Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

বৌবাজারে বিপর্যয়ের জেরে দেরি হবে প্রকল্পে, জানাল মেট্রো

রাজ্য সরকার জানায়, কাজ চলার সময় বা প্রকল্প শেষ হওয়ার পরে বিপর্যয়ের আশঙ্কা যাতে না-থাকে, সেই জন্য বিশেষজ্ঞদের সমীক্ষা করাতে হবে।

এ ভাবেই ফাটল ধরছে বাড়িগুলোতে। নিজস্ব চিত্র।

এ ভাবেই ফাটল ধরছে বাড়িগুলোতে। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সং‌বাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৩:০০
Share: Save:

বৌবাজারে বিপর্যয়ের দরুন প্রকল্পটি শেষ হতে দেরি হবে বলে কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশন লিমিটেডের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকে এ কথা জানান ওই সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর মানস সরকার। কতটা দেরি হবে, নির্দিষ্ট ভাবে তা বলতে না-পারলেও অন্তত এক বছর সময় লাগতে পারে বলে জানান ওই মেট্রো-কর্তা।

রাজ্য সরকার জানায়, কাজ চলার সময় বা প্রকল্প শেষ হওয়ার পরে বিপর্যয়ের আশঙ্কা যাতে না-থাকে, সেই জন্য বিশেষজ্ঞদের সমীক্ষা করাতে হবে। তাই আপাতত কাজ বন্ধ রাখার কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে একটি কোর গ্রুপ তৈরি করেছে রাজ্য। তাতে মেট্রোর প্রতিনিধিও থাকছেন। বৈঠকের পরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘নিরাপত্তা নিশ্চিত করেই প্রকল্প শেষ করতে হবে। রাজ্য সব রকম সহযোগিতা করবে। তদন্তের বিষয়টি মেট্রো-কর্তৃপক্ষ দেখবেন।’’

কাজে কেন দেরি হবে, এ দিন তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে মানসবাবু জানান, ঘিঞ্জি এলাকা বলে ওখানে এমনিতেই অত্যন্ত সাবধানে কাজ করতে হচ্ছিল। সুড়ঙ্গ তৈরির যে-মেশিন মাটির তলায় আটকে রয়েছে, সেটি বার করে আনা কঠিন। মানসবাবু বলেন, ‘‘দেরি হয়েছে ঠিকই। তবে আরও কত দেরি হবে, বিশেষজ্ঞেরা দেখার আগে সেটা বলা সম্ভব নয়।’’ তিনি জানান, এই বিপর্যয়ের জন্য নির্মল চন্দ্র স্ট্রিটে টানেল বোরিং মেশিনের কাজও বন্ধ রাখা হয়েছে। অন্তত এক বছর দেরি হবে। এমনিতেই ২০২১ সালে প্রকল্পটি শেষ করার কথা রয়েছে। আগামী ডিসেম্বরে এই সুড়ঙ্গ তৈরির কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। ওই ঘিঞ্জি এলাকায় মাটির তলা দিয়ে সুড়ঙ্গ তৈরির আগে উপযুক্ত প্রস্তুতি চালানো হয়েছিল কি? মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পরে মানসবাবু জানান, সুড়ঙ্গ তৈরির কাজ শুরুর ছ’মাস আগে ১০০ মিটার অন্তর মাটি পরীক্ষা করা হয়েছে। গভীর পর্যন্ত বিভিন্ন স্তরের মাটির কী চরিত্র, খতিয়ে দেখা হয়েছে সেটা। মাটির কোনও স্তর দিয়ে কোনও ভাবে যাতে জল ঢুকতে না-পারে, তা নিশ্চিত করতে প্রযুক্তিগত পদক্ষেপ করা হয়েছিল। সেই সব কিছুর পরে সুড়ঙ্গের নকশা তৈরি করা হয়। মাটির অনেক নীচে সব থেকে উপযুক্ত স্তরে নকশা অনুযায়ী কাজ শুরু করা হয়। সেই স্তরেই ২৫০ মিটার পথে সুড়ঙ্গ তৈরি করে বোরিং মেশিন। আর প্রায় ৭০০ মিটার অতিক্রম করতে পারলেই শিয়ালদহ পর্যন্ত পৌঁছে যাওয়া যেত।

‘‘এই বিপর্যয়ের কথা ভাবা যায়নি। বিশ্বে কোথাও এমন হয়নি। হংকং, সিঙ্গাপুর থেকে বিশেষজ্ঞদের আনা হয়েছে। ঘিঞ্জি এলাকা হওয়ায় কিছুই করা যাচ্ছে না। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় পরিস্থিতির কিছুটা পরিবর্তন হতে পারে,’’ বলেন মানসবাবু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE