এ বছর চা বাগানের বোনাস নিয়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের আগেই রাজ্য সরকার ২০% হারে তা দেওয়ার ‘পরামর্শ’ দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে এক রাতের মধ্যে জলপাইগুড়ির তিনটি বাগান বন্ধ হয়ে গেল। যা ‘বিরল’ বলে দাবি শ্রমিক নেতাদের। তাঁদের অভিযোগ, পুজোর মুখে বোনাস দেওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তাই এর কারণ। বৃহস্পতিবার রাতে চার্মুচি চা বাগানের চৌকিদারেরা কাজে গিয়ে দেখেছিলেন, ম্যানেজার-সহ আধিকারিকদের বাংলোর দরজা-জানালা বন্ধ। শ্রমিকেরা বুঝে যান, বোনাস বিলির আগে বাগান ছেড়ে চলে গিয়েছেন মালিকপক্ষ। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই রেডব্যাঙ্ক এবং সুরেন্দ্রনগর চা বাগান ছেড়েও চলে যান মালিকপক্ষ। তিন বাগান মিলে শ্রমিক সংখ্যা অন্তত ৪০০০।
শুক্রবার থেকে তিনটি বাগানই বন্ধ হয়েছে। ক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা সকাল থেকে সন্ধ্যে পর্যন্ত চামুর্চি বাজার লাগোয়া ভুটানগামী সড়ক অবরোধ করে রাখেন। ১৭ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান রেডব্যাঙ্ক, সুরেন্দ্রনগর বাগানের শ্রমিকেরাও। আজ, শনিবার বাগান খুলতে বৈঠক ডেকেছে জেলা প্রশাসন।
কোনও আলাপ-আলোচনার আগেই রাজ্য সরকার বাগানগুলিকে এ বছর ২০% পুজো বোনাস দিতে বলেছে তাদের শ্রমিকদের। গত বুধবার জলপাইগুড়িতে অরবিন্দ নগরের মাঠে সরকারি জনসভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, “কেউ কেউ এটা নিয়ে খেলার চেষ্টা করছেন। দয়া করে চা শ্রমিকদের টাকা নিয়ে খেলবেন না।” বন্ধ হওয়া তিনটি চা বাগানেই শ্রমিকদের পাওনা বকেয়া। শুক্রবার সকাল থেকে অবরোধ শুরু হলেও শ্রমিকেরা আধিকারিকদের আশ্বাস শোনেননি। জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি সীমা চৌধুরীও এসেছিলেন। চা বাগান পরিচালকদের সংগঠন আইটিপিএ-এর প্রধান উপদেষ্টা অমিতাংশু চক্রবর্তী বলেন, “২০% বোনাস দিতে পারবে না চামুর্চি বাগান। প্রশাসন বৈঠক ডেকেছে।”
জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষা মহুয়া গোপ বলেন, “চা শ্রমিকেরা সবাই যাতে বোনাস পান, তা দেখতে মুখ্যসচিবকে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বাগান কর্তৃপক্ষের সমস্যা থাকলে প্রশাসনকে জানান। এ ভাবে বাগান বন্ধ করে চলে যাওয়া সমাধান নয়।” এক কিস্তিতেই পুরো বোনাসের দাবিতে বানারহাটের চামুর্চি মোড় অবরোধ করেছিলেন কেন্দ্রের অধীন বানারহাট চা বাগানের শ্রমিকেরাও।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)