প্রতীকী ছবি।
কয়েক লক্ষ টাকার মাদক-সহ গ্রেফতার হয়েছিল তিন যুবক। শনিবার সকালে খিদিরপুর এলাকা থেকে ধরা পড়েছিল তারা। তাদের জেরা করতে গিয়ে বন্দর বিভাগের বিশেষ পুলিশ (এসএসপিডি) তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, নেপাল-ভারত সীমান্তে নিরাপত্তারক্ষীদের নজরদারির ফাঁক কাজে লাগিয়েই কলকাতায় মাদক নিয়ে আসত তারা।
সূত্রের খবর, সীমান্ত পারাপার করতে তাদের সাহায্য করত স্থানীয় যুবকেরা। নেপাল থেকে ছোট ছোট প্যাকেটে মাদক মুড়ে, সীমানা পার করে এ দেশে ঢুকে, ট্রেনের সাধারণ কামরায় চেপে কলকাতায় পৌঁছত পাচারকারীরা। খিদিরপুরের কাছে একটি জায়গায় সেই মাদক তুলে দেওয়া হতো গার্ডেনরিচের বাসিন্দা, চক্রের মূল পান্ডা এক ব্যক্তির হাতে। যা কয়েক দিন পরে রেল পথে পৌঁছে যেত উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন জায়গায়।
পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার খিদিরপুরে পান্ডার হাতে মাদক তুলে দেওয়ার সময় এসএসপিডির গোয়েন্দারা হাতেনাতে ধরে ফেলেন ওই তিন যুবককে। ধৃতদের নাম শাহনওয়াজ আখতার, আবদুল রশিদ এবং আইনুল হোসেন। তিন জনের বাড়িই খিদিরপুর এলাকায়। তাদের কাছ থেকে প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ টাকা মূল্যের ৬ কেজি ৪৯২ গ্রাম চরস উদ্ধার করেন তদন্তকারীরা। তাঁরা জানান, ধৃতরা মূলত ক্যারিয়ার। তাদের কাজে লাগান পাচার চক্রের মূল পান্ডা ওই ব্যক্তি। প্রতি কেজিতে তিন থেকে চার হাজার টাকা দেওয়া হত ক্যারিয়ারদের। কয়েক মাস অন্তর নেপালে যেত ওই চক্রের পান্ডা। সঙ্গে থাকত এলাকার চার পাঁচ জন যুবক।
তদন্তকারীদের দাবি, চক্রের মূল পান্ডা পলাতক। বন্দর এলাকার এক প্রভাবশালী ব্যক্তি সে। টাকার লোভ দেখিয়ে এলাকার যুবকদের ওই ক্যারিয়ারের কাজে লাগাত। প্রথমে সে নিজেই ওই যুবকদের নেপালে নিয়ে যেত। রক্সৌল সীমান্ত দিয়ে যাতায়াত করত তারা। কাঠমান্ডুতে একটি হোটেলে পাঁচ-ছ’জন ক্যারিয়ারের দলটিকে রাখা হত। ওই পান্ডাই মাদক জোগাড় করে, প্লাস্টিকের ছোট ছোট ব্যাগে ভরে সেলোটেপ দিয়ে আটকে দিত। প্রত্যেক ক্যারিয়ারের কাছে এক থেকে দু’কেজির প্যাকট রাখতে দেওয়া হত সীমানা পার করে কলকাতায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য।
ধৃতেরা পুলিশকে জানিয়েছে, পান্ডার নির্দেশ মতো তারা সীমান্ত পার করে এ দেশে পৌঁছত। কয়েক জন যুবক টাকার বিনিময়ে নিরাপত্তারক্ষীহীন এলাকা দিয়ে পার করিয়ে দিত তাদের। এক তদন্তকারী অফিসার জানান, সীমান্ত পার করার সময় সবাই পৃথক হয়ে যেত। এ দেশে পৌঁছনোর পর সবাই আবার এক হতো। ধৃত তিন যুবকই হাটে-বাজারে এক্সপ্রেসের সাধারণ কামরায় চেপে শিয়ালদহ পৌঁছেছিল শনিবার।
ধৃত যুবকেরা পুলিশের কাছে দাবি করেছে, চক্রের পান্ডার নির্দেশে তারা শুধু নেপাল থেকে কলকাতায় ওই ‘মাল’ পৌঁছে দিত। পরে অন্য একটি দল তা উত্তর-পূর্ব ভারতে পৌঁছে দিত। তদন্তে নেমে পুলিশ জেনেছে, একবালপুর-ওয়াটগঞ্জ এলাকার বেশ কয়েক জন যুবক এই পাচারের কাজে সাহায্য করছেন।
কলকাতার আরও খবর পড়তে চোখ রাখুন আনন্দবাজারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy