ব্যাঙ্ক বা ডাকঘরের লগ্নি প্রকল্পগুলিতে দিন দিন কমছে সুদ। ফলে ঝুঁকি আছে জেনেও অনেকেই বিনিয়োগ করছেন মিউচুয়াল ফান্ডে। এতে আবার দু’ধরনের লগ্নি করা যায়। একটি হল, লাম্পসাম এবং অপরটির নাম সিস্টেমেটিক ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যান বা এসআইপি। দ্বিতীয়টিতে ব্যাঙ্ক বা ডাকঘরের রেকারিং ডিপোজ়িটের (আরডি) মতো মাসে মাসে টাকা জমানোর সুযোগ রয়েছে। এ হেন এসআইপিতে ৭-৫-৩-১ নিয়ম মেনে বিনিয়োগ করলে বেশি লাভ হবে গ্রাহকের, বলছেন বিশ্লেষকেরা।
এখন প্রশ্ন হল, কী এই ৭-৫-৩-১ নিয়ম? এখানে ৭ বলতে বছর, ৫ বলতে বিভাগ, তিনের অর্থ ধাপ এবং টাকার পরিমাণকে এক দিয়ে বুঝিয়েছেন আর্থিক বিশ্লেষকেরা। তাঁদের কথায়, একটি এসআইপি ন্যূনতম সাত বছরের জন্য করা উচিত। তার আগে এতে বিনিয়োগ বন্ধ করলে রিটার্ন বাবদ বিরাট অর্থ পকেটে আসার সম্ভাবনা কম। কেউ সাত বছরের বেশি সময় ধরে লগ্নি করলে আরও বেশি যে লাভ করবেন, তা বলাই বাহুল্য।
এসআইপিতে আবার বিভিন্ন রকমের তহবিল রয়েছে। উদাহরণ হিসাবে ইক্যুইটি ফান্ড (কেবলমাত্র শেয়ারে লগ্নি), ডেট ফান্ড (বন্ড বা ঋণপত্রে বিনিয়োগ), হাইব্রিড ফান্ড (শেয়ার এবং ঋণপত্রের মিশ্রণ) এবং মানি মার্কেট ফান্ডের (স্বল্পমেয়াদি ঋণপত্রে বিনিয়োগ) কথা বলা যেতে পারে। আর তাই কোনও একটি তহবিলে সমস্ত টাকা লগ্নি করার থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্লেষকেরা। তাঁদের কথায়, বিনিয়োগকারীর অন্তত পাঁচটি আলাদা আলাদা তহবিলে টাকা রাখা উচিত। সে ক্ষেত্রে লোকসানের ঝুঁকি যে কমবে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই।
মিউচুয়াল ফান্ডের এসআইপির সঙ্গে বাজারের সম্পর্ক রয়েছে। সেখানে পরিস্থিতি সব সময়ে সমান থাকে না। সেই কারণে অন্তত তিনটি ধাপে এতে বিনিয়োগ করতে বলেছেন বিশ্লেষকেরা। তাঁদের সাফ কথা, পরিস্থিতি বুঝে গ্রাহককে লগ্নি করতে হবে। তা হলে কম টাকা বিনিয়োগ করেও বেশি মুনাফা করতে পারবেন তিনি।
আর সব শেষে বলতেই হবে পরিমাণের কথা। প্রতি বছর এসআইপিতে টাকার অঙ্ক বৃদ্ধি করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞেরা। তাঁদের যুক্তি এতে মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে চলতে পারবেন লগ্নিকারী। উদাহরণ হিসাবে কেউ যদি হাজার টাকা দিয়ে এসআইপি শুরু করেন, তা বলে প্রথম বছর শেষে সেটা বাড়িয়ে ১,৫০০ টাকা করা উচিত। যে যত দ্রুত বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়াতে পারবেন, তাঁর সঞ্চয় ততই বৃদ্ধি পাবে।
(বিশেষ দ্রষ্টব্য: মিউচুয়াল ফান্ডে লগ্নি বাজারগত ঝুঁকি সাপেক্ষ। আর তাই বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনেই এই তহবিলে বিনিয়োগ করুন। এতে আর্থিক ভাবে লোকসান হলে আনন্দবাজার ডট কম কর্তৃপক্ষ কোনও ভাবেই দায়ী নয়।)