বিশ্ব বাজারে ক্রমশই কমছে অশোধিত তেলের দাম। কিন্তু দেশের মানুষ তার সুরাহা পাচ্ছেন না। কারণ দীর্ঘদিন ধরেই ভারতে স্থির রয়েছে পেট্রল-ডিজ়েলের দর। শেষ দাম পাল্টেছিল গত বছর লোকসভা ভোটের আগে। তার পরে গত দেড় বছরে তা সামান্য বেড়েছে। অন্য দিকে, আন্তর্জাতিক বাজারে অশোধিত তেল ব্যারেলে ১০০ ডলার থেকে এখন ৬০ ডলারের কোঠায়। এই পরিস্থিতিতে মাথা নামানো মূল্যবৃদ্ধির সুযোগ নিয়ে দেশেও তেলের দর কমানোর দাবি উঠছে বিভিন্ন মহলে। যদিও অনেকে বলছেন, ডলারের সাপেক্ষে টাকার দাম তলানিতে। ফলে আমদানি খরচ মাথা তুলছে। তা ছাড়া রাশিয়ার দুই সংস্থার উপরে আমেরিকার নিষেধাজ্ঞাও মস্কো থেকে তেল আনার পথ কঠিন করেছে। ফলে এখনই সুরাহার সম্ভাবনা কম।
গত এপ্রিলে তেলমন্ত্রী হরদীপ পুরী পেট্রল-ডিজ়েলের উৎপাদন শুল্ক বৃদ্ধির সময় দাবি করেন আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির উপরে সরকার নজর রাখছে, যথা সময়ে দাম পাল্টানো হবে। কেন্দ্রের দাবি ছিল, তেল সংস্থাগুলি তার আগে যে লোকসান করেছিল, তা মেটাতেই এই বৃদ্ধি। যদিও তার ভার সে সময়ে মানুষের ঘাড়ে পড়েনি। কিন্তু বিশ্ব বাজারে দাম কমলেও তার প্রতিফলন দেশে দেখা যায়নি।
শনিবার ব্রেন্ট ক্রুডের দাম দাঁড়িয়েছে ব্যারেলে ৬০.৫০ ডলার। সপ্তাহের মঝে তা ৫৯ ডলারেও নেমেছিল। তবু তেল সংস্থা বা সরকার বলতে পারছে না খুচরো বাজারে দাম কমবে কি না। এখন কলকাতায় লিটারে পেট্রলের দাম ১০৫.৪১ টাকা ও ডিজ়েলের ৯২.০২ টাকা।
মার্চেন্টস চেম্বারের অর্থনীতি বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান স্মরজিৎ মিত্রের মতে, ‘‘বিশ্ব বাজারে গত ক’মাস ধরে তেলের যে দাম রয়েছে, তাতে তো দেশেও দর কমা উচিত ছিল। কিন্তু ডলারের সাপেক্ষে টাকা যেখানে দাঁড়িয়ে, তাতে আমদানির খরচ বেড়েছে অনেকটাই। ফলে সরকার দাম কমাবে বলে মনে হয় না।’’ ইন্ডিয়ান অয়েল ডিলার ফোরামের সভাপতি জন মুখোপাধ্যায়ও জানাচ্ছেন, দাম বদলের খবর তাঁদের কাছে নেই।
একাংশের আবার বক্তব্য, তেল থেকে সরকারের কোষাগারের অনেকটা ভরে। তাই তারা স্থিতাবস্থা বজায় রাখতেই আগ্রহী। রাশিয়ার তেলের আমদানি কমাও চিন্তায় রাখছে কেন্দ্রকে। ফলে এখনই তেলের দামে সুরাহার আশা প্রায় নেই।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)