Advertisement
E-Paper

ঋণনীতিতে ব্যাঙ্কের হাতে বাড়তি নগদের ব্যবস্থা করলেন রাজন

আচমকাই গত ১৫ জানুয়ারি সুদের হার ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমিয়ে দিয়েছিলেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর রঘুরাম রাজন। রেপো রেট কমিয়ে তিনি বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কের খরচ কমিয়েছিলেন। ওই হারেই আরবিআই ব্যাঙ্কগুলিকে ধার দেয়। তার মাত্র ১৯ দিনের মাথায় ফের সরাসরি সুদ না-কমালেও ব্যাঙ্কগুলির কাছে তা কমানোর রাস্তা চওড়া করে দিলেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:৫৭

আচমকাই গত ১৫ জানুয়ারি সুদের হার ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমিয়ে দিয়েছিলেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর রঘুরাম রাজন। রেপো রেট কমিয়ে তিনি বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কের খরচ কমিয়েছিলেন। ওই হারেই আরবিআই ব্যাঙ্কগুলিকে ধার দেয়। তার মাত্র ১৯ দিনের মাথায় ফের সরাসরি সুদ না-কমালেও ব্যাঙ্কগুলির কাছে তা কমানোর রাস্তা চওড়া করে দিলেন। তবে সুদ সরাসরি না-কমানোর তাত্‌ক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় এ দিন শেয়ার সূচকের পতন হয়েছে। অখুশি শিল্পমহলও।

মঙ্গলবার ঋণনীতির পর্যালোচনায় বসে স্ট্যাটুইটরি লিকুইডিটি রেশিও (এস এল আর) ৫০ বেসিস পয়েন্ট কমিয়েছেন রাজন। এর ফলে দেশের বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলির হাতে বাড়তি ৪৫ হাজার কোটি টাকার নগদ আসবে। প্রসঙ্গত, গ্রাহকের কাছ থেকে যে-আমানত সংগ্রহ করা হয়, তার একটা অংশ সরকারি ঋণপত্রে বাধ্যতামূলক ভাবে লগ্নি করতে হয় ব্যাঙ্ককে। সেটাই এসএলআর। এত দিন আমানতের ২২% ওই খাতে রাখতে হত। এ বার থেকে তা হবে ২১.৫০%। এর ফলেই ব্যাঙ্কের হাতে নগদ বাড়বে, যা প্রশস্ত করবে সুদের হার কমানোর রাস্তা। তবে রেপো রেট ৭.৭৫ শতাংশেই অপরিবর্তিত রেখেছেন রাজন।

তাঁর আশা, এ বার অন্তত ব্যাঙ্কগুলি সুদ কমানোর রাস্তায় হাঁটবে। জানুয়ারিতে রেপো রেট কমার পরেও ব্যাঙ্কগুলি সে ভাবে ওই পথে না-হাঁটায় এ দিন অসন্তোষ জানান রাজন।

এ বারের ঋণনীতিতে ডলারের দাম দ্রুত ওঠা-নামার ফলে শিল্প ও বাণিজ্যিক সংস্থার সমস্যার সুরাহা করতেও উদ্যোগী হয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। এ ব্যাপারে দুটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা: প্রথমত, ডলার কেনা-বেচার পরে বিদেশি মুদ্রা লেনদেনকারী সংস্থা নিট হিসাবে সর্বোচ্চ ১.৫০ কোটি ডলার হাতে রাখতে পারবে। আগে ১ কোটি ডলার পর্যন্ত রাখা যেত। দ্বিতীয়ত, আগের বছর লগ্নিকারী সংস্থা যত টাকার লেনদেন করেছে, পরের বছর সর্বোচ্চ ক্ষেত্রে তার ৫০% পর্যন্ত লেনদেন করতে পারত। এখন ১০০% পর্যন্ত করা যাবে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এতে বিশেষ করে যে-সব সংস্থা বিদেশে লেনদেন করে, তাদের সুবিধা হবে। বস্তুত, ডলার দ্রুত ওঠা-নামা করলে সংস্থাগুলির পক্ষে পণ্যের মূল্য নির্ধারণে সমস্যা হয়। আগাম লেনদেনের বাজারে ডলার কিনে এবং বিক্রি করে, যাকে সাধারণত ‘হেজিং’ বলা হয়, তা মোকাবিলার চেষ্টা করে তারা।

যেমন, কোনও সংস্থা হয়ত ডলারের বর্তমান মূল্যের ভিত্তিতে তার পণ্যের দাম ঠিক করেছে। এ বার যে-পরিমাণ ডলার পণ্যের মূল্য হিসাবে তার পাওয়ার কথা, সেই পরিমাণ বা তার একটা অংশ বর্তমান দামের সমান অথবা বেশি দরে সংস্থা আগাম লেনদেনের বাজারে বিক্রি করে রাখে। পরে হয়ত ডলারের দাম কমে গেল। সে ক্ষেত্রে পণ্যের মূল্য বাবদ পাওয়া ডলার বিক্রি করে তারা আগের থেকে কম টাকা পাবে ঠিকই। কিন্তু আগাম লেনদেনে বিক্রি করে রাখা ওই ডলার বেচে তারা যে-মুনাফা করবে, তাতে ওই লোকসান পুষিয়ে নিতে পারবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, নতুন ব্যবস্থা চালু হলে হেজিং করার সুযোগ বাড়বে।

এ দিকে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সুদের হার সরাসরি না-কমানোয় হতাশ বাজারে এ দিন সেনসেক্স পড়েছে ১২২.১৩ পয়েন্ট। বাজার বন্ধের সময়ে তা ২৯০০০.১৪ অঙ্কে থিতু হয়। পাশাপাশি, শিল্পমহলের দাবি, ২০১৫-তে অন্তত আরও ৭৫ বেসিস পয়েন্ট সুদ কমানো জরুরি।

অবশ্য সুযোগ তৈরি হলেই সুদ কমানোর পদক্ষেপ করা হবে বলে জানিয়েছেন রাজন। এমনকী প্রয়োজনে গত ১৫ জানুয়ারির মতো ঋণনীতির পর্যালোচনার দিনের জন্য অপেক্ষা না-করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। সুদ আরও কমানোর আগে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক যেটা দেখে নিতে চায় তা হল, অর্থমন্ত্রী তাঁর আসন্ন বাজেটে রাজকোষ ঘাটতি এবং মূল্যবৃদ্ধি কমানোর ক্ষেত্রে কতটা সফল হন। চলতি মাসের শেষে পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ করার সময়েই যার আভাস পাওয়া যাবে বলে অর্থনীতি- বিশেষজ্ঞদের ধারণা। ঋণনীতির পরবর্তী পর্যালোচনা আগামী ৭ এপ্রিল।

interest rate raghuram rajan statuatory liquidity ratio slashed
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy