ব্যাঙ্ক ও ডাকঘরে সুদ যত কমছে, ততই বিপুল পরিমাণ তহবিল সরে যাচ্ছে অন্যত্র। মূলত মিউচুয়াল ফান্ডে। শুধু মাত্র অক্টোবর মাসে মিউচুয়াল ফান্ডে মোট লগ্নি এসেছে ৫১,০০০ কোটি টাকা। চলতি আর্থিক বছরের প্রথম সাত মাসে ফান্ডে লগ্নি হয়েছে ২.৫ লক্ষ কোটিরও বেশি টাকা।
গত দু’বছর ধরেই শেয়ার বাজার বেশ চাঙ্গা থাকায় ভাল রকম আকর্ষণ বেড়েছে ইকুইটি ফান্ডগুলির। প্রথম সাত মাসে ইকুইটি ফান্ডগুলিতে লগ্নি এসেছে ৯১,২৮৩ কোটি টাকা। ব্যালান্সড ফান্ডে প্রায় ৫৩,০০০ কোটি। এই সময়ে ইএলএসএস ফান্ডে লগ্নি ছাড়িয়েছে ৫,০০০ কোটি টাকা। তবে বেশ খানিকটা আকর্ষণ কমেছে লিক্যুইড ফান্ডের প্রতি। পুরো তথ্য দেওয়া হল সঙ্গের সারণিতে।
ইকুইটি এবং ব্যালান্সড ফান্ডে তহবিল এতটা বাড়ায় লগ্নির ঢল নেমেছে শেয়ার বাজারে। ফলে প্রতিকূল খবরেও বাজার তেমন পড়ছে না। সামান্য নামলেও সূচক আবার স্বস্থানে ফিরে আসছে। সেই অর্থে তেমন কোনও সংশোধন হচ্ছে না। এটা কিন্তু খুব একটা ভাল লক্ষণ নয়। সব শেয়ার যে-গুণগত কারণে উপরে উঠছে, তা কিন্তু নয়। বাড়ছে টাকার জোগান অত্যধিক বেশি হওয়ার জন্য। এই কারণে বর্তমান বাজারে শেয়ারে লগ্নি করতে হবে বেশ ভেবে-চিন্তে। হুজুগে অথবা গুজবে কান দিয়ে শেয়ার কেনা একদম ঠিক হবে না।
ইকুইটি ফান্ডের কদর বাড়লেও পণ্যমূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় সুদ নামার সম্ভাবনা কমে আসায়, লগ্নি কমছে ডেট ফান্ডে। প্রথম সাত মাসে ভাল রকম লগ্নি কমেছে লিক্যুইড ফান্ডে।
নতুন ইস্যুর বাজারে গত সপ্তাহে নজরকাড়া সাফল্য পেয়েছে ‘ভারত ২২ ইটিএফ’ ইস্যু। বিলগ্নিকরণের লক্ষ্যে আনা কেন্দ্রের এই ইস্যুতে প্রয়োজনের তুলনায় ৪ গুণ আবেদন জমা পড়েছে। ইস্যুটির প্রাথমিক আকার ছিল ৮,০০০ কোটি টাকা। লগ্নিকারীদের উৎসাহ দেখে তা বাড়িয়ে ১৪,৫০০ কোটি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ফলে বিলগ্নিকরণের লক্ষ্যমাত্রার দিকে অনেকটাই এগোল কেন্দ্র। ফান্ডের ইতিহাসে এটিই এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বড় ইস্যু।
‘ভারত ২২ ইটিএফ’ প্রকল্পের অধীনে আছে ২২টি নামী রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা এবং ৩টি বড় মাপের বেসরকারি কোম্পানির শেয়ার। ছোট লগ্নিকারী এবং পিএফ ফান্ডের জন্য সংরক্ষিত শেয়ারের জন্য আবেদন জমা পড়েছে যথাক্রমে ১.৪৫ ও ১.৫০ গুণ। ছোট লগ্নিকারীদের বেশি করে শেয়ার দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। সব শ্রেণির লগ্নিকারীরা এই ইস্যুতে ডিসকাউন্ট পাবেন ৩%। এর অধীনে বিভিন্ন শিল্প শেয়ার থাকার কারণে ঝুঁকি কিছুটা কম হবে বলে মনে করা হচ্ছে। আশা, চলতি সপ্তাহেই বাজারে নথিবদ্ধ হবে এই ইটিএফ। কেনাবেচা করা যাবে অন্যান্য শেয়ারের মতোই। উঁচু বাজারে ইস্যুটি আসায় তাৎক্ষণিক লাভ কতটা হবে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে বড় মেয়াদে ফল ফলবে বলে ধারণা।
জিএসটি-র ধাক্কা সামলে ওঠার আগেই নরেন্দ্র মোদী সরকার হাত লাগিয়েছে সমাজকে নাড়া দেওয়া আর একটি সংস্কারের কাজে। এ বার প্রয়াস শুরু হয়েছে ১৯৬১ সালের আয়কর আইনকে ঢেলে সাজার। এরই মধ্যে গড়া হয়েছে ৬-সদস্যের এক টাস্ক ফোর্স। আয়কর ব্যবস্থায় রদবদল আনতে ছ’মাসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে তাদের। সব কিছু ঠিকঠাক চললে ২০১৮-’১৯ অর্থবর্ষে অর্থাৎ ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের আগেই বদলাতে পারে দেশের আয়কর আইন। তা যদি হয়, তবে ভোট ব্যাঙ্কের কথা মাথায় রেখে নতুন আইন কিছুটা মনমোহিনী হলেও হতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy