Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
চিন্তা বাড়াচ্ছে ব্যাঙ্ক, পিএফে সুদ হ্রাস
Share Market

ভাইরাসে কাবু ষাঁড়, আতান্তরে লগ্নিকারী

শুক্রবারও লেনদেন শুরুর প্রথম ১৫ মিনিটের মধ্যেই সেনসেক্স নামে ৩৩৮১ পয়েন্ট। ১০ শতাংশেরও বেশি। নিফ্‌টি হারায় প্রায় ৯৫০ পয়েন্ট। যার জেরে ভেঙে যায় সার্কিট।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

অমিতাভ গুহ সরকার
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০২০ ০২:৪৪
Share: Save:

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বাজার নামছিল কয়েক দিন ধরেই। তার পরে এই পতনে ইন্ধন জুগিয়েছে ইয়েস ব্যাঙ্ক কেলেঙ্কারি। এই ঝড় প্রবল হয়ে সূচকের উপরে আছড়ে পড়ল গত সপ্তাহে। প্রথমে সোমবার দোলের দিনে, তার পরে বুধ ও বৃহস্পতিবার তা লন্ডভন্ড করে দিল বাজারকে। বিশেষত বুধবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনাকে অতিমারি বলায়, পরের দিন অনিয়ন্ত্রিত রক্তপাত দেখে সূচক। বৃহস্পতিবার সেনসেক্স নামে ২৯১৮ পয়েন্ট। মুছে যায় লগ্নিকারীদের ১১.৩৮ লক্ষ কোটি টাকার সম্পদ।

শুক্রবারও লেনদেন শুরুর প্রথম ১৫ মিনিটের মধ্যেই সেনসেক্স নামে ৩৩৮১ পয়েন্ট। ১০ শতাংশেরও বেশি। নিফ্‌টি হারায় প্রায় ৯৫০ পয়েন্ট। যার জেরে ভেঙে যায় সার্কিট। নিয়ম অনুযায়ী ৪৫ মিনিট বন্ধ রাখা হয় লেনদেন। পরে বাজার খুললে দিনের সব লোকসান মিটিয়ে সূচক শুধু সবুজেই ফেরে না, ওঠে অনেকটাই। উত্থান ১৩২৫ অঙ্ক। শুধু ভারত নয়, সূচক বাড়ে বিশ্ব জুড়েই।

তবে এই উত্থানকে মোটেই বাজারের ঘুরে দাঁড়ানো বলা যাচ্ছে না। চিনে করোনা সংক্রমণের হার কিছুটা কমলেও, তা তীব্র হয়েছে ইউরোপ ও আমেরিকায়। বিশ্ব বাণিজ্য থমকানোর মুখে। বাজারে এর প্রভাব বেশ কিছু দিন থাকতে পারে। এই অবস্থায় আতান্তরে পড়েছেন লগ্নিকারীরা। বিশেষত, কয়েক দিন আগেই সুদ কমানো হয়েছে ইপিএফে। গত সপ্তাহে আমানতে সুদ কমিয়েছে স্টেট ব্যাঙ্কও। ফলে সব মিলিয়ে এখন কোথায় টাকা ঢালবেন, তা নিয়েই চিন্তায় তাঁরা।

তবে আশার কথা, এর আগে চলতি শতাব্দীতে এক দিনে দু’বার সূচক পড়েছে ১০ শতাংশের বেশি। প্রথম বার ২০০৪ সালের মে মাসে। দ্বিতীয় বার ২০০৮-এর অক্টোবরে। উভয় ক্ষেত্রেই পরে বাজার এগিয়েছে অনেকটা করে। আশা করা যায়, এ বারও তেমনটা হবে। তত দিন পর্যন্ত পরিস্থিতিতে নজর রেখে ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে হবে। এখন যা করা যেতে পারে, তা হল—

• শেয়ারে লগ্নি করতে চাইলে ডিভিডেন্ড ইল্ড বিচার করে শেয়ার বাছা যেতে পারে। যে সব সংস্থা বেশি ডিভিডেন্ড দেয়, দাম অনেকটা নামায় তাদের শেয়ারে ডিভিডেন্ড বাবদ প্রকৃত আয় অনেকটা উঁচুতে থাকবে। তাই এই সব শেয়ারে লগ্নি করলে যত দিন না দাম উঠছে, অন্তত তত দিন ডিভিডেন্ড বাবদ ভাল আয় হবে।

• শেয়ারে তত সড়গড় না হলে ভাবা যায় ডিভিডেন্ড ইল্ড ফান্ডে লগ্নির কথা।

• সর্বোচ্চ উচ্চতা থেকে সেনসেক্স, নিফ্‌টি পড়েছে প্রায় ১৯%। এই অবস্থায় ইনডেক্স ফান্ড বাছা যেতে পারে। তবে একলপ্তে নয়, অল্প করে টাকা ঢালতে হবে প্রতিটি পতনে।

• যে সব ভাল শেয়ার চড়া দামের জন্য এত কাল ধরা যায়নি, তা এই সুযোগে একটু একটু করে ঝুলিতে পোরা যায়।

এর মধ্যে অর্থনীতির জন্য আশার কথা হল, ফেব্রুয়ারিতে সাত মাসে প্রথম রফতানি বেড়েছে। ছ’মাসে প্রথম কমেছে খুচরো মূল্যবৃদ্ধি। জানুয়ারিতে শিল্প বৃদ্ধির হার হয়েছে ২%।

তবে আশঙ্কা, করোনার প্রকোপে রফতানি ধাক্কা খেতে পারে মার্চে। আর মূল্যবৃদ্ধি কমায় সুদ কমানোর দাবি জোরালো হবে। ফলে সূচক উঠলেই যে স্বস্তি মিলবে, তা নয়। লগ্নির সিদ্ধান্ত নিতে হবে চোখকান খোলা রেখে।

(মতামত ব্যক্তিগত)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Share Market Coronavirus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE