এক বছরের বেশি সময় ধরে খাবারদাবারের দাম চড়ে। বিশেষত হাত দেওয়া যাচ্ছে না আনাজপাতিতে। যার জেরে ধারাবাহিক ভাবে মাথা তুলে রয়েছে মূল্যবৃদ্ধির হার। আবার কেন্দ্রীয় কৃষি আইনের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা, পঞ্জাব-সহ দেশের উল্লেখযোগ্য অংশের কৃষক সমাজ। ভোটবাক্সে তার বিরূপ প্রভাব টেরও পেয়েছে বিজেপি। এই অবস্থাকে নিয়ন্ত্রণে আনতে এ বার কোমর বেঁধে নামার ইঙ্গিত দিল কেন্দ্র। মঙ্গলবার যে ন’টি ক্ষেত্রে জোর দিয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বাজেট পেশ করেছেন, কৃষি তার পয়লা নম্বরেই রয়েছে। কৃষিজ উৎপাদন ও গবেষণায় একগুচ্ছ প্রস্তাব দিয়ে মোট ১.৫২ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। জোর দেওয়া হয়েছে ডাল ও তৈলবীজের উৎপাদন, মজুত এবং বাজারিকরণে। সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, এ শুধু কৃষিতে গুরুত্ব বৃদ্ধি নয়, নির্বাচনমুখী মহারাষ্ট্র এবং হরিয়ানার কৃষক সমাজের উদ্দেশে বার্তাও বটে। যেখানে লোকসভা নির্বাচনে প্রবল ধাক্কা খেয়েছে সরকারি দল।
মূলত খাদ্যপণ্যের জন্যই খুচরো এবং পাইকারি উভয় বাজারে মূল্যবৃদ্ধি চড়ে রয়েছে। অবস্থা এমন যে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক সুদ কমাতে পারছে না। আর্থিক সমীক্ষায় মূল্যবৃদ্ধির মাপকাঠি থেকে খাদ্যপণ্যকে বাদ দেওয়ার সুপারিশ করেছেন দেশের মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা ভি অনন্ত নাগেশ্বরন। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, গত এক বছরে তাপপ্রবাহ, অসমান বৃষ্টিপাতের মতো প্রতিকূল অবস্থার মুখোমুখি হতে হয়েছে কৃষি ক্ষেত্রকে। তার জেরে কৃষিপণ্যের উৎপাদন এবং সরবরাহ ব্যবস্থা ধাক্কা খাওয়ায় ক্রমাগত চড়েছে দাম। এ দিন অর্থমন্ত্রী জানান, কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি ও আবহাওয়া মোকাবিলা সংক্রান্ত গবেষণার পরিকাঠামোয় প্রয়োজনীয় সংস্কার করবে কেন্দ্র। বিরূপ আবহাওয়ার সঙ্গে যোঝার ক্ষমতাসম্পন্ন কৃষিপণ্যের চাষে জোর বাড়ানোর কথা বলেছেন নির্মলা। বাজেটে আরও ঘোষণা, দু’বছরের মধ্যে ১ কোটি কৃষককে রাসায়নিক সারবিহীন জৈবচাষের আওতায় নিয়ে আসা হবে। দেওয়া হবে গবেষণা ও ব্র্যান্ডিংয়ের সাহায্য। আগ্রহী পঞ্চায়েতগুলির মাধ্যমে এই প্রকল্প রূপায়ণ করা হবে। বলা হয়েছে দেশের বিভিন্ন জায়গায় আনাজের উৎপাদন তালুক তৈরির কথা।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)