Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

আসেনি অ্যাম্বুল্যান্স, বাড়িতেই মৃত্যু কোভিড রোগীর

জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে গত ২২ জুলাই ওই যুবককে ভর্তি করা হয়েছিল কোভিড হাসপাতাল বলে স্বীকৃত সত্যবালা আইডি-তে। পরের দিন তাঁর করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০২০ ০২:৫৮
Share: Save:

কোভিড পজ়িটিভ হলেও রোগীকে মাত্র তিন দিন রেখে বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছিল সরকারি হাসপাতাল। হোম কোয়রান্টিনে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু রবিবার রাতে হঠাৎই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই রোগী। পরিবার ও প্রতিবেশিরা এর পরে অ্যাম্বুল্যান্সের জন্য সরকারি হেল্পলাইন, পুলিশ, হাসপাতাল সর্বত্র ফোন করেন। কিন্তু অভিযোগ, সোমবার সকাল পর্যন্ত কোনও অ্যাম্বুল্যান্সই আসেনি। কিন্তু সারা রাত শ্বাসকষ্টে ভুগে শেষে বাড়িতে মারা যান ৩২ বছরের ওই যুবক।

সোমবার, লিলুয়ার গুহ রোডের এই খবর জানাজানি হওয়ার পরেই উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। লিলুয়ার রবীন্দ্র সরণি তেলকল মোড়ে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়েরা। পরে হাওড়া পুরসভা শববাহী গাড়ি পাঠিয়ে দেহ সৎকারের ব্যবস্থা করে। যদিও অ্যাম্বুল্যান্স চেয়ে ফোন আসার কথা পুরোপুরি অস্বীকার করেছে জেলা প্রশাসন।

জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে গত ২২ জুলাই ওই যুবককে ভর্তি করা হয়েছিল কোভিড হাসপাতাল বলে স্বীকৃত সত্যবালা আইডি-তে। পরের দিন তাঁর করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। কিন্তু দিন তিনেক হাসপাতালে থাকার পরে ২৫ জুলাই তাঁকে বাড়িতেই কোয়রান্টিনে থাকার পরামর্শ দিয়ে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। সেইমতো নিজেদের টালির চালের বাড়িতেই একটি ঘরে আলাদা থাকতে শুরু করেন পেশায় ভ্যানচালক ওই যুবক। কিন্তু বাড়ির একটিমাত্র শৌচালয়ই ব্যবহার করতেন তিনি ও পরিবারের বাকি সদস্যেরা।

স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই যুবকের বাবাও শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন সত্যবালা আইডি হাসপাতালে। সেখান থেকে গোলাবাড়ির বেসরকারি হাসপাতালে তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। কিছুটা সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে তিনিও বাড়িতেই ছিলেন।

এর মধ্যে রবিবার রাতে ওই যুবকের শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। এক স্থানীয় বাসিন্দার অভিযোগ, ‘‘রাতেই আমরা অ্যাম্বুল্যান্সে করে ওই যুবককে হাসপাতালে পাঠানোর চেষ্টা করেছিলাম। সরকারি হেল্পলাইন, পুরসভা, হাসপাতালে ফোন করে অ্যাম্বুল্যান্স পাঠাতে বলি, কিন্তু কেউ আসেনি। বাড়িতে থেকে প্রায় বিনা চিকিৎসায় মারা গেল ছেলেটা।’’

এ দিকে মৃত্যুর পরেও দীর্ঘক্ষণ বাড়িতেই ওই যুবকের দেহ পড়ে থাকায় উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। ক্ষুব্ধ স্থানীয়েরা রাস্তা অবরোধ করেন। পরে খবর পেয়ে হাওড়া পুরসভা থেকে শববাহী গাড়ি এসে দেহ নিয়ে যায়।

তবে অ্যাম্বুল্যান্স না-আসার অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক বলেন, ‘‘শববাহী গাড়ি চেয়ে পুরসভায় ফোন আসতেই দ্রুত পাঠানো হয়েছে। কিন্তু রবিবার রাত থেকে সোমবার ভোর পর্যন্ত অ্যাম্বুল্যান্স চেয়ে সরকারি হেল্পলাইন, জেলা হেল্পলাইন বা পুরসভায় কোনও ফোন আসেনি।’’ হাওড়া পুরসভার এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘পুরসভার অ্যাম্বুল্যান্স চেয়ে ফোন এসেছিল কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ওই রোগীর পরিজনেরা ঠিক কোথায় ফোন করেছিলেন, তা-ও খোঁজ নিচ্ছি।’’

(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।

• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Covid-19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE