বিক্ষোভ। সাম্প্রতিক প্রতিবাদ মিছিল কলকাতায়।
গয়নায় উৎপাদন শুল্ক বসানোর প্রস্তাব ফিরিয়ে না-নেওয়া পর্যন্ত দেশের বহু অঞ্চলের সোনা বিক্রেতারাই মঙ্গলবার নতুন করে ধর্মঘট শুরু করেছিলেন। দ্বিধা ঝেড়ে ফেলে বৃহস্পতিবার থেকে টানা ধর্মঘটের সেই রাস্তায় সামিল হলেন পশ্চিমবঙ্গের ব্যবসায়ীরাও। একই দাবিতে গলা মিলিয়ে জানালেন, শুল্ক বসানোর প্রস্তাব প্রত্যাহার না-করা হলে আজ থেকে রাজ্যের সমস্ত দোকানের ঝাঁপ বন্ধ রাখবেন তাঁরা। অধিকাংশ রাজ্যে অবশ্য মার্চের প্রথমে ডাকা ধর্মঘটই এখনও ওঠেনি। ফলে সব মিলিয়ে দেশে গয়না শিল্পের আন্দোলন আরও জটিল আকার নিল বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ।
শিল্পমহলের ক্ষোভ কমাতে গত সোমবারই এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে কেন্দ্র। যেখানে শুল্ক কার্যকর করার ক্ষেত্রে বিশেষ কিছু সুবিধার কথা জানানো হয়। এ দিন স্বর্ণশিল্প বাঁচাও কমিটির কার্যকরী সভাপতি বাবলু দে বলেন, ‘‘বিজ্ঞপ্তি খতিয়ে দেখেছি। আপাতদৃষ্টিতে সেখানে অর্থমন্ত্রী আমাদের অনেক দাবিই মেনে নিয়েছেন বলে মনে হয়েছিল। কিন্তু পুরো বিষয়টি বিশ্লেষণের পর আমরা আন্দোলন তোলার সিদ্ধান্ত বদলাচ্ছি।’’
বাবলুবাবু এবং স্বর্ণশিল্প বাঁচাও কমিটির সম্পাদক নবীন কুমার চন্দ্র উভয়েরই বক্তব্য, প্রথমত, কমিটিতে মোট সদস্যের তুলনায় গয়না শিল্পের প্রতিনিধি খুবই কম। ফলে সংখ্যা গরিষ্ঠের মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে শিল্প সমস্যায় পড়বে। দ্বিতীয়ত, কমিটির সিদ্ধান্ত যে মানা হবে, তার নিশ্চয়তাও মেলেনি। সর্বোপরি, গয়না শিল্পে উৎপাদন শুল্ক বসলে কারিগর-সহ এই ব্যবসায় যুক্ত বিভিন্ন মহল চূড়ান্ত সমস্যায় পড়বেন। আর এই সব কারণেই তা বসানোর প্রস্তাব পুরোপুরি তুলে না-নেওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট চালানো হবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
পাকা সোনা বা বুলিয়ন বাজারের ব্যবসায়ীররাও ধর্মঘটে সামিল হয়েছেন। ওয়েস্ট বেঙ্গল বুলিয়ন মার্চেন্টস অ্যান্ড জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সম্পাদক অনিল আঢ্য বলেন, ‘‘সোনা ব্যবসায় বিভিন্ন ক্ষেত্র অঙ্গাঙ্গি ভাবে জড়িত। যেমন, গয়নার ব্যবসা মার খেলে কমবে পাকা সোনার কাটতি। কাজ হারাবেন কারিগররা। তা ছাড়া, গয়না ব্যবসায়ীদের সূত্র ধরে শুল্ক বিভাগ আমাদেরও যে হয়রান করবে না, তার নিশ্চয়তা কী? তাই আন্দোলনের শরিক হয়েছি।’’
বাজেটে সোনার গয়নায় ১% হারে উৎপাদন শুল্ক বসানোর প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। যার বিরুদ্ধে সারা দেশে ২ মার্চ থেকে ধর্মঘট শুরু করেছিলেন ব্যবসায়ীরা। জেটলির সঙ্গে বৈঠকের পরে শনিবার রাতে ১৮ দিনের মাথায় কিছু অঞ্চলে তা তুলে নেওয়া হয়। এর মধ্যে ছিল পশ্চিমবঙ্গও। তারপরেই সোমবার জারি হয় বিজ্ঞপ্তি। কিন্তু তাতে যে চিঁড়ে ভেজেনি সেটা স্পষ্ট। শুল্ক বসানোর প্রস্তাব তোলার দাবিতে বিজ্ঞপ্তি জারির পর দিন অর্থাৎ মঙ্গলবারই ফের ধর্মঘটে গিয়েছিল কিছু রাজ্যের সোনার দোকানিরা। এ বার তাতে পা মেলাল এই রাজ্যও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy