Advertisement
২০ মে ২০২৪

ঘুরে দাঁড়াচ্ছে মাঝারি শেয়ার, ইঙ্গিত সমীক্ষায়

দেশ জুড়ে লোকসভা ভোটের দামামার মধ্যেই টানা বেড়ে চলেছে শেয়ার বাজার। স্বাভাবিক ভাবেই অব্যাহত সেনসেক্স-নিফটির উত্থান। বৃহস্পতিবার এক ধাক্কায় সেনসেক্স বেড়েছে ১১৯.০৭ অঙ্ক। বাজার বন্ধের সময়ে ফের নতুন রেকর্ড গড়ে সূচক শেষ হয় ২২,২১৪.৩৭ অঙ্কে। এ দিন টাকা অবশ্য ১৭ পয়সা পড়ায় প্রতি ডলারের দর দাঁড়িয়েছে ৬০.৩১ টাকা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৪ ০১:০৩
Share: Save:

দেশ জুড়ে লোকসভা ভোটের দামামার মধ্যেই টানা বেড়ে চলেছে শেয়ার বাজার। স্বাভাবিক ভাবেই অব্যাহত সেনসেক্স-নিফটির উত্থান। বৃহস্পতিবার এক ধাক্কায় সেনসেক্স বেড়েছে ১১৯.০৭ অঙ্ক। বাজার বন্ধের সময়ে ফের নতুন রেকর্ড গড়ে সূচক শেষ হয় ২২,২১৪.৩৭ অঙ্কে। এ দিন টাকা অবশ্য ১৭ পয়সা পড়ায় প্রতি ডলারের দর দাঁড়িয়েছে ৬০.৩১ টাকা।

তবে সাধারণ ভাবে শেয়ার বাজারের এই দৌড়ে অবশ্য শুধু ব্লু-চিপ সংস্থাই সামিল নয়, রয়েছে মাঝারি মাপের মূলধনের সংস্থাগুলির শেয়ার। এগুলির চাহিদা বেড়েই চলেছে। বৃহস্পতিবারও তার ব্যতিক্রম ছিল না। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের খবর, গত অগস্ট থেকে গড়ে ওই ধরনের ‘মিড-ক্যাপ’ সংস্থার শেয়ার দর ৩০% বেড়েছে। যা হারিয়ে দিয়েছে সেনসেক্সের উত্থানের হারকেও। কারণ ওই সময়ে সেনসেক্স বেড়েছে ১৯%। ডয়েশ ব্যাঙ্ক সমীক্ষার ভিত্তিতে জানাচ্ছে, মিড-ক্যাপ শেয়ারের দর এ ভাবে বাড়তে থাকলে তিন বছর যাবৎ যে-ভাবে বড় সংস্থার কাছে তারা ঝিমিয়ে পড়েছিল, তা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে।

এ দিকে, এ নিয়ে টানা চার দিন ২২ হাজারের ঘরে নতুন উচ্চতায় শেষ হল সেনসেক্স। এ দিন এক সময়ে সূচক উঠে যায় ২২,৩০৭.৭৪ অঙ্কে। পরে তা কিছুটা নেমে আসে। স্টেট ব্যাঙ্ক শেয়ারের দরই বেড়েছে সবচেয়ে বেশি, ৪.০৪%। এ দিনই ছিল আগাম লেনদেনের সেট্লমেন্টের দিন। যে-সব লগ্নিকারী হাতে শেয়ার না-থাকা সত্ত্বেও তা বিক্রি করে রেখেছেন, তাঁরা এ দিন শেয়ার কিনতে বাজারে নেমে পড়েন। ফলে চাহিদা বেড়ে যায়। তেজী হয় বাজার।

ভারতের বাজারে টানা বিনিয়োগ করে চলেছে বিদেশি লগ্নি সংস্থাগুলি। এ দিন সূচকের উত্থানে অন্যতম বড় অবদান রয়েছে এদের বিনিয়োগেরও। সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের খবর, গত কালই ওই সব সংস্থা ভারতের বাজারে ১০০৪.৫২ কোটি টাকা ঢেলেছে।

তবে মাঝারি মাপের শেয়ারের ধারাবাহিক উত্থানের পিছনে রয়েছে ভারতের অর্থনীতি ঘিরে রুপোলি রেখা। অন্তত সেটাই মত বিশেষজ্ঞদের। যেমন, ডয়েশ ব্যাঙ্কের সমীক্ষা জানাচ্ছে, এ ধরনের শেয়ার তখনই উপর দিকে ওঠে, যখন আর্থিক বৃদ্ধি জড়তা কাটিয়ে উঠে দাঁড়ানোর প্রস্তুতি নেয়। চতুর্থ ত্রৈমাসিকের বৃদ্ধির হার ঠিক কত দাঁড়াল, তা এখনও প্রকাশিত না-হলেও তা যে নতুন মোড় নেওয়ার অপেক্ষায়, এটাই তাদের মত। সমীক্ষকরা জানিয়েছেন, তাঁদের ধারণা, বৃদ্ধির হার আর কমবে না, স্থিতি ফিরেছে টাকার দামেও।

শেয়ার বাজারে এখন যে-বিষয়টি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে তা হল, ১ এপ্রিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক কী সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে? ওই দিন দেশের শীর্ষ ব্যাঙ্ক ফের ঋণনীতির পর্যালোচনায় বসছে। বাজার মহলে অনেকেরই আশা, দেশের আর্থিক পরিস্থিতি যেখানে দাঁড়িয়ে আছে, তাতে সুদের হার কমাতে পারে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। কারণ, মূল্যবৃদ্ধির হার কমেছে। কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে চলতি খাতে বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেন ঘাটতি। পাশাপাশি আগের তুলনায় বেড়েছে টাকার দাম। এর ভিত্তিতে সুদের হার কমাতে উৎসাহিত হতে পারে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক।

তবে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সুদের হার না-কমালেও অন্তত তা বাড়াবে না বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের অধিকাংশ। তাঁদের এই ধারণার কারণ, মূল্যবৃদ্ধির হার কিছুটা কমলেও তা যে-স্থায়ী হবে, তার নিশ্চিত ইঙ্গিত এখনও মেলেনি। তাই এই অবস্থায় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর রঘুরাম রাজন কোনও ঝুঁকি নিতে চাইবেন না বলেই বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। সে ক্ষেত্রে সুদের হার অপরিবর্তিত থাকার সম্ভাবনাই বেশি বলে তাঁদের ধারণা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

share
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE