Advertisement
০৪ মে ২০২৪

তাড়াতাড়ি ঝাঁপ ফেলল সোনার দোকান, বইপাড়াও

পাঁচশো-হাজারের ধাক্কা সোনার বাজার, বই বাজারেও। স্বভাবিক ছন্দ হারিয়ে কার্যত সুনসান বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিট, কলেজ স্ট্রিট। বহু দোকানই বন্ধ। কেউ কেউ ঝাঁপ খুললেও দিনভর প্রায় খালি হাতেই বসে থাকতে হয়েছে বেশির ভাগ ব্যবসায়ীকে।

সুনসান গয়নাপট্টি। শুক্রবার, বৌবাজারে। — দেশকল্যাণ চৌধুরী

সুনসান গয়নাপট্টি। শুক্রবার, বৌবাজারে। — দেশকল্যাণ চৌধুরী

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০১৬ ০২:২৬
Share: Save:

পাঁচশো-হাজারের ধাক্কা সোনার বাজার, বই বাজারেও। স্বভাবিক ছন্দ হারিয়ে কার্যত সুনসান বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিট, কলেজ স্ট্রিট। বহু দোকানই বন্ধ। কেউ কেউ ঝাঁপ খুললেও দিনভর প্রায় খালি হাতেই বসে থাকতে হয়েছে বেশির ভাগ ব্যবসায়ীকে।

শুক্রবার বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিটে গিয়ে দেখা গেল, পরপর একাধিক দোকানের ঝাঁপ ফেলা। মাঝেমাঝে কোথাও দু’-একটা দোকান খুলেছে। সেখানেও খদ্দের প্রায় নেই। কোথাও কর্মীরা গল্পে মত্ত, কেউ আবার মোবাইলে খেলছেন বা গান শুনছেন।

অথচ নভেম্বরের বিয়ের মরসুমের আগে এই এলাকার গয়নার দোকান তো রীতিমতো গমগম করে। কেউ মেয়ের বিয়ের গয়না কিনতে বা বায়না করতে আসেন। আবার কোথাও থাকে উপহার কেনার ভিড়। পাঁচশো-হাজারের ধাক্কা সেখানে কতটা আঘাত হেনেছে? এখানকার এক ছোট্ট সোনার দোকানে বসে জহর মজুমদার বলেন, প্রথমে দিন দুয়েক প্রায় সব দোকানই খোলা ছিল। এ দিন সকালেও খুলেছিল সব দোকান। কিন্তু দুপুরের পর থেকে হঠাৎই বহু দোকানের ঝাঁপ বন্ধ করে যে যার বাড়ি চলে গিয়েছেন। কারণ গয়না কিনে যে টাকা খদ্দের দেবেন, সেই পুরনো নোট নেওয়া যাবে না। ছোট দোকানগুলির কেনাবেচা নগদেই হয়। সেটাই যখন করা যাচ্ছে না, তখন আর দোকান খুলে বসে থেকে হবে কী! এ বিষয়ে ‘পশ্চিমবঙ্গ স্বর্ণ বাঁচাও সমিতি’র ট্রেজারার দীপক দে বলেন, ‘‘ছোট ছোট ব্যবসায়ীরা দোকান খুলে কী করবেন? ওই সব দোকানে তো কার্ড বা চেক-এ বিক্রির সুবিধা নেই। ফলে দোকান খোলা মানে শুধু শুধু বিদ্যুৎ-পোড়ানো। দোকান বন্ধ করা ছাড়া উপায় নেই।’’

কিছু কিছু দোকানে আবার টুকটাক বেচাকেনা হয়েছে। দূর-সম্পর্কের আত্মীয়ের বিয়ের উপহার কিনতে এসেছিলেন এক মহিলা। তিনি জানালেন, এ দিন ব্যাঙ্ক থেকে কিছু টাকা তুলেছেন। সঙ্গে জমানো কিছু ১০০ টাকার নোট নিয়ে চলে এসেছেন। দোকানের মালিক জানালেন, তাঁরা দোকান খোলাই রাখছেন। এক-দু’জন যাঁরা ১০০ টাকার নোট নিয়ে টুকটাক কিছু গয়না কিনতে আসছেন কিংবা চেক আনছেন, তাঁদের বিক্রি করছেন। তিনি জানালেন, অনেক পুরনো খদ্দেরকেও তাঁরা ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন নগদে হাতে নেই বলে। যত খারাপই লাগুক, তারাও নিরুপায়। চোখে পড়ল আরও একটি খোলা দোকান। মালিক দেবাশিস চৌধুরী জানালেন, সেখানে কার্ডে কেনাকাটা হয়। তবুও বিয়ের মরসুমের তুলনায় ব্যবসা খুবই মন্দা যাচ্ছে বলে দাবি তাঁর।

প্রায় একই হাল কলেজ স্ট্রিটের বই বাজারেও। দোকানের ঝাঁপ খোলা থাকলেও খদ্দের নেই। অনেকেই আবার তাড়াতাড়ি ঝাঁপ ফেলে ব্যবসা গুটিয়েছেন। ছোট ছোট বহু দোকান খোলা থাকলেও বউনিই হয়নি। কারণ দোকানদারেরা জানালেন, এই বইয়ের বাজারে খুব কম দোকানই কার্ডে ব্যবসা হয়। চেক দিয়ে বেচা-কেনা হয় না বললেই চলে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

shops book stores
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE