মজুরি ৪০% বৃদ্ধি, সপ্তাহে ৩২ ঘণ্টা কাজ এবং তার জন্য পূর্ণ মজুরির দাবিতে গত ১২ দিন ধরে মিশিগানে ধর্মঘট চালাচ্ছে আমেরিকার গাড়ি সংস্থাগুলির কর্মী সংগঠন ইউনাইটেড অটো ওয়ার্কারস (ইউএডব্লিউ)। মঙ্গলবার ভারতীয় সময় রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ সেখানে গিয়ে ধর্মঘটী কর্মীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন সে দেশের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। দিলেন পাশে থাকার বার্তা। বললেন, ‘‘একটা সময়ে সংস্থাগুলি সমস্যায় ছিল। এখন তারা ভাল ব্যবসা করছে। আপনাদেরও অনেক বেশি পাওয়া উচিত। নিজেদের দাবিতে অনড় থাকুন।’’
আমেরিকার প্রশাসন এবং ট্রেড ইউনিয়নের ইতিহাসে এমন ঘটনা নজিরবিহীন বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, ইতিহাস হাতড়ালে দেখা যায় ফ্র্যাঙ্কলিন রুজ়ভেল্ট, হ্যারি ট্রুম্যানও ট্রেড ইউনিয়নদরদী ছিলেন। কিন্তু প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন তাঁরা কখনও ধর্মঘটীদের আন্দোলনে যোগ দেননি। এ দিন সিক্রেট সার্ভিস এজেন্ট পরিবৃত থাকলেও কর্মীদের সঙ্গে সেলফি তুলেছেন বাইডেন। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, তিনি ৪০% মজুরি বৃদ্ধির পক্ষে কি না। বাইডেন এক কথায় উত্তর দিয়েছেন, ‘‘হ্যাঁ।’’
বিশেষজ্ঞদের ব্যাখ্যা, অর্থনীতি, জোগানশৃঙ্খলের কথা মাথায় রেখেই তার সঙ্গে ভারসাম্য রক্ষা করে কর্মীদের স্বার্থ দেখতে হয় প্রেসিডেন্টদের। আগামী বছর প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। রয়েছে প্রচারের তহবিল সংগ্রহের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সে কারণেই সাধারণত তাঁরা সরাসরি ধর্মঘটকে সমর্থন জানান না। বরং কাজ করেন মধ্যস্থতাকারী হিসেবে। এই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে ইউনিভার্সিটি অব রোড আইল্যান্ডের অধ্যাপক তথা আমেরিকার ট্রেড ইউনিয়ন ইতিহাস বিশেষজ্ঞ এরিক লুমিস বলছেন, ‘‘বাইডেনের পদক্ষেপ নজিরবিহীন। এর আগে কোনও প্রেসিডেন্টকে সরাসরি ধর্মঘটের পাশে দাঁড়াতে দেখা যায়নি।’’
বাইডেনের সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পেরও ডেট্রয়েটে যাওয়ার কথা। তাঁর প্রচার পরামর্শদাতা জেসন মিলারের দাবি, ট্রাম্পের চাপেই কর্মীদের পাশে দাঁড়াতে বাধ্য হয়েছেন বাইডেন। যদিও হোয়াইট হাউস সেই বক্তব্যকে খারিজ করে পাল্টা দাবি করেছে, ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট শন ফেনের অনুরোধে প্রেসিডেন্টের এই মিশিগান যাত্রা।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)