আরও পড়ুন: ১২৮ কোটির প্রাসাদ, আইপিএল যোগ... রাণা কপূরের জীবন যেন ফিল্ম
রাণা অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেন। মুম্বই আদালতে দাঁড়িয়ে তাঁকে ছলছল চোখে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘আমি ওঁদের সঙ্গে সহযোগিতা করতেই চাই। দিন ও রাত চোখের পাতা এক না-করা সত্ত্বেও সাহায্য করতে আগ্রহী।’’ রাণার আইনজীবীরও দাবি, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ইয়েস ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তোলার সীমা বাঁধায় ক্ষুব্ধ মানুষ। তাই তাঁর মক্কেলকে বলির পাঁঠা করা হচ্ছে। এ দিন রাণা, ডিএইচএফএল এবং ডু-ইট আরবান ভেঞ্চার্সের বিরুদ্ধে এফআইআর করেছে সিবিআই-ও। অভিযোগ, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, দুর্নীতি ও প্রতারণার। ইডি-র অভিযোগ, ইয়েস ব্যাঙ্ক থেকে ধার নেওয়ার বিনিময়ে রাণার পরিবারের সংস্থা ডু ইট-কে ঋণ দেয় ডিএইচএফএল। যার ডিরেক্টর রাণার স্ত্রী বিন্দু কপূর, তাঁর তিন মেয়ে।
কপূরের কারবার
• ২০০৩ সালে শ্যালক অশোক কপূরের সঙ্গে মিলে তৈরি করেন ইয়েস ব্যাঙ্ক। ২৬/১১-য় অশোকের মৃত্যুর পরে তাঁর অংশীদারি যায় স্ত্রী মধু কপূরের হাতে। শুরু হয় পর্ষদের দখল নিয়ে রাণার সঙ্গে আইনি লড়াই
অভিযোগ:
• সিইও থাকার সময়ে অতি ঝুঁকি নিয়ে ঋণ বিলি
• বিপজ্জনক ক্ষেত্রে ৩১,০০০ কোটি টাকার ঋণ দেওয়া, যার এক তৃতীয়াংশ শোধ না-হওয়ার আশঙ্কা
• যে সব সংস্থার রেকর্ড খারাপ, তাদেরই চড়া সুদে ঋণ। বদলে সুবিধা
• অনিয়ম ব্যাঙ্ক পরিচালনায়। অনাদায়ী ঋণ লুকনো
রবিবার দিনভর:
• শুক্র-শনি টানা জেরার পরে ভোর রাতে গ্রেফতার
• ১১ মার্চ পর্যন্ত ইডি হেফাজতে
• বিমানবন্দরে আটকানো হল মেয়ে রোশনীকে
• ৪৪টি দামি ছবি, ডজনেরও বেশি ভুয়ো আর্থিক সংস্থা, ২০০০ কোটির বেআইনি লগ্নির খোঁজ
সমালোচক ও পরিচিতদের দাবি, অত্যন্ত আগ্রাসী ও উচ্চাকাঙ্ক্ষী রাণা। ব্যাঙ্কার হিসেবে দ্রুত উঠে এসেছিলেন প্রচারের আলোয়, যে-আলোর প্রতি বরাবরই টান তাঁর। চেয়েছিলেন দ্রুত বাড়ুক ব্যবসা। প্রতিষ্ঠানের নামের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে তাই বাছবিচার না-করেই কর্পোরেট ঋণের সব আবেদনে ‘হ্যাঁ’ বলার পক্ষপাতী ছিলেন। সেই পথে হেঁটে এক সময় সত্যিই চটজলদি আয় ফুলেফেঁপে উঠেছিল ইয়েস ব্যাঙ্কের। মোটা হয় ঋণের খাতা। বেনোজল ঢুকতে শুরু করে তখনই।
সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, ক্ষমতায় থাকাকালীন নিজের ধার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে কাউকে প্রশ্ন তোলার অধিকারই দেননি রাণা। সেটা না-করলে এত অনুৎপাদক সম্পদের ভার বইতে হত না ইয়েস ব্যাঙ্ককে। যে-সম্পদ অনেক কম করে দেখানোর ঘটনা সামনে আসার পরে ধীরে ধীরে প্রকাশ পায় ইয়েস ব্যাঙ্কের হাঁড়ির হাল। জোগাড় করা যায়নি মূলধনও। জল বিপদসীমা ছাড়ানোয় আচমকাই বৃহস্পতিবার ইয়েস ব্যাঙ্কের বোর্ড ভেঙে দেয় আরবিআই।