ভারতীয়েরা যাতে বিদেশ অর্থ পঠানো কমান, তা নিশ্চিত করতে চায় কেন্দ্র। উদ্দেশ্য দু’টি। বিদেশি মুদ্রার ভান্ডার শক্তিশালী রাখা এবং টাকার বিনিময় মূল্যের ভারসাম্য বাড়ানো। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সূত্রের বক্তব্য, এর জন্য বিদেশে অর্থ পাঠানোর নিয়মকানুন কঠোর করতে চলেছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। বিদেশের বিভিন্ন ব্যাঙ্কে যেখানে মেয়াদি আমানতের তহবিল নির্দিষ্ট সময়ের আগে তোলা যায় না, সেখানে ভারত থেকে পাঠানো অর্থের পরিমাণ কমানোই শীর্ষ ব্যাঙ্কের উদ্দেশ্য। রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক অবশ্য এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে চায়নি।
বিদেশে লগ্নির বিষয়টি পরিচালিত হয় রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের ‘লিবারালাইজ়ড রেমিট্যান্স স্কিম’ (এলআরএস)-এর নিয়ম অনুযায়ী। ওই নিয়মে কোনও ব্যক্তি বছরে ২.৫০ লক্ষ ডলার পর্যন্ত বিদেশে পাঠাতে পারেন। শেয়ার বা ঋণপত্রে লগ্নি ছাড়াও শিক্ষা, চিকিৎসা এবং ভ্রমণের উদ্দেশ্যে ওই অর্থ পাঠানো যায়। শীর্ষ ব্যাঙ্কের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, হালে ভারত থেকে বিদেশের ব্যাঙ্কে অর্থ পাঠানোর বহর দ্রুত বেড়েছে। গত মার্চে স্থানান্তরিত হয়েছে ১৭.৩২ কোটি ডলার। ফেব্রুয়ারিতে যা ৫.১৬ কোটি ছিল। ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে তার আগের বছরের থেকে অর্থ পাঠানোর পরিমাণ কমেছে ঠিকই, তবে সেটাও ছিল ৩০০০ কোটি ডলার। ২০২৩-২৪ সালের থেকে ১০০ কোটি কম।
সূত্রের বক্তব্য, রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক মনে করছে, এটা কার্যত এক শ্রেণির সম্পদ স্থানান্তর। যার উপরে আগে থেকেই নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। সে কারণে ভারত থেকে অর্থ যাতে বিদেশের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে কম যায়, তা নিশ্চিত করতে চাইছে তারা। শীর্ষ ব্যাঙ্ক মনে করছে, অর্থ পাঠানোর বহর বৃদ্ধি থেকে বোঝা যাচ্ছে এলআরএস প্রকল্পের অপব্যবহার হচ্ছে। আর্থিক প্রযুক্তি সংস্থা এবং ব্যাঙ্কগুলির এই সংক্রান্ত প্রক্রিয়া সরল করাই বিদেশে অর্থ পাঠানোর বহর বৃদ্ধির প্রধান কারণ।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)