Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Retail Price

আগুন আনাজে চড়তে পারে খুচরো মূল্যবৃদ্ধি

কলকাতার বাজারে এখন কেজি প্রতি লঙ্কার দাম এখন ২৫০-৩০০ টাকা। টোম্যাটো ঘুরে বেড়াচ্ছে ১৫০ টাকার আশেপাশে। এক কেজি আদা ৩২০-৩৬০ টাকা, বেগুন ১০০ টাকা, উচ্ছে ১০০ টাকা, ধনেপাতা ২০০ টাকা।

An image of Vegetables

—প্রতীকী চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
মুম্বই শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০২৩ ০৮:০১
Share: Save:

চিন্তা বাড়ছে খুচরো মূল্যবৃদ্ধির হার নিয়ে। অর্থনীতিবিদদের দাবি, গত কয়েক সপ্তাহে আনাজের দাম আশঙ্কার থেকে অনেক বেশি চড়েছে। বিশেষত টোম্যাটো, লঙ্কা, আদার মতো খাদ্যপণ্যের। এটাই জুলাইয়ে খুচরো মূল্যবৃদ্ধিকে ৬ শতাংশের দিকে নিয়ে যেতে পারে। জুলাই-সেপ্টেম্বরের হারকে ঠেলে তুলতে পারে ৫.৫ শতাংশে। রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের পূর্বাভাস ছিল, ওই ত্রৈমাসিকে সেই হার হবে ৫.২%।

প্রায় ৫৫ জন অর্থনীতিবিদদের নিয়ে গত ৩ তারিখ থেকে শুরু হওয়া সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের আট দিনের এক সমীক্ষাতেও স্পষ্ট এমন আশঙ্কার ছবি। সেখানে প্রায় সকলেই বলেছেন, গত চার মাস ধরে মূল্যবৃদ্ধির নামতে থাকার স্বস্তি উধাও হতে বসেছে। জুনে ফের মাথা তুলে তা পৌঁছতে পারে ৪.৫৮ শতাংশে। মে মাসে খুচরো বাজারে ওই হার নেমেছিল ৪.২৫ শতাংশে। রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক মূল্যবৃদ্ধিকে ৪ শতাংশের মধ্যে বাঁধার যে লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে, তার কাছাকাছি।

উল্লেখ্য, কলকাতার বাজারে এখন কেজি প্রতি লঙ্কার দাম এখন ২৫০-৩০০ টাকা। টোম্যাটো ঘুরে বেড়াচ্ছে ১৫০ টাকার আশেপাশে। এক কেজি আদা ৩২০-৩৬০ টাকা, বেগুন ১০০ টাকা, উচ্ছে ১০০ টাকা, ধনেপাতা ২০০ টাকা। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, পেঁয়াজ কিছু দিন আগে স্বাভাবিক দরে বিকোচ্ছিল। তা-ও এ বার একটু বেড়ে কেজি প্রতি ২৮ টাকা হয়ে গিয়েছে।

আজ বিজেপি প্রেসিডেন্ট জেপি নড্ডার অবশ্য দাবি, ভারতে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি মাত্র ২.৯%। যাঁরা তার দাম নিয়ে কথা বলছেন তাঁরা আসলে বেশি লেখা-পড়া করেন না। কোনও খবরও রাখেন না। আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি-সহ বিভিন্ন দেশে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির হার কতটা বেশি, তা তুলে ধরেন তিনি।

আইডিএফসি ফার্স্ট ব্যাঙ্কের অর্থনীতিবিদ গৌরা সেনগুপ্তের দাবি, ন্যাশনাল হর্টিকালচার বোর্ডের পরিসংখ্যান অনুযায়ী খুচরো বাজারের মূল্যসূচকে আনাজের যে অংশ রয়েছে, তার দাম জুলাইয়ে এখনও পর্যন্ত ৩৪% বেড়েছে। জুনে বেড়েছিল ১৮%। তাঁর আশঙ্কা, আনাজের দাম বৃদ্ধির এই গতি বহাল থাকলে জুলাইয়ে মূল্যবৃদ্ধিকে তা ৬ শতাংশের দিকে ঠেলে দেবে।

দেশের বহু বাজারে আনাজপাতি কার্যত সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে বেরিয়ে গিয়েছে। এ জন্য দায়ী কোথাও চড়া গরম ও অনাবৃষ্টি, কোথাও অতিবৃষ্টি। আইডিএফসি ফার্স্ট ব্যাঙ্ক ইকনমিক রিসার্চের তথ্য বলেছে, দেশের কিছু অংশে আবহাওয়া ফসলের চরম ক্ষতি করছে। ফলে জোগান ব্যাহত হওয়ায় দাম বেড়েছে।

ডয়েশ ব্যাঙ্কের ভারতে মুখ্য অর্থনীতিবিদ কৌশিক দাসের মতে, খাদ্যপণ্যের বর্ধিত দামের ধাক্কা একসঙ্গে বোঝা যাবে জুলাইয়ে। পরিসংখ্যানে তার ছাপ পড়বে। এখন যদি দাম কিছুটা কমতেও শুরু করে, তবু জুলাই-সেপ্টেম্বরে খুচরো মূল্যবৃদ্ধি ৫.৫ শতাংশে চড়বে। জুলাই-অগস্টের জন্য নমুরার অর্থনীতিবিদদেরও একই পূর্বাভাস। তবে তাঁদের দাবি, এখনই সুদ বাড়ানো হবে বলে মনে হয় না।

মূল্যবৃদ্ধি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসায় গত দু’টি ঋণনীতিতে আরবিআই সুদের হার স্থির রেখেছে। আশা তৈরি হচ্ছিল, দাম বৃদ্ধির চাপ আর একটু কমলে হয়তো আর্থিক বৃদ্ধিতে চোখ রেখে সুদ কমাতে পারে তারা। তবে অর্থনীতিবিদ সোনাল বর্মা এবং অরোদীপ নন্দী সম্প্রতি বলেছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে সুদ কমার সম্ভাবনা আরও পিছিয়ে গেল। আরবিআই হয়তো কোনও ঝুঁকি নিতে চাইবে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Retail Price market price
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE