Advertisement
১৯ মে ২০২৪

চলতি খাতে ঘাটতি নেমে ০.২%

শপথের দিনেই স্বস্তি। দেশে ডলার আসা-যাওয়ার মধ্যে বাড়তে থাকা যে ফাঁক আগের সরকারের প্রায় ঘুম কেড়েছিল, নতুন মন্ত্রীদের শপথ গ্রহণের দিনে জানা গেল যে, তা নেমে এসেছে ০.২ শতাংশে। সোমবার রিজার্ভ ব্যাঙ্ক প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত অর্থবর্ষের শেষ (জানুয়ারি-মার্চ) ত্রৈমাসিকে চলতি খাতে বিদেশি মুদ্রা লেনদেনের ঘাটতি (কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ডেফিসিট) নেমে এসেছে দেশের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের ০.২ শতাংশে।

সংবাদ সংস্থা
মুম্বই শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৪ ০২:৫৭
Share: Save:

শপথের দিনেই স্বস্তি। দেশে ডলার আসা-যাওয়ার মধ্যে বাড়তে থাকা যে ফাঁক আগের সরকারের প্রায় ঘুম কেড়েছিল, নতুন মন্ত্রীদের শপথ গ্রহণের দিনে জানা গেল যে, তা নেমে এসেছে ০.২ শতাংশে।

সোমবার রিজার্ভ ব্যাঙ্ক প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত অর্থবর্ষের শেষ (জানুয়ারি-মার্চ) ত্রৈমাসিকে চলতি খাতে বিদেশি মুদ্রা লেনদেনের ঘাটতি (কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ডেফিসিট) নেমে এসেছে দেশের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের ০.২ শতাংশে। দাঁড়িয়েছে ১২০ কোটি ডলার। তার আগের অর্থবর্ষের (২০১২-’১৩) এই একই সময়ে যা ছিল ১,৮১০ কোটি ডলার। অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের ৩.৬%।

এই নিয়ে টানা তিনটি ত্রৈমাসিকে কমলো চলতি খাতে ঘাটতি। যার ফলে সামগ্রিক ভাবেও গত অর্থবর্ষে তা নেমে এসেছে ৩,২৪০ কোটি ডলারে। যা অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের ১.৭%। ২০১২-’১৩ সালের ৮,৭৮০ কোটি ডলারের (৪.৭%) তুলনায় বেশ কম।

বিশেষজ্ঞদের মতে, চলতি খাতে ঘাটতি কমার অন্যতম কারণ গত আর্থিক বছরে বাণিজ্য ঘাটতি হ্রাস। গত আর্থিক বছরে মূলত সোনা আমদানি কমার হাত ধরে বাণিজ্য ঘাটতি কমেছে অনেকখানি। ২০১৩-’১৪ সালে তা হয়েছে ১৪,৭৬০ কোটি ডলার। তার আগের বছরে সেটি ছিল ১৯,৫৭০ কোটি ডলারে। চলতি খাতে ঘাটতির কমার ক্ষেত্রে এর প্রভাব পড়েছে অনেকটাই।

দেশে ডলার আসা-যাওয়ার ফাঁক যে আগের সরকারের মাথাব্যথার বড় কারণ হয়েছিল, নিজের শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেটে তা স্পষ্ট করেছিলেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম। সেই আশঙ্কাকে সত্যি করে এক সময় রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছে যায় চলতি খাতে ঘাটতি। ছুঁয়ে ফেলে অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের ৬.৭%। এর মাসুল গুনে টাকার সাপেক্ষে রেকর্ড উচ্চতায় উঠে গিয়েছিল ডলারও। গত অগস্টে এক ডলারের দাম পৌঁছেছিল ৬৮.৮৫ টাকায়।

এর পরই দেশে ডলার আসা বাড়ানো এবং দেশ থেকে ডলার বেরনো কমাতে একাধিক পদক্ষেপ করে কেন্দ্র। যেমন, ডলার বেরিয়ে যাওয়া কমাতে আমদানি শুল্ক বৃদ্ধির পাশাপাশি বিধিনিষেধ চাপানো হয় বিদেশ থেকে সোনা-রুপো আনায়। আবার ডলার আসা বাড়াতে চেষ্টা হয় সংস্কারের গতি বৃদ্ধির। মসৃণ করা হয় ঋণপত্রের বাজারে বিদেশি আর্থিক সংস্থার ডলার আসার পথও।

বিশেষজ্ঞদের মতে, মনমোহনের জমানার শেষ দিকে সংস্কার তেমন ফলপ্রসূ হয়নি ঠিকই। কিন্তু সোনা আমদানিতে রাশ টানার সুফল অবশ্যই মিলেছে। কমেছে চলতি খাতে ঘাটতি। তাঁদের মতে, আজকের পরিসংখ্যানের পর স্পষ্ট যে, আগের সরকারের দাওয়াইয়ে অর্থনীতির হাল কিছুটা হলেও শুধরেছে। তাই অন্তত কিছু বিষয়ে সামান্য স্বস্তিদায়ক অবস্থা থেকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ইনিংস শুরুর সুযোগ পাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদী। চলতি খাতে ঘাটতি কমেছে। ডলার নেমে এসেছে ষাটের নীচে। সেই সঙ্গে কিছুটা মুখ তুলতে শুরু করেছে মার্কিন মুলুক-সহ উন্নত দুনিয়ার অর্থনীতি। এখন এই সমস্ত সুবিধা কাজে লাগিয়ে মোদী-সরকার সত্যিই অর্থনীতির ‘সুদিন’ আনতে পারবে কিনা, আপাতত সে দিকেই চোখ সকলের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

current account deficit modi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE