Advertisement
১৯ মে ২০২৪
বৃষ্টি উধাও, ঝুঁকি এড়াতেই ভাবনা

চা-কে শস্য বিমার আওতায় আনতে উদ্যোগী টি বোর্ড

গত কয়েক বছরের মতো এ বারও উত্তরবঙ্গ, অসম ও সংলগ্ন এলাকায় জানুয়ারি থেকেই উধাও বৃষ্টি। ফলে মার খেয়েছে চা উৎপাদন। যার জেরে রফতানি বাজারের বড় অংশ হারিয়েছে চা শিল্প। সমস্যায় পড়েছে ক্ষুদ্র চা বাগানগুলিও। আর এ ভাবে বার বার বাজার হারানোর ঝুঁকি এড়াতেই চা পাতাকে শস্য বিমার আওতায় আনার জন্য ফের নতুন করে উদ্যোগী হয়েছে টি বোর্ড।

দেবপ্রিয় সেনগুপ্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ মে ২০১৪ ০১:২৩
Share: Save:

গত কয়েক বছরের মতো এ বারও উত্তরবঙ্গ, অসম ও সংলগ্ন এলাকায় জানুয়ারি থেকেই উধাও বৃষ্টি। ফলে মার খেয়েছে চা উৎপাদন। যার জেরে রফতানি বাজারের বড় অংশ হারিয়েছে চা শিল্প। সমস্যায় পড়েছে ক্ষুদ্র চা বাগানগুলিও। আর এ ভাবে বার বার বাজার হারানোর ঝুঁকি এড়াতেই চা পাতাকে শস্য বিমার আওতায় আনার জন্য ফের নতুন করে উদ্যোগী হয়েছে টি বোর্ড। কী ভাবে বিমা চালু করা যায়, তা খতিয়ে দেখতে বাণিজ্য মন্ত্রকের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছে তারা। বোর্ড কর্তাদের আশা, কেন্দ্রে নতুন সরকার আসার পর বিষয়টি এগোবে।

ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশনের (আইটিএ) হিসেবে, জানুয়ারি থেকে এপ্রিল বহু জায়গাতেই বৃষ্টি প্রয়োজনের চেয়ে ৫০% কম হয়েছে। এই সময় দামি ‘ফার্স্ট ফ্লাশ’ ও ‘সেকেন্ড ফ্লাশ’ চা তৈরি হয়। উৎপাদন কমায় সেই বাজার হারিয়েছে চা শিল্প। বিশেষত দার্জিলিঙের বাগানগুলি। কারণ রফতানি বাজারে তাদের এই দুই চায়ের কদরই সবচেয়ে বেশি। সঙ্গিন ছোট বাগানের অবস্থাও।

শস্য বিমার জন্য ২০০২-এ কেন্দ্র একটি পৃথক বিমা সংস্থা (এগ্রিকালচারাল ইনশিওরেন্স কোম্পানি অব ইন্ডিয়া বা এআইসিআই) গড়ে। তাতে জেনারেল ইনশিওরেন্স-এর ৩৫%, নাবার্ডের ৩০% ও চারটি সরকারি সাধারণ বিমা সংস্থার ৮.৭৫% করে শেয়ার আছে। চায়ের জন্য এই এআইসিআই-এর আওতাতেই এর আগে বিমা চালুর চেষ্টা হয়েছিল। এ নিয়ে বছর দু’তিন আগে চা শিল্পমহলের সঙ্গে ওই সংস্থাটির কথা শুরু হলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি।

এ বারের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে আইটিএ থেকে শুরু করে কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান স্মল টি গ্রোয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন (সিসটা), সকলেই। সিসটা-র বিজয়গোপাল চক্রবর্তীর দাবি, বিমা না-থাকায় প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে সমস্যায় পড়েন ক্ষুদ্র চা চাষিরা। আইটিএ-র সেক্রেটারি জেনারেল মনোজিৎ দাশগুপ্তরও মত, চা চাষে ঝুঁকি থাকায় তা সুরক্ষিত করা জরুরি। তবে ঝুঁকি ও সুরক্ষার খরচের মধ্যে সামঞ্জস্য না-থাকলে বিমা প্রকল্প আকর্ষণীয় হবে না বলে মত তাঁদের।

বস্তুত, আগের বার এআইসিআই-এর সঙ্গে আলোচনায় বিমার খরচ বেশি হওয়াতেই তা বাস্তবসম্মত নয় বলে জানিয়েছিল শিল্পমহল। শেষে ধামাচাপা পড়ে প্রস্তাবটি। টি বোর্ড সূত্রে খবর, এর আগে চা চাষের ঝুঁকি কমাতে ‘প্রাইস স্টেবিলিটি ফান্ড ট্রাস্ট’ ও ‘অ্যাক্সিডেন্ট বেনিফিট স্কিম’ নামে দু’টি প্রকল্প আনে সরকার। কিন্তু কোনওটিই শিল্পমহলের কাছে তেমন আকর্ষণীয় হয়নি।

এ বারের আলোচনায় কয়েকটি বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে চা শিল্প। যেমন আইটিএ-র বক্তব্য, বহু বাগানের গাছই কমপক্ষে ৫০ বছরের পুরনো। ফলে শুধুমাত্র ক’বছরের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ভিত্তিতে হিসাব না করে, অন্তত ৫০ বছরের তথ্য ভাণ্ডার দেখা জরুরি। এ ছাড়া, অতিবৃষ্টি বা অনাবৃষ্টি ছাড়াও নানা কারণে ক্ষতি হয় চা গাছের। ঝুঁকির হিসেব কষতে তা-ও মাথায় রাখতে হবে। তার পর সব মিলিয়ে বিমার খরচের হিসাব কষা যেতে পারে। আবার বিভিন্ন বাগান এক একটি ঝুঁকির জন্য আলাদা করেও বিমা করাতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

tea board debopriyo sengupta
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE