মূল্যবৃদ্ধিকে নাগালের মধ্যে নিয়ে আসার লক্ষ্যে টানা ন’টি ঋণনীতিতে রেপো রেট (যে সুদে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলিকে স্বল্প মেয়াদে ঋণ দেয়) ৬.৫ শতাংশে অপরিবর্তিত রেখেছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। গত ৬-৮ অগস্টের বৈঠকের যে কার্যবিবরণী আজ প্রকাশিত হয়েছে সেখানে দেখা যাচ্ছে, সুদের হার অপরিবর্তিত রাখার পক্ষে ভোট দিয়ে শীর্ষ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস মন্তব্য করেছেন, এখনকার হার মোটের উপর ভারসাম্যপূর্ণ। এখনই তা কমানোর পক্ষে যুক্তি দেওয়া হলে তা বিভ্রান্তির সৃষ্টি করবে।
চড়া মূল্যবৃদ্ধির মোকাবিলায় ২০২২ সালের মে থেকে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক দফায় দফায় মোট ২৫০ বেসিস পয়েন্ট সুদ বাড়িয়েছিল। তারপর থেকে তা কমেনি। অথচ শীর্ষ ব্যাঙ্কের ঋণনীতি কমিটির ভিতরেই সুদ কমানোর পক্ষে মত পোক্ত হচ্ছে। কার্যবিবরণীতেই দেখা যাচ্ছে, ছয় সদস্যের মধ্যে অসীমা গয়াল এবং জয়ন্ত আর বর্মা রেপো রেট ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমানোর সুপারিশ করেছিলেন। গভর্নর-সহ বাকি চার জন তা একই রাখার পক্ষে মত দেন। সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, জুলাইয়ে দেশের খুচরো বাজারে মূল্যবৃদ্ধির হার ৪ শতাংশের নীচে নেমেছে। এই অবস্থায় সুদ কমানোর জন্য চাপ আরও বাড়তে পারে। এই প্রেক্ষিতে শক্তিকান্তের বক্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি এখনও স্বস্তিদায়ক জায়গায় পৌঁছয়নি।
ঋণনীতি বৈঠকে শক্তিকান্ত বলেছেন, ‘‘২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে মূল্যবৃদ্ধির গড় হার ৪.৫% থাকতে পারে। সেই হিসাবে চলতি রেপো রেটে ভারসাম্য রয়েছে। এতে অর্থনীতির গতিও বিঘ্নিত হবে না।... মূল্যবৃদ্ধিকে নাগালের মধ্যে নিয়ে আসার প্রক্রিয়া সময়সাপেক্ষ। কোনও রকম হস্তক্ষেপ ছাড়া সেই মূল্যবৃদ্ধি কম থাকার পরিস্থিতিও তৈরি হয়নি। বাস্তবের দুনিয়ায় ঋণনীতি পুঁথিগত ভাবে তৈরি হয় না। ফলে সুদ কমানোর পক্ষে ব্যাখ্যা বিভ্রান্তির সৃষ্টি করবে।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, মূল্যবৃদ্ধি কমছে। কিন্তু তার গতি এখনও কম।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)