Advertisement
১০ মে ২০২৪
NPA

বাড়তে পারে এনপিএ, আশঙ্কা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের

তবে সার্বিক ভাবে দেশের আর্থিক ক্ষেত্রের ভিত পোক্ত বলেই রিপোর্টে দাবি করেছেন রিজার্ভ ব্যাঙ্ক গভর্নর শক্তিকান্ত দাস। যদিও সঙ্গে তাঁর মত, আগামী দিনে আর্থিক পরিষেবা ক্ষেত্র ও বাজারের গতি কোন দিকে যাবে, তা নিয়ে চিন্তা থাকছে।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

সংবাদ সংস্থা
মুম্বই শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০২০ ০৬:২৩
Share: Save:

করোনার জেরে দেশের শিল্প ক্ষেত্রে যে অবস্থা তৈরি হয়েছে, তাতে পরের বছর মার্চে ব্যাঙ্কগুলির ঋণের সাপেক্ষে মোট অনুৎপাদক সম্পদের হার ১২.৫% হতে পারে বলে আশঙ্কা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের। শুক্রবার ষান্মাসিক আর্থিক স্থিতিশীলতা রিপোর্টে শীর্ষ ব্যাঙ্ক জানিয়েছে, পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে সেই হার হতে পারে ১৪.৭%। গত মার্চেও যা ছিল ৮.৫%।

তবে সার্বিক ভাবে দেশের আর্থিক ক্ষেত্রের ভিত পোক্ত বলেই রিপোর্টে দাবি করেছেন রিজার্ভ ব্যাঙ্ক গভর্নর শক্তিকান্ত দাস। যদিও সঙ্গে তাঁর মত, আগামী দিনে আর্থিক পরিষেবা ক্ষেত্র ও বাজারের গতি কোন দিকে যাবে, তা নিয়ে চিন্তা থাকছে। এর মধ্যেও অবশ্য ঝুঁকি এড়ানোর মানসিকতা ব্যাঙ্কগুলিকে ছাড়তে হবে বলে মনে করেন গভর্নর। বরং তা সামলানোর পথে তাদের হাঁটতে হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। তাঁর মতে, আর সে জন্য ঋণদানের ক্ষেত্রে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি সাবধানতা অবলম্বন করার দরকার নেই। বরং তা করা হলে, তার ফল খারাপ হবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে ব্যাঙ্ক-সহ আর্থিক সংস্থাগুলির কর্তব্য, দেশের সম্পদ বৃদ্ধি করে আর্থিক অবস্থার উন্নতির জন্য পদক্ষেপ করা।

ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রে সমস্যার জন্য ভারত পিছিয়ে পড়েছে বলে সম্প্রতি অভিযোগ করেছিলেন মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা কৃষ্ণমূর্তি সুব্রহ্মণ্যন। বলেছিলেন, বড় মাপের ব্যাঙ্ক থাকা জরুরি। শক্তিকান্তের অবশ্য দাবি, করোনা সমস্যার মোকাবিলা করতে কেন্দ্র, রাজ্য, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এবং সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ মিলে যে সব পদক্ষেপ করেছে, তা অর্থনীতিকে সমস্যা থেকে বার করে স্বাভাবিক করতে অনেকটা সফল। এতে কিছুটা হলেও ফিরেছে বিভিন্ন মহলের আস্থা। দেশের আর্থিক পরিষেবা ব্যবস্থায় স্থিতিশীলতা ফেরাতে যা অত্যন্ত জরুরি।

এক নজরে

• বিশ্ব অর্থনীতির চিন্তা বাড়াচ্ছে করোনার জেরে হওয়া আর্থিক ক্ষতি, আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক টানাপড়েন এবং আর্থিক ক্ষেত্রের উপরে বাড়তি বোঝা।
•কোভিড-১৯ কত দিন চলবে, তা স্পষ্ট নয়। কিন্তু চলতি অর্থবর্ষে দেশের অর্থনীতি যে সঙ্কুচিত হবে, সেটা নিশ্চিত।
• সব মিলিয়ে ঋণে ঝুঁকি বাড়ছে ব্যাঙ্কিং শিল্পে।
• পরিস্থিতি খুব খারাপ হলে সব মিলিয়ে তাদের মোট অনুৎপাদক সম্পদ (এনপিএ) দাঁড়াতে পারে ১২.৫ শতাংশে। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির ক্ষেত্রে হতে পারে ১৫.২%।
• অবস্থা আরও খারাপ হলে এনপিএ পৌঁছতে পারে ১৪.৭ শতাংশেও। মার্চে যা ছিল ৮.৫%।
• এই অবস্থায় ঝুঁকি এড়ানোর পথে না-হেঁটে তহবিল সংগ্রহ ও আর্থিক
অবস্থা পোক্ত করায় জোর দিতে হবে ব্যাঙ্কগুলিকে।

তবে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের উদ্বেগের অন্যতম কারণ, ব্যাঙ্কে ঋণের চাহিদা তলানিতে নামা। শীর্ষ ব্যাঙ্ক জানাচ্ছে, ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে থেকেই তা কমছিল। করোনার জেরে সেই চাহিদা আরও নেমেছে। বেড়েছে ঋণ আদায়ের ঝুঁকিও। ফলে ঝুঁকির অনুপাতে ব্যাঙ্কের মূলধনের হার ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরের ১৫ শতাংশের থেকে গত মার্চে কমে হয়েছে ১৪.৮%। বেড়েছে অনুৎপাদক সম্পদ বৃদ্ধির সম্ভাবনা। এমনকি ব্যাঙ্ক নয় এমন আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিরও প্রায় ৫০% ঋণ রয়েছে স্থগিতাদেশের আওতায়। যার প্রভাব ভবিষ্যতে আর্থিক ক্ষেত্রে পড়বে। এ ছাড়া অন্যান্য দেশের রাজনৈতিক ও আর্থিক ক্ষেত্রগুলিও টালমাটাল। এই সবের প্রেক্ষিতে ভারতের অর্থনীতির ভবিষ্যৎও ‘চূড়ান্ত অনিশ্চিত’ বলে মত গভর্নরের।

এ দিকে করোনা আবহেও শেয়ার বাজারের হেলদোল নেই। সূচক উঠছে প্রায় নিয়মিত (শুক্রবার পড়েছে)। রিপোর্টে শীর্ষ ব্যাঙ্ক মেনেছে, সূচকের উত্থানের সঙ্গে আসল আর্থিক অবস্থার সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

NPA RBI Reserve Bank of India
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE