Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

চা-পর্যটনে মধ্যমণি এখন বিদেশিরা

প্রাথমিক ভাবে যে কোনও নতুন পরিকল্পনাকেই স্বাগত জানাচ্ছে চা শিল্পমহল। তবে অভিজ্ঞতা থেকে তাদের বক্তব্য, ঠিকঠাক নীতি না থাকলে বেশি পর্যটক আসেন না। ফলে পরিকল্পনা লাভজনক হয় না।

পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায় ও দেবপ্রিয় সেনগুপ্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:১২
Share: Save:

এর আগে পাহাড়ে চা বাগানকে ঘিরে পর্যটনের নীতি তৈরি করেও তেমন সাড়া পায়নি রাজ্য। এ বার তাই দার্জিলিং চায়ের ভুবনজোড়া খ্যাতিকে কাজে লাগিয়ে ‘শান্ত’ পাহাড়ে ফের পর্যটনের প্রসারে তাদের লক্ষ্য বিদেশি পর্যটক। এ জন্য নতুন পরিকল্পনা তৈরি করছে পর্যটন দফতর।

প্রাথমিক ভাবে যে কোনও নতুন পরিকল্পনাকেই স্বাগত জানাচ্ছে চা শিল্পমহল। তবে অভিজ্ঞতা থেকে তাদের বক্তব্য, ঠিকঠাক নীতি না থাকলে বেশি পর্যটক আসেন না। ফলে পরিকল্পনা লাভজনক হয় না।

কথায় বলে, পান না করলে দার্জিলিং চায়ের ‘মাসকাট্ল ফ্লেভার’-এর ব্যাখ্যা করা কার্যত অসম্ভব। এই চায়ের বেশিটাই পাড়ি দেয় বিদেশে। কিন্তু গত বছর আন্দোলনের জেরে পাহাড়ের অর্থনীতির মূল ভিত্তি চা ও পর্যটন শিল্প ব্যাপক ধাক্কা খায়। তা সামলাতে চায়ের বিদেশি ক্রেতা ও ভ্রমণপিপাসুদের বাগানে অতিথি করতে চায় রাজ্য। পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবের দাবি, দার্জিলিঙের অনেক বাগানই এ জন্য আদর্শ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও চা-পর্যটনে বারবার উৎসাহ প্রকাশ করেছেন। সরকারি সূত্রের খবর, পর্যটকদের বাগানের বাংলোয় রেখে সার্বিক ভাবে চা তৈরির আস্বাদ দেওয়াই এই পরিকল্পনার মূল লক্ষ্য।

রাজ্যের ভাবনা

• চা তৈরির শুরু থেকে শেষ, বাগানেই হাতেকলমে চেখে দেখবেন বিদেশি অতিথিরা

• প্রাথমিক ভাবে কিছু বাগানের সঙ্গে চুক্তি করা হবে

• লক্ষ্য ‘ওয়াইন টুরিজম’-এর ধাঁচে ‘টি টুরিজম’

• প্রয়োজনে বাগান সংলগ্ন রিসর্টও বেছে নেওয়া হবে

দার্জিলিং টি অ্যাসোসিয়েশের সেক্রেটারি জেনারেল কৌশিক বসু নতুন পরিকল্পনাকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘‘রাজ্যের পরিকল্পনা এখনও জানি না। কিন্তু আগের নীতির শর্তগুলি এমন প্রকল্পের জন্য সহায়ক নয়। অল্প পর্যটকএলে প্রকল্প বাগানের পক্ষে লাভজনক হয় না।’’ একই সঙ্গে তাঁর বক্তব্য, শুধু চা বাগানকে কেন্দ্র করেই পর্যটনের প্রসার সম্ভব নয়। দক্ষিণ ভারতের উদাহরণ টেনে তাঁর দাবি, চা বাগানের বাইরে পর্যটনের আরও পসরা সাজানো জরুরি।

আন্তর্জাতিক পর্যটন সংস্থা এফসিএম ট্র্যাভেলসের কর্তা শ্রবণ গুপ্তেরও একই মত। তিনি জানান, এ রাজ্যে চা-পর্যটনের সম্ভাবনা থাকলেও তার সঙ্গে আরও কিছু বিষয়কে জুড়তে হবে। তা হলে বিদেশি পর্যটক টানা সহজ হবে।

শিল্পের খটকা

• বাগানের বাংলোয় বেশি পর্যটক রাখা সমস্যার

• নীতি বদল না হলে নতুন বাংলো গড়া সম্ভব নয়

• শর্ত সহায়ক না হওয়ায় বড় পর্যটন সংস্থা সহজে এই ব্যবসায় আসতে চায় না

• পর্যটক কম হলে প্রকল্প লাভজনক হয় না

পর্যটন দফতরের আশ্বাস, সব দিক খতিয়ে দেখে এগোনো হবে। এ নিয়ে চা শিল্পমহল-সহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে শীঘ্রই আলোচনায় বসবে তারা।

রাজ্যের নতুন ভাবনা শেষ পর্যন্ত কতটা সফল হয়, সেটাই এখন দেখার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Tea Tourism Tourism Department Foreigners
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE