বেশ কিছু দিন ধরে বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেল সস্তা থাকায় (ব্যারেল পিছু ৭০-৭৫ ডলার), গত মাসের গোড়ায় দেশে জ্বালানির দাম কমার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন তেলমন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরী। অর্থ মন্ত্রক সূত্র জানিয়েছিল, রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলিকে আগে বেশি দামে আমদানি করতে হয়েছে বলে লোকসান হলেও, সেই ক্ষতি এখন মিটেছে। এ বার আন্তর্জাতিক দামের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে পেট্রল-ডিজ়েল কমানো সম্ভব। তবে এত কিছুর পরেও দেশে জ্বালানির খরচে আমজনতার সুরাহা পাওয়ার কোনও লক্ষণ নেই। উল্টে সুরাহার অপেক্ষায় দিন গুনতে গুনতেই ফের বিশ্ব বাজারে মাথা তুলেছে অশোধিত তেল। ব্রেন্ট ক্রুড বুধবার উঠেছে ৮৩ ডলারে। যা নতুন করে সংশয়ের মেঘ তৈরি করছে মানুষের মনে। এ দিন মূল্যায়ন সংস্থা ক্রিসিলের দাবি, চলতি অর্থবর্ষে এক লক্ষ কোটি টাকার নজিরবিহীন মুনাফা (কর দেওয়ার আগে) করতে পারে তেল সংস্থাগুলি।
গত বছর মে মাসে অর্থ মন্ত্রক সামান্য শুল্ক কমানোর পরে আর দাম কমেনি তেলের। এ দিনও কলকাতায় আইওসি-র পাম্পে পেট্রলের লিটার ছিল ১০৬.০৩ টাকা। ডিজ়েল ৯২.৭৬ টাকা। কংগ্রেসের অভিযোগ ছিল, মোদী জমানায় ২০১৪-২০২৩ সালে অশোধিত তেল ১২৪ ডলার থেকে ৭০ ডলারে নামলেও দেশবাসীর দরজায় পৌঁছয়নি তার সুবিধা।
অথচ গত ক’মাস ব্রেন্ট ক্রুড ৭০ ডলারের আশেপাশে ঘুরছিল। রাশিয়া থেকে দীর্ঘ দিন ধরে সস্তায় তেল কিনছে ভারত। পরিসংখ্যান বলছে, চলতি অর্থবর্ষে এখনও পর্যন্ত গত বছরের একই সময়ের থেকে অশোধিত তেলের দাম কমেছে প্রায় ৩০%। ক্রিসিলের পূর্বাভাস, এই অর্থবর্ষে রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলি কর পূর্ববর্তী এক লক্ষ কোটি টাকা লাভ করবে। ২০১৬-১৭ থেকে ২০২১-২২ পর্যন্ত প্রতি বছরে গড়ে যা ছিল ৬০,০০০ কোটি টাকার মতো। গত অর্থবর্ষে অশোধিত তেলের চড়া দরের জন্য ছিল ৩৩,০০০ কোটি।
ফলে প্রশ্ন উঠছে, সুবিধা পাওয়া থেকে ব্রাত্য থাকবেন কি শুধু সাধারণ ক্রেতা? সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের মতে, লোকসভা ভোট আরও এগিয়ে এলে তেলের দাম কমার সম্ভাবনা থাকছে। তবে বিশ্ব বাজারের দামকে তোয়াক্কা না করে ব্যালট বাক্সে চোখ রেখে দেওয়া সুবিধা উধাও হওয়ার আশঙ্কা থাকে প্রয়োজন ফুরোলে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)