এই নিয়ে টানা তিন বার। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) সামনে ফের গরহাজির বিজয় মাল্য।
শনিবার ইডি-র সামনে আসতে আরও এক বার সময় চেয়েছেন তিনি। আগের বারের মতোই এ দিন এক আবেদনে মাল্য জানিয়েছেন, এ জন্য আগামী মে মাস পর্যন্ত সময় দেওয়া হোক তাঁকে। উল্লেখ্য, মাল্যকে ঋণ দেওয়া আইডিবিআই ব্যাঙ্কের ৯০০ কোটি টাকা কোথায় গিয়েছে, তা নিয়েই তদন্ত চালাচ্ছে ইডি। সেই সূত্রেই কালো টাকা প্রতিরোধ আইনের আওতায় কিংগ্ফিশার-কর্তাকে হাজিরা দিতে সমন পাঠিয়েছিল তারা।
গত বারের মতো এ দিনও তদন্তকারী অফিসারকে মাল্য জানিয়েছেন, টাকা ফেরতের বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টের বিচারাধীন। পাশাপাশি, ব্যাঙ্কের ধার শোধ করতে ইতিমধ্যেই নিজের আইনজীবী এবং সংস্থার সঙ্গে কথা চালাচ্ছেন তিনি। এ সবের জন্য কিছু দিন সময় দরকার। তবে তদন্তের কাছে সব রকম সাহায্য করার জন্য নিজের আইনজীবীকে নির্দেশ দিয়েছেন মাল্য। তাঁর এই নতুন আর্জি নিয়ে অবশ্য এখনও কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছনোর কথা জানায়নি ইডি। শুধু অবস্থা বুঝেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে দাবি তাদের।
এর আগে গত ১৮ মার্চ হাজিরা দেওয়ার জন্য প্রথম বার সমন জারি করে ইডি। সে দিন মাল্যের আর্জির ভিত্তিতে দ্বিতীয় বার সমন জারি করে তাঁকে সময় দেওয়া হয় ২ এপ্রিল পর্যন্ত। সেই দিনেও মাল্য হাজিরা না-দিয়ে মে মাস পর্যন্ত সময় চেয়েছিলেন। কিন্তু তখন সেই আবেদন খারিজ করে ৯ এপ্রিল হাজিরা দিতে তৃতীয় বার সমন পাঠানোর কথা জানায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি।
সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, সাধারণ ভাবে কোনও ব্যক্তি পর পর তিন বার কালো টাকা প্রতিরোধ আইন অনুসারে পাঠানো সমন অগ্রাহ্য করলে, তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে ইডি। শনিবারও মাল্য না-আসায় তদন্তকারী সংস্থার সামনে এখন দু’টি রাস্তা খোলা রয়েছে বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের। প্রথম, হয় তাঁর পাসপোর্ট বাজেয়াপ্তের পথে হাঁটা। এবং/অথবা মাল্যের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা।
প্রসঙ্গত, গত মাসেই আইনজীবীর মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টে ৪ হাজার কোটি টাকার ব্যাঙ্কঋণ ফেরত দেওয়ার প্রস্তাব দেন মাল্য। আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে যা মেটানোর কথা বলা হয়। বিমানের ইঞ্জিন তৈরির একটি সংস্থার বিরুদ্ধে আনা ক্ষতিপূরণের মামলা জিতলে আরও ২ হাজার কোটির বেশি টাকা মিটিয়ে দেওয়ার চেষ্টাও করা হবে বলেও জানান মাল্যের আইনজীবী। সেই প্রস্তাব গত বৃহস্পতিবারই খারিজ করে দিয়েছে ১৭টি ঋণদাতা ব্যাঙ্কের কনসোর্টিয়াম। তার পরই সামান্য রদবদল করে ফের দ্বিতীয় দফায় প্রস্তাব পাঠিয়েছেন মাল্য। তা খতিয়ে দেখছে ঋণদাতারা। মামলার আগামী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে ২৬ এপ্রিল।
পাশাপাশি, আগামী ২১ এপ্রিলের মধ্যে দেশে-বিদেশে কিংগ্ফিশার কর্তা ও তাঁর পরিবারের লোকজনদের সমস্ত সম্পত্তির বিবরণ জমা দিতেও বৃহস্পতিবার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এর সঙ্গেই শীর্ষ আদালতের নির্দেশ ছিল, কবে মাল্য তাদের সামনে হাজির হতে পারবেন, তা জানাতে হবে। তিনি যে ঋণ ফেরতে আগ্রহী, তার প্রমাণ হিসেবে আদালতের কাছে মোটা টাকা আগাম জমা দিতে হবে মাল্যকে। এই অবস্থায় আপাতত ইডি কী সিদ্ধান্ত নেয়, সে দিকেই চোখ সংশ্লিষ্ট মহলের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy