মূলধনী লাভ করের হিসাব কী ভাবে করা হবে, তা স্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করতে বলেছে। দাবি করেছে, এ ব্যাপারে আইনের ভাষা সহজ করা হলেও মূলধনী লাভ সংক্রান্ত আয় হিসাবের পদ্ধতির উল্লেখ না থাকায় ধন্দ তৈরি হতে পারে। হতে পারে মামলাও।
অন্যান্য প্রস্তাব
শিল্পে ‘পেরেন্ট কোম্পানি’, সমবায় ব্যাঙ্ক এবং ক্ষুদ্র-ছোট-মাঝারি সংস্থার উন্নয়নের সঙ্গে সামঞ্জস্য পূর্ণ স্পষ্ট সংজ্ঞা জরুরি।
পিএফের জমা টাকায় টিডিএস না কাটা।
সংস্থা হিসাবের নথি না দেখাতে পারলে ২৫,০০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। প্রকৃত অসুবিধার কারণেই তা দেখাতে পারল না কি না, বিবেচনার সুযোগ থাকুক।
সম্পত্তি থেকে আয়ের উপর কর বসানোয় স্বচ্ছতা নিশ্চিত হোক।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)