Advertisement
E-Paper

চিঠি নেই, ইতি পয়লার পোস্টকার্ডে

টেলিগ্রামের টরে টক্কা আর নেই। তলানিতে পোস্ট কার্ডের বিক্রিও। অনেকেই বলছেন, শুধু ব্যবসা নয়, হারিয়ে যাচ্ছে চিঠিতে বাঙালির নববর্ষে শুভেচ্ছা ও প্রণাম জানানোর চেনা সেই সব ভাষা আর অনুভূতিও।

দেবপ্রিয় সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:২০
স্মৃতি: চেনা কিন্তু বিরল ছবি।  এ যুগে বিপন্নও। —ফাইল চিত্র।

স্মৃতি: চেনা কিন্তু বিরল ছবি।  এ যুগে বিপন্নও। —ফাইল চিত্র।

টরে টক্কার শব্দ চিরতরে হারিয়ে গিয়েছে আগেই। প্রযুক্তির সঙ্গে পাল্লা দিতে না পেরে এ বার কি ক্রমশ নিজের বিদায়ী চিঠি লিখছে পোস্টকার্ডও?

বিজয়া দশমীর মতো অবশ্যই নয়। কিন্তু নববর্ষেও চিঠি পাঠানোর রেওয়াজ ছিল বেশ। এ রাজ্যে পোস্টকার্ডের শুরুতে তখন অবধারিত ছিল ‘শ্রীচরণেষু...’ কিংবা ‘স্নেহের...’। কিন্তু প্রথমে এসএমএস আর এখন হোয়াটসঅ্যাপের মতো বার্তা পাঠানোর মাধ্যমের ঠেলায় সেই পোস্টকার্ডের বিক্রি ঠেকেছে তলানিতে। এ বার নববর্ষেও তার চাহিদা তেমন নেই। একই ছবি ইনল্যান্ড কিংবা খামের ক্ষেত্রেও।

টেলিগ্রামের টরে টক্কা আর নেই। তলানিতে পোস্ট কার্ডের বিক্রিও। অনেকেই বলছেন, শুধু ব্যবসা নয়, হারিয়ে যাচ্ছে চিঠিতে বাঙালির নববর্ষে শুভেচ্ছা ও প্রণাম জানানোর চেনা সেই সব ভাষা আর অনুভূতিও।

স্মৃতিমেদুর হয়ে অনেকে বলছেন, বাংলার নতুন বছরে দূরে থাকা আত্মীয়, পরিজন ও বন্ধুদের শুভেচ্ছা বার্তা পাঠানোর চল ছিল। গুরুজনদের কাছে আশীর্বাদ চেয়ে চিঠি লিখত ছোটরা। বড়রাও শুভেচ্ছা চিঠি দিতেন। সেই যোগসূত্রে পোস্ট কার্ডের চাহিদাই ছিল বেশি।

উত্তর কলকাতার বাসিন্দা তথা ডাক পণ্য সংগ্রাহক দীপক দের বক্তব্য, আত্মীয় ছাড়াও নতুন দোকান খুললে বা পুরনো গ্রাহকদের নববর্ষে দোকানে আসার আমন্ত্রণের চিঠি দিতেন ব্যবসায়ীরা। সহাস্যে তিনি বলছেন, ‘‘টাকার দরকার পড়লে নববর্ষের আগে কর্মসূত্রে বাইরে থাকা বাবাকে চিঠি লিখে প্রণাম জানাতাম আমরা।’’ তিনি জানান, ‘‘বাংলাদেশে পয়লা বৈশাখের জন্য বিশেষ ডাকটিকিট প্রকাশ করা হয়েছিল।’’ কিন্তু স্মার্ট ফোনে মগ্ন এই প্রজন্মের ক’জন এখন পোস্টকার্ডের উপর নির্ভর করেন?

উতরাই

পোস্টকার্ড
সাল বিক্রি (লক্ষ)


২০০৪ (দু’মাসে) ১৫.৯৮


২০০৫ (১০ মাসে) ৬৬.৩৬


২০১৩-’১৪ ১৬.০৬


২০১৪-’১৫ ৯.৪২


২০১৫-’১৬ ১৭.৩০


২০১৬-’১৭ ৯.৬১


২০১৭-’১৮ ৬.৯৯

ওয়েস্ট বেঙ্গল সার্কেলে (পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম, আন্দামান)

তথ্যসূত্র: ডাক বিভাগ

২০১৩ সালে বন্ধ হওয়া ইস্তক টেলিগ্রাম পরিষেবায় যুক্ত এবং পরে বিএসএনএলের কর্মী অনিন্দ্যকুমার সরকার জানাচ্ছেন, শুভেচ্ছা বার্তা পাঠাতে গ্রিটিংস টেলিগ্রামের চল ছিল। নববর্ষ, হ্যাপি নিউ ইয়ার, বিজয়া, বিয়ে ইত্যাদির জন্য আলাদা কোড ছিল। ভাল বার্তা নিয়ে গেলে অনেক সময়েই প্রাপকের কাছে বখশিস পেতেন ডাককর্মীরা।

তিনি জানাচ্ছেন, আশির দশকের শেষে শুধু পার্ক স্ট্রিটে টেলিগ্রাফ অফিস থেকে পয়লা বৈশাখের জন্য অন্তত ১০০টি টেলিগ্রাম বুক করা হত। তিনি বলছেন, এসএমএস, ই-মেল, হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগের নতুন দিন এসেছে। টেলিগ্রামের মতো পোস্টকার্ডও কি তাই সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে? তার জবাব সম্ভবত লুকিয়ে আগামী দিনের গর্ভেই।

Letters Post Card Poila Baisakh 2018 পোস্টকার্ড Messege
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy