সব কিছু ঠিকঠাক চললে অদূর ভবিষ্যতেই বিশ্বের অন্যতম ‘কোয়ান্টাম কম্পিউটার’ তৈরির আঁতুড়ঘর হবে কলকাতা। ফাইল ছবি।
সব কিছু ঠিকঠাক চললে অদূর ভবিষ্যতেই বিশ্বের অন্যতম ‘কোয়ান্টাম কম্পিউটার’ তৈরির আঁতুড়ঘর হবে কলকাতা। যা রূপ পাবে অনাবাসী ভারতীয় শিল্পপতি তথা রাজ্যের অন্যতম বিনিয়োগকারী পূর্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায়ের দ্য চ্যাটার্জি গোষ্ঠীর (টিসিজি) টিসিজি সেন্টারস ফর রিসার্চ অ্যান্ড এডুকেশন ইন সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (টিসিজি ক্রেস্ট) হাত ধরে। ক্রেস্ট কর্তাদের ইঙ্গিত, ভারতে এটিই সম্ভবত প্রথম বেসরকারি গবেষণা কেন্দ্র যারা কোয়ান্টাম কম্পিউটার তৈরির প্রকল্প শুরু করেছে। এবং সেই অত্যাধুনিক ও এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ পর্যায়ের এই কম্পিউটার তৈরির প্রথম ধাপের কাজ শুরু হতে চলেছে আগামী মঙ্গলবার থেকে। তাঁদের আশা, প্রাথমিক পর্যায়ে মূল কাঠামোর (এক কিউবিট ক্ষমতাসম্পন্ন) যন্ত্রাংশ জোড়া সম্ভব হবে ছ’মাসের মধ্যে।
লগ্নি করেই ক্ষান্ত থাকা নয়, শিক্ষা ও শিল্পের মেলবন্ধন এবং সামাজিক উন্নয়নের সঙ্গী হতে সল্টলেকের সেক্টর ফাইভে টিজিসি ক্রেস্ট গড়ে সেখানে চারটি আধুনিক গবেষণা কেন্দ্র চালু করেছে চ্যাটার্জি গোষ্ঠী। যার অন্যতম সেন্টার ফর কোয়ান্টাম ইঞ্জিনিয়ারিং, রিসার্চ অ্যান্ড এডুকেশন (সিকিওর)। সিকিওরের ডিরেক্টর অধ্যাপক ভানু প্রতাপ দাস, অধ্যাপক ভূপেন্দ্র নাথ দে, ক্রেস্ট-এর চিফ ডেভেলপমেন্ট অফিসার জয়দীপ ভট্টাচার্য প্রমুখ বৃহস্পতিবার তাঁদের কোয়ান্টাম কম্পিউটার প্রকল্পের অগ্রগতি ব্যাখ্যা করেন।
বিশেষজ্ঞ মহলের ব্যাখ্যা, প্রচলিত সাধারণ কম্পিউটারের চেয়ে অনেক গুণ বেশি শক্তিশালী এবং দ্রুত গতির ‘সুপার কম্পিউটার’-কেও হার মানাবে কোয়ান্টাম কম্পিউটার। যে কাজ করতে সুপার কম্পিউটার বহু বছর সময় নেয়, কোয়ান্টামে তা হতে পারে মাত্র কয়েক ঘণ্টায়। তার কাজ হতে পারে, আবহাওয়া সংক্রান্ত আরও দ্রুত এবং নিখুঁত তথ্য প্রদান, আরও দক্ষতার সঙ্গে নতুন ওষুধ বা রাসায়নিক কিংবা পলিমারের অণুর নকশা তৈরির হদিস দেওয়া ইত্যাদি।
ক্রেস্টের কর্তারা বলছেন, এটির প্রাথমিক কাঠামোর ভিত হল একটি ‘ডাইলিউশন রেফ্রিজারেটর’ যেটি কোয়ান্টাম কম্পিউটারের কোয়ান্টাম প্রসেসরকে শূ্ন্যের ২৭৩.১৪ ডিগ্রি সেলিসিয়াস নীচে রাখবে। বিভিন্ন দেশ থেকে আসা এটির প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ বসানোর কাজ চলছে ক্রেস্টে। তা শেষ হলে টাটা ইনস্টিটিউট অব ফান্ডামেন্টাল রিসার্চের (মুম্বই) সহযোগিতায় এক বছরের মধ্যে এক কিউবিট ক্ষমতাসম্পন্ন প্রাথমিক পর্যায়ের কোয়ান্টাম কম্পিউটারের অংশটি তৈরির আশা ক্রেস্টের। তবে তা গোড়ায় ক্রেস্টের নিজস্ব ব্যবস্থাটির পরীক্ষা ও দক্ষতা বৃদ্ধি এবং সেখানকার শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণে ব্যবহৃত হবে। বছর পাঁচেকের মধ্যে চার কিউবিট ক্ষমতাসম্পন্ন কোয়ান্টাম কম্পিউটার তৈরি করতে প্রায় ১০০ কোটি টাকা লগ্নি হবে। সেটি সম্পূর্ণ হলে তৈরি হবে পুরোদস্তুর গাণিতিক পরিভাষায় জটিল সমস্যা বিশ্লেষণের নানাকাজের সুযোগ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy