অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। —ফাইল চিত্র।
লোকসভা ভোটের আগে মোদী সরকারের সাফল্য তুলে ধরতে দেশ জুড়ে ‘বিকশিত ভারত সঙ্কল্প যাত্রা’ কর্মসূচি চলছে। গ্রামে গ্রামে প্রচারের রথ পৌঁছে গিয়ে নয় বছরে বিভিন্ন প্রকল্পের সুফল তুলে ধরা হচ্ছে। আজ দেশের আর্থিক পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্যসভায় আলোচনার জবাবেও মোদী সরকারের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন সেই নয় বছরের সাফল্য তুলে ধরলেন। তবে এড়িয়েও গেলেন কিছু প্রশ্ন।
আর্থিক অসাম্য, বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে বিরোধীদের প্রশ্নের জবাবে আজ অর্থমন্ত্রী যুক্তি দিয়েছেন, বিশ্বের তৃতীয় ও চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি, জার্মানি ও জাপানের জিডিপি যখন সঙ্কুচিত হচ্ছে, তখন জুলাই-সেপ্টেম্বরে ভারতের আর্থিক বৃদ্ধির হার ৭.৬% ছুঁয়েছে। যা গোটা বিশ্বে সর্বোচ্চ।
আর্থিক বৃদ্ধির পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট ছিল, শহরের বাজারের মতো গ্রামের বাজারে কেনাকাটা হচ্ছে না। পরিষেবা ক্ষেত্রের মতো কারখানার উৎপাদন বা কৃষি ক্ষেত্রে বৃদ্ধির হার দেখা যাচ্ছে না বলেও বিরোধীরা অভিযোগ তুলেছিলেন। শিশুদের মধ্যে অপুষ্টির হার বেড়ে যাওয়া, গৃহস্থের সঞ্চয় ও সম্পদ কমে যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তাঁরা। মোদী জমানায় অতীতের মতো প্রতি ১০ বছরে জিডিপি দ্বিগুণ হল কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল।
নির্মলা আজ যুক্তি দিয়েছেন, ২০১৪ সালে ভারত দশম বৃহত্তম অর্থনীতি ছিল। এখন পঞ্চম স্থানে। শুধু একটি ক্ষেত্রে নয়। গোটা অর্থনীতিতেই কর্মকাণ্ড সচল। জিডিপি-তে পরিষেবা ক্ষেত্রের অবদান ৬০% ঠিকই, কিন্তু সব ক্ষেত্রেই বৃদ্ধি হচ্ছে। উৎপাদন ভাতা বা পিএলআই প্রকল্পের ফলে কারখানায় উৎপাদন বৃদ্ধি সর্বোচ্চ ১৩.৯ শতাংশে পৌঁছেছে। টানা ২৯ মাস কারখানার উৎপাদন বাড়ছে। বিশ্ব বাজারে চাহিদা কমলেও বাড়ছে রফতানি। আয়কর, জিএসটিতে উল্লেখযোগ্য রাজস্ব আদায়ের কথাও বলেছেন নির্মলা।
বেকারত্ব নিয়ে প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী যুক্তি দিয়েছেন, ওই হার ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে ১৭.৮% ছিল। এখন তা ১০ শতাংশে নেমে এসেছে। তরুণদের বেকারত্বের হার কমেছে। স্বরোজগারের নানা ব্যবস্থা হয়েছে। বহুমুখী দারিদ্রের সূচকের হিসেবে গত পাঁচ বছরে ১৩.৫ কোটি মানুষ দারিদ্র থেকে বেরিয়ে এসেছেন। তবে অপুষ্টি নিয়ে সরাসরি জবাব না দিয়ে সরকার কী কী ব্যবস্থা নিচ্ছে, তার ব্যাখ্যা দেন নির্মলা। মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে তিরের জবাবে তিনি বলেন, মোদী জমানায় গড়ে মূল্যবৃদ্ধির হার ৫.৫ শতাংশ থেকেছে। ২০২২ সালে তা রিজার্ভ ব্যাঙ্ক নির্ধারিত সহনসীমা (৬%) ছাড়িয়ে ৭.৮ শতাংশে পৌঁছে গিয়েছিল। তবে ইউপিএ জমানায় মূল্যবৃদ্ধির গড় হার ছিল ৮.১%। শেষ পাঁচ বছরে ১০.৪%।
পরে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম কটাক্ষ করে বলেছেন, ‘‘অর্থমন্ত্রী তিনটি প্রশ্নের সরাসরি উত্তর দেননি। সেগুলি হল, মোদী সরকারের ১০ বছরে কি জিডিপি দ্বিগুণ হয়ে ২০০ লক্ষ কোটি টাকায় পৌঁছবে? কেন শিশুদের মধ্যে অপুষ্টির হার এত বেশি? কেন গৃহস্থের আর্থিক সম্পদের হার সব রেকর্ড ভেঙে ৫.১ শতাংশে নেমে গিয়েছে? হয়তো পরে এর জবাব মিলবে!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy