Advertisement
০৩ মে ২০২৪
দাবি ট্রাই কর্তার

কল কাটা কমতে পারে তারযুক্ত নেটের ব্যবহারে

চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে পরিকাঠামো গড়ে না-ওঠা ও রক্ষণাবেক্ষণে ঘাটতি তো রয়েছেই। সেই সঙ্গে সমস্যা হল, তারবিহীন (ওয়্যারলেস) সংযোগ হিসেবে মোবাইলে অত্যধিক নেটের ব্যবহার।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৫ ০২:১৯
Share: Save:

চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে পরিকাঠামো গড়ে না-ওঠা ও রক্ষণাবেক্ষণে ঘাটতি তো রয়েছেই। সেই সঙ্গে সমস্যা হল, তারবিহীন (ওয়্যারলেস) সংযোগ হিসেবে মোবাইলে অত্যধিক নেটের ব্যবহার। যার ফলে তৈরি হওয়া বাড়তি চাপ সারা দেশে মোবাইল পরিষেবার অবনতি ঘটাচ্ছে বলে বৃহস্পতিবার দাবি করলেন টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি অব ইন্ডিয়ার (ট্রাই) চেয়ারম্যান আর এস শর্মা। যে কারণে এ দিন ইনফোকম ও এমসিসি চেম্বারের সভায় যোগ দিতে এসে তাঁর দাওয়াই, পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে শুধু মোবাইল পরিকাঠামোর উন্নতি নয়, জোর দিতে হবে তারযুক্ত (ওয়্যারলাইন) ব্যবস্থার মাধ্যমে নেটের ব্যবহার বাড়ানোতেও।

সম্প্রতি বার বার খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে মাত্রাতিরিক্ত কল কাটার (কল ড্রপ) সমস্যার কথা। এমনকী তার আঁচ পৌঁছেছে সংসদেও। কল কাটার সমস্যা যুঝতে জানুয়ারি থেকেই গ্রাহককে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ জারি করেছে ট্রাই। এ দিন ইনফোকমের সভার পরে এ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে শর্মার দাবি, ক্ষতিপূরণ নিয়ে টেলি সংস্থাগুলির আপত্তির কারণ তাঁরা বুঝলেও গ্রাহক স্বার্থ রক্ষায় এই পদক্ষেপ জরুরি। বিশেষত যেখানে সংস্থাগুলির পরিষেবায় ঘাটতি রয়েছে বলে মনে করেন তাঁরা।

পরে এমসিসি-র সভায় ফের কল কাটার কথা তোলেন বণিকসভাটির প্রেসিডেন্ট মণীশ গোয়েন্কা। সেখানে পরিকাঠামোর অভাবের পাশাপাশি শর্মা নেট ব্যবহারের কারণে মোবাইল পরিষেবায় বিপুল চাপ পড়ার কথাও বলেন। তাঁর বক্তব্য, এমনিতেই পরিকাঠামোর অভাব। এর উপর এ দেশে মোবাইল ফোনে নেট ব্যবহার দ্রুত বাড়ছে। তিনি বলেন, ‘‘আমেরিকায় প্রায় ৫০% মানুষ তারযুক্ত টেলি পরিষেবায় ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। কিন্তু তারযুক্ত ব্রডব্যান্ডের ক্ষেত্রে ভারত বহু পিছিয়ে।’’ তাই পরিকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি কেব্‌ল বা ল্যান্ডলাইনের মাধ্যমে নেট পরিষেবা দেওয়ার উপর জোর দেন তিনি। যেমন, তাঁর মতে, ভারতে প্রায় ১০ কোটি মানুষ কেব্‌ল টিভি পরিষেবার গ্রাহক। ইন্টারনেটের জন্যও সেই পরিকাঠামো ব্যবহার করার পরামর্শ দেন তিনি।

মোবাইল পরিষেবায় নতুন পরিকাঠামো গড়ার পরে পুরনোর সঙ্গে সেটির সমতা আনতে না-পারলে পুরনো-নতুন মিলিয়ে গোটা ব্যবস্থাতেই ত্রুটি ঘটে। পরিকাঠামোর অভাবের জন্য সংস্থাগুলিকে দায়ী করে শর্মার অভিযোগ, এই সমতার অভাবই বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কল ড্রপের কারণ। পাশাপাশি গোদের উপর বিষফোঁড়া পরিকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণে ঘাটতি।

তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে কেন্দ্রও ‘ভারত-নেট’ প্রকল্পে দেশের আড়াই লক্ষ গ্রাম পঞ্চায়েতে অপটিক্যাল ফাইবারের (তারযুক্ত) মাধ্যমে নেট পৌঁছানোর কর্মসূচি নিয়েছে। এ দিন এমসিসির সভায় ক্যালকাটা টেলিফোন্সের সিজিএম অমিত ভট্টাচার্য জানান, তাঁদের এলাকার ১৭১টির মধ্যে ৩৯টি গ্রাম পঞ্চায়েতে সেই পরিকঠামো বসানোর কাজ শেষ। বাকিটাও সময়ে শেষ হবে। বিএসএনএলের পশ্চিমবঙ্গ শাখা সূত্রে খবর, তাদের অঞ্চলে ৪,৫০০ পঞ্চায়েতে সেই পরিকাঠামো বসানো হচ্ছে।

তবে কল-ড্রপের ক্ষেত্রে গ্রাহকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ থেকে যে তাঁরা সরছেন না, তা এ দিন ফের স্পষ্ট করে দিয়েছেন শর্মা। তাঁর দাবি, কী ভাবে তা দেওয়া হবে সেই সূত্র স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে টেলিকম সংস্থাগুলিকে। তবে স্পেকট্রামের অভাব বা টাওয়ার বসানোর যে সমস্যার কথা টেলিকম শিল্প তোলে, তা কিছুটা মেনেছেন তিনি। শর্মার দাবি, এ জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

trai wire net call drop
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE