সোনার দৌড়ের পাশে গতি বাড়াচ্ছে রুপো। শনিবার কলকাতায় প্রতি কেজি রুপোর বাটের দাম আগের দিনের থেকে ৪৫৫০ টাকা বেড়ে ১,৪৩,৮০০ টাকায় পৌঁছেছে। জিএসটি যোগ করে দাম দাঁড়াচ্ছে ১,৪৮,০১৪ টাকা। এই প্রথম। দেড় লক্ষ অল্প দূরেই। খুচরো রুপো আরও ১০০ টাকা বেশি। অন্য দিকে, এ দিন খুচরো পাকা সোনা (১০ গ্রাম, ২৪ ক্যারাট) হয়েছে ১,১৪,৮৫০ টাকা। আগের দিনের চেয়ে ৬১০ টাকা বাড়লেও রেকর্ডের থেকে অল্প পিছনে। জিএসটি যোগ করে ১,১৮,২৯৬ টাকা। গয়না সোনা (১০ গ্রাম, ২২ ক্যারাট) ১,০৯,১৫০ টাকা।
বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক নীতি এবং ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্য বিশ্ব বাজারে সোনা ও রুপোর দাম ক্রমাগত বাড়ছে। দাম বৃদ্ধিতে ইন্ধন জোগাচ্ছে ডলারের বাড়তে থাকা দামও। ওয়েস্ট বেঙ্গল বুলিয়ন মার্চেন্টস অ্যান্ড জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক দীনেশ কাবরা বলেন, ‘‘দুই ধাতুতে লগ্নি তো বাড়ছেই। কিন্তু সেগুলির দাম বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এই মুহূর্তে আরও বড় ভূমিকা পালন করছে ডলারের দাম। ভারতের মতো দেশে ধাতু দু’টির চাহিদা মূলত আমদানি করেই মেটাতে হয়। ডলারের দামি হওয়ায় আমদানিকৃত সোনা এবং রুপোর দাম বেড়ে চলেছে। আমরা এমনিতে কাঁচা সোনা এবং রুপোর ব্যবসা করি। বিক্রি প্রায় বন্ধের মুখে।’’
বঙ্গীয় স্বর্ণশিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক টগর পোদ্দার বলেন, ‘‘সোনার কারিগরদের হাল তো আগেই খারাপ হয়েছে। সোনার দাম বৃদ্ধির কারণে অনেকেই রুপোর গয়নার দিকে ঝুঁকছিলেন। কিন্তু এ বার সেই ধাতুটির দামও আকাশ ছোঁয়ার ফলে বিক্রি তলানিতে।’’ রাজ্যে রুপোর কাজ বেশি হয় নদিয়ার রানাঘাটে। সেখানকার হালালপুর এবং উত্তরপাড়ার জাপান নগরের রুপোর গয়না ও সামগ্রীর ব্যবসায়ী এবং তাঁদের সংগঠনের দুই নেতা অভিজিৎ পাল এবং চন্দন সরকার বলেন, ‘‘এই অঞ্চলের ৯০% মানুষই রুপোর ব্যবসায় জড়িত। আমরা এখান থেকে উত্তরবঙ্গ-সহ রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে রুপোর গয়না এবং সামগ্রী সরবরাহ করি। ভিন্ রাজ্যেও যায়। রুপোর দাম চড়তে থাকায় ব্যবসা প্রায় ৭০% কমে গিয়েছে। পুজোর মুখে গোটা অঞ্চলের মানুষই আর্থিক অনটনে। কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকারের কাছে আর্থিক সহযোগিতার আবেদন জানিয়েছি।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)