Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

কলকাতার কড়চা: নারী দিবসে নারীর মঞ্চ

শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৯ ০৭:৩৩
Share: Save:

যাজ্ঞসেনীও দিনান্তবেলায় ফেলে আসা মুহূর্তের কথাই ভাবতেন, অন্য মেয়েদের মতো। নিশ্চয়ই তিনি স্বভাবত স্বতন্ত্র, মহাভারত-এর দ্রৌপদীও, কিন্তু পড়ন্ত বয়সে যখনই ফিরে তাকাতেন তাঁর আগেকার জীবনের দিকে, তখন আর-পাঁচটি মেয়ের মতোই কি সীমাহীন হর্ষের পাশাপাশি মনে পড়ত না নিজের অপরিসীম কষ্টের মুহূর্তগুলি? হয়তো পুলওয়ামায় নিহত জওয়ান বাবলু সাঁতরার স্ত্রী মিতা-র মতোই মনে হত ‘‘যুদ্ধ কখনও এক পক্ষকে ধ্বংস করে না। ধ্বংস দু’তরফেই হয়। তাতে ঘরের ছেলেও রেহাই পান না।’’ বিজয়লক্ষ্মী বর্মনের ‘যাজ্ঞসেনী অগ্নিকন্যা’ নাটকেও (সঙ্গের ছবি) সে ভাবেই দ্রৌপদীর মনে পড়ে যায় তাঁর নিহত পাঁচ পুত্রের কথা, যাদের যুদ্ধের অব্যবহিতেই হত্যা করেছিলেন অশ্বত্থামা। ভবানীপুর শিশিক্ষু প্রযোজিত দেড় ঘণ্টার বিরতিহীন এ নাটকের একক অভিনেতা ও নির্দেশক বিজয়লক্ষ্মী জানালেন “মহাপ্রস্থানের পথে যাওয়ার সময় শেষ রাতে পুরনো কথা মনে পড়ছে দ্রৌপদীর, মনে হচ্ছে তাঁর এই কন্যাজন্ম-বিবাহ-পুত্রহত্যা... সমস্ত কিছুর পিছনেই যেন আদতে প্রতিশোধস্পৃহা। ভোর হয়ে আসে, প্রথম পতন হয় দ্রৌপদীরই, তাঁর স্বামীরা কেউ ফিরেও তাকান না, সেই পতন-মুহূর্তে তিনি নিজেই নিজেকে বলতে থাকেন: এখানেই শেষ হোক তোমার অপমানিত লাঞ্ছিত ব্যবহৃত জীবন।” যুদ্ধে নারীর ব্যক্তিগত পারিবারিক সামাজিক ক্ষয়ক্ষতি সবচেয়ে বেশি। ৮ মার্চ নারী দিবসে অ্যাকাডেমিতে ৩টের সময় এ নাটকের অভিনয়, নান্দীপট আয়োজিত দশম ‘নারীর মঞ্চ’ নাট্যোৎসবে। এ ছাড়াও আছে সীমা মুখোপাধ্যায়ের ‘কাল্পনিক বাস্তব’, সুরঞ্জনা দাশগুপ্তের ‘হুইলচেয়ার’, তুলিকা দাসের ‘চতুর্থীর জোড়’, সঞ্জিতার ‘ত্রিনয়ন’, পৌলমী চট্টোপাধ্যায়ের ‘ফেরা’; ওড়িশার সুজাতা প্রিয়ংবদার ‘রেবতী, এইবতী, সেবাতী’; এবং বাংলাদেশের ত্রপা মজুমদারের ‘মুক্তি’ ও আমেরিকার মালা চক্রবর্তীর ‘ঘুঘুডাঙা’। অ্যাকাডেমি ও তপন থিয়েটারে ৮-১২ মার্চের এ উৎসবের উদ্বোধনে ডলি বসু, সম্মানিত হবেন ভদ্রা বসু ও অজিত রায়। অন্য দিকে ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিজ়-এরও আয়োজন: ইন্টারন্যাশনাল উইমেন্স ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল ২০১৯। নন্দনে ৮-১০ মার্চ। শুরুর দিন বিকেল ৫টায় আলোচনা: ‘ভয়েস অব উইমেন ইন মিডিয়া’। অনুরাধা কুণ্ডার সঞ্চালনায় বলবেন সুদীপ্তা চক্রবর্তী সেঁজুতি রায় মুখোপাধ্যায় প্রমুখ।

পুস্তিকা

ফিনফিনে মলাটের পাতলা বই। একটা তো সবার চেনা, বর্ণপরিচয়। কিন্তু বাংলা মুদ্রণের প্রায় আড়াই শতকের ইতিবৃত্তে এমন আরও কত ‘পুস্তিকা’ যে বেরিয়েছিল, তার খোঁজ আমরা রাখার চেষ্টা করিনি। বড় গ্রন্থাগারেও এই সব ‘চটি’ বই গুরুত্ব পায়নি। অথচ ব্যক্তি পরিবার অঞ্চল থেকে সংবাদ সমাজ সংস্কৃতি বিনোদন ইত্যাদি কত না মাত্রা রয়েছে এর। জয়ন্ত গোস্বামী কি বীরেশ্বর বন্দ্যোপাধ্যায় সে পরিচয় কিছুটা ধরে রেখেছেন। ‘হরপ্পা/ লিখন চিত্রণ’ পত্রিকা (সম্পা: সৈকত মুখোপাধ্যায়) এ বার পুস্তিকার এই বহুমাত্রিক চরিত্র তুলে ধরার চেষ্টা করেছে। পুস্তিকার উদ্ভব থেকে শুরু করে অভিনয় পুস্তিকা, ধর্মপুস্তিকা, ব্রাহ্ম-পুস্তিকা, পুস্তিকায় জাতপাত, শিল্প, বিজ্ঞান, ভ্রমণ, রেল, পতিতোদ্ধার, চৌদ্দ আইন, নীহার প্রেসের পুস্তিকা— কী নেই। রবীন্দ্রনাথের চিত্রপ্রদর্শনী সংক্রান্ত পুস্তিকা সূত্রে উঠে এসেছে নানা অজানা তথ্য। আবার কমিউনিস্ট ম্যানিফেস্টো প্রসঙ্গে আছে চমৎকার বিশ্লেষণী আলোচনা। সঙ্গে পি এম বাক্‌চির পুস্তিকা ‘আজব হলেও সত্যি’র হুবহু প্রতিমুদ্রণ।

মনের খাবার

আমরা তো হরঘড়ি ‘স্ট্রিট ফুড’ চাখি। হররোজ স্ট্রিট আর্ট, পথ নাটিকা দেখি। এমনকি মেলার ধারে চাদর বিছিয়ে বাঁশিও শুনি। কিন্তু স্ট্রিট মিউজ়িক? এ বার এই শহরের ফুটপাতে বিদেশের ধাঁচে শোনা যাচ্ছে গিটারের মূর্চ্ছনা, সঙ্গে স্যান্ডউইচ— যা মন্ত্রমুগ্ধ তো করবেই আপনাকে, হবে রসনাতৃপ্তিও। গোলপার্ক রামকৃষ্ণ মিশনের পাশের ফুটপাত ফি-সন্ধেয় দেখা মেলে শ্যামাপ্রসাদ কলেজের ইংরেজি সাহিত্যের ছাত্র নীলাঞ্জন সাহার ‘মিউজ়িকাল স্যান্ডউইচ’ নামক সাইকেলের ওপর অভিনব খাবারের দোকানের। যাঁরা খেতে আসেন, তাঁদের গিটার বাজিয়ে পুরনো বাংলা গান শোনান তিনি। নীলাঞ্জন বলছিলেন, ‘‘স্ট্রিট মিউজ়িককে জনপ্রিয় করা আমার প্রধান লক্ষ্য তো বটেই, সঙ্গে স্ট্রিট মিউজ়িক হাব তৈরি ও অসংগঠিত দুঃস্থ শিল্পীদের একটি মঞ্চ দেওয়াও উদ্দেশ্য।’’ রোজ সন্ধে সাড়ে ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত। চাইলে যে কেউ এখানে এসে গান বাজনা শোনাতে পারেন। নীলাঞ্জনের ফেসবুক পেজ: ‘মিউজ়িকাল স্যান্ডউইচ’।

নারীর স্বাস্থ্য

ঔপনিবেশিক ভারতে নারীর স্বাস্থ্য সম্পর্কে যতটুকু সরকারি প্রয়াস দেখা গিয়েছিল, তার সমস্তটাই ছিল নারীর প্রজনন-ক্ষমতা সংক্রান্ত। নারী শরীরের এক বিশেষ অংশের মধ্যেই যে এই ঔপনিবেশিক সন্দর্ভ আবদ্ধ ছিল, সেটাই দেখাতে চাইছেন জেরাল্ডিন ফোর্বস তাঁর ‘বিটুইন দ্য নেক অ্যান্ড দ্য নিজ়/ দ্য মেডিক্যালাইজ়েশন অব ইন্ডিয়ান উইমেন্স বডিজ়’ শীর্ষক আলোচনায়। স্টেট ইউনিভার্সিটি অব নিউ ইয়র্কের প্রফেসর এমেরিটা জেরাল্ডিন বলবেন ৭ মার্চ দুপুর দুটোয়, বিদ্যাসাগর কলেজের ইতিহাস বিভাগের উদ্যোগে কলেজের বিধান সরণি ভবনের সেমিনার কক্ষে। সভামুখ্য সুজাতা মুখোপাধ্যায়।

দর্শকের দরবার

সুখচর পঞ্চমের প্রাক্‌ রজতজয়ন্তী বর্ষের নাট্যমেলা ‘দর্শকের দরবার’-এ এ বার থাকছে ষোলোটি দলের আঠারোটা নাটক। থাকছে ভরতের নাট্যশাস্ত্র থেকে ‘ভানিকা’, মহাভারতের ‘পাণ্ডবাণী’, ইসমত চুগতাই-এর মুসলিম মহিলাজীবন নিয়ে ‘চতুর্থীর জোড়’। থাকছে বাংলাদেশের রামেন্দু ও ফেরদৌসী মজুমদারের দল ‘থিয়েটার’। থাকবে পঞ্চমের ‘জলসাঘর’ আর্ট গ্যালারি স্টুডিয়ো থিয়েটারে ‘মস্কো আর্ট থিয়েটার ১২০ বছর’ ও ‘হারিয়ে যাওয়া রঙ্গমঞ্চ’ নামাঙ্কিত দু’টি প্রদর্শনী। বিদেশের থিয়েটার নিয়ে আলোচনায় শমীক বন্দ্যোপাধ্যায় ও আনন্দ লাল। ‘পঞ্চম নাট্যজীবন সম্মান’ জ্ঞাপন করা হবে রতন থিয়ামকে। ৬ মার্চ দেখা যাবে উদ্বোধনী নাটক মিনার্ভা নাট্যসংস্কৃতি চর্চাকেন্দ্রের ‘নাসিকাপুরাণ’। মেলা চলবে ১৭ মার্চ পর্যন্ত। অন্য দিকে, অনিমেষকান্তি ঘোষালের নাটক, কলাক্রান্তি প্রযোজিত ‘স্বপ্ন পিঞ্জর’ মঞ্চস্থ হবে ১০ মার্চ সন্ধে ৬টায় ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট হলে। নাটক শেষে ২৫তম ‘বহু ভাষার ছোট নাটক প্রতিযোগিতা’র পুরস্কার বিতরণ।

মরমিয়া সাঁঝ

ক্যালকাটা কারবাঁ-র (গল্প কথকদের ইতিহাস, ঐতিহ্য পরম্পরা ও সাহিত্য নির্ভর একটি উদ্যোগ) বছরের প্রথম নিবেদন ‘শাম-এ-সুফিয়ানা/ মরমিয়া সাঁঝ’, আয়োজিত হয়েছে ১৬ মার্চ বিকেল পাঁচটায় আইসিসিআরের অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর গ্যালারিতে। ভালবাসা আর আলোর সুগন্ধ মাখা এক মায়াময় সন্ধ্যা। এই হেরিটেজ বৈঠকে থাকছে একরাশ সুফি কাহিনি। গল্প বলবেন দিল্লির আসিফ খান দেহলভি, থাকবে দাস্তানগোই। ‘দাস্তান-এ-নুর/ অনিভান আলোর গল্প’। হাফেজ ও রুমির অতীন্দ্রিয় মরমিয়া দাস্তান পরিবেশিত হবে সঙ্গীত ও সেতার সহযোগে। সঙ্গে মিশে থাকবে দেবেন্দ্রনাথ ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্নিগ্ধ আলো। থাকবেন অভ্র ঘোষ সুপর্ণা দেব ঋষিতা সাহা অভিরূপ ঘোষ সৌরভ গোহো। ক্যালকাটা কারবাঁ এক বছর পূর্ণ করেছে। এই ধরনের ধারাবাহিক হেরিটেজ বৈঠক, কলকাতায় এক অভিনব প্রয়াস।

তথ্যচিত্র উৎসব

চলচ্চিত্রপ্রেমী বাঙালি তথ্যচিত্রের প্রতি উদাসীন। অনেকেরই অজানা, কলকাতাতেই আছে ‘ডকুমেন্টারি রিসোর্স ইনিশিয়েটিভ’-এর মতো সংস্থা, যার সদস্যেরা যুক্ত প্রশিক্ষণ, কর্মশালা-সহ তথ্যচিত্রের পুরো নির্মাণ প্রক্রিয়ায়। প্রতি বছর তাঁরা করেন ‘ডকেজ কলকাতা: এশিয়ান ফোরাম ফর ডকুমেন্টারি’ উৎসব। সেখানে আসেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন তথ্যচিত্র নির্মাতারা; প্রযোজনা সংস্থা ও ব্রডকাস্টারদের সামনে ছবির ভাবনা ‘পিচ’ করতে পারেন তথ্যচিত্র-ভাবুকরা। এ বার উৎসব ৪-১০ মার্চ। উদ্বোধন নন্দনে, বাকি দিন ম্যাক্সমুলার ভবনে। রোজ সন্ধেয় দেখানো হবে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্যচিত্র। কম্পিটিটিভ সাইক্লিংয়ের নেপথ্যে যে চিকিৎসাকর্মী ও সাহায্যকারীরা, তাঁদের নিয়ে আরুনাস মাটেলিসের তথ্যচিত্র ‘দ্য ওয়ান্ডারফুল লুজ়ার্স’ (সঙ্গের ছবি) এ বারের উদ্বোধনী ছবি। আছে ‘দ্য ব্রিজেস অব টাইম’, ‘আ নর্দার্ন সোল’-এর মতো ছবিও।

রেডিয়োর ভূমিকা

১৯২৩ সালে বৈজ্ঞানিক শিশিরকুমার মিত্রের ‘রেডিয়ো ক্লাব অব বেঙ্গল’ দিয়ে দেশে প্রথম পরীক্ষামূলক বেতার সম্প্রচার শুরু। নিজের তৈরি ট্রান্সমিটার দিয়ে শিশির মিত্র শুধু কলকাতা নয়, পশ্চিমে বারাণসী আগরা আর পুবে রেঙ্গুন পর্যন্ত প্রোগ্রাম শুনিয়েছিলেন। কলকাতায় নিয়মিত রেডিয়ো সম্প্রচার শুরু হয় ১৯২৭ সালের ২৬ অগস্ট। তখন বেতারে দু’টি প্রধান দিক— সঙ্গীত আর নাটক— পুরোপুরি নির্ভরশীল ছিল গুটিকয় পেশাদার অভিনেতা আর গায়ক-গায়িকার ওপর। সঙ্গদোষের ভয়ে সাধারণ সমাজের সুকণ্ঠী ও সুগায়ক পুরুষরাও বেতারে যোগ দিতেন না। কী করে রেডিয়োর প্রোগ্রামের মাধ্যমে অনুষ্ঠান অধিকর্তারা সামাজিক রক্ষণশীলতা আর কুসংস্কার উপেক্ষা করার সাহস দেখিয়েছিলেন, নানা অনুষ্ঠানে শ্রোতাদের নতুন ভাবে ভাবতে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন, এই সব তথ্য শোনা যাবে আকাশবাণীর অবসরপ্রাপ্ত প্রোগ্রাম অধিকর্তা বন্দনা মুখোপাধ্যায়ের মুখে। সোসাইটি ফর প্রিজ়ার্ভেশন, ক্যালকাটা আয়োজিত নিশীথরঞ্জন রায় স্মারক বক্তৃতা ‘কলকাতার সামাজিক বিবর্তনে রেডিয়োর অবদান’-এ, ১২ মার্চ সন্ধে ৬টায় জীবনানন্দ সভাঘরে।

নিজের কথা

স্বাধীনতার কালেই উত্তরবঙ্গের ময়নাগুড়ির ন’বছরের এক বালক তার পরিবারের সঙ্গে পাড়ি দিয়েছিল জামশেদপুর। সাত ভাইবোনের মরচ অভাবের সংসারে ছেলেটি শান্তি পেত কেবল মাঠে ফুটবল পিটিয়ে। জামশেদপুর ফুটবল ক্লাবে ‘পায়ে-খড়ি’। অচিরাৎ তার বাঁ-পায়ের দুর্দান্ত শটের মহিমা এতই ছড়াল যে সন্তোষ ট্রফিতে বিহার দলে ঠাঁই হল। ১৯৫৪-য় অনেক স্বপ্ন আর জেদ নিয়ে কলকাতার এরিয়ান ক্লাবে যোগ দিলেন প্রদীপকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়— ফুটবলপাগল বাঙালির কাছে পরে যিনি স্রেফ ‘পিকে’ বলেই আখ্যাত হবেন। ১৯৫৫-য় ঢাকায় প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ থেকে ’৫৬ ও ’৬০-এর অলিম্পিক, ’৬০-এ ভারতীয় দলের নেতৃত্ব, জাকার্তা এশিয়াডে ফুটবলে সোনা জেতা সব কিছুর পিছনে অন্যতম কারিগর রহিম সাহেবের এই প্রিয় ছাত্রটি। পরে প্রশিক্ষক হিসেবে তিনিও তাঁর অনবদ্য ভোকাল টনিকের জন্য হয়ে ওঠেন মিথ। অর্জুন পুরস্কার থেকে পদ্মশ্রী হয়ে পেলের হাত থেকে ফিফা-র ‘মিলেনিয়াম ফুটবলার অব দ্য ইয়ার’— কম স্বীকৃতি পাননি অশীতিপর এই ক্রীড়াবিদ। এ বার (সহলেখক ঔপন্যাসিক অনির্বাণ চট্টোপাধ্যায়) ইংরেজিতে তাঁর আত্মজীবনী প্রকাশ পেল বিয়ন্ড নাইনটি মিনিট্‌স (নোশন প্রেস, চেন্নাই) নামে।

রঙের প্রভাব

পারিপার্শ্বিক বিভিন্ন অবস্থা যেমন মনের ওপর প্রভাব বিস্তার করে, তেমনই মনের উপরও রঙের একটা প্রভাব রয়েছে। এক-একটি রং এক-এক ভাবে মনকে প্রভাবিত করে। আর এই রঙের প্রভাবকে কাজে লাগিয়েই প্রাচীন সমাজে, বিশেষ করে মিশর ও চিনে চিকিৎসার জন্য রংকে ব্যবহার করা হত, যাকে আজকের যুগে ক্রোমোথেরাপি বা কালার থেরাপি বলা হয়। একে অনেকে আলো চিকিৎসা বা রং চিকিৎসাও বলে থাকেন। এই বিকল্প পদ্ধতির চিকিৎসা করেই আশুতোষ কলেজের মনোবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপিকা, ম্যাকাও বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত তিন্নি দত্তের কাজ দেশে-বিদেশে প্রশংসা পেয়েছে। শুধু তাঁর কালার থেরাপিই নয়, মনোবিদ্যার আচরণগত থেরাপিও প্রশংসা পেয়েছে। এই বিষয়ে নেশাসক্ত মানুষদের উপর তাঁর গবেষণাপত্র ও একাধিক বইও ইতিমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে।

প্রশান্তির খোঁজে

ছবির মতো সুন্দর একটা রাজ্য, আপনারা ভূস্বর্গ বলেন যাকে। আবার রাজনীতি, যুদ্ধে দীর্ণ একটা রাজ্য, আপনারা ভয় পান, ঘৃণা করেন যাকে। এই দুইয়ের মধ্যে কিন্তু আর একটা কাশ্মীর আছে, যার খোঁজ রাখে না কেউ।’’— বলছিলেন ইরফান নবি। কাশ্মীরি আলোকচিত্রী এসেছিলেন ‘কলকাতা আন্তর্জাতিক আলোকচিত্র উৎসব’-এ, আর্ট গ্যালারিতে জড়ো হওয়া ক’জন বন্ধুর সামনে বললেন ‘প্রশান্তির খোঁজে’ বিষয়ে। কাশ্মীরে প্রশান্তি? শুনে অবিশ্বাসে চোখ বড় করেন যাঁরা, তাঁদের সামনে বাঙ্ময় উত্তর হতে পারে ইরফানের তোলা ছবি। সেখানে ধুলোর ঝড় উড়িয়ে পাহাড় বেয়ে নামা ভেড়ার পালের সামনে অবিচল রাখাল, শীতের ঝিলমে মাছ ধরা নৌকা নিয়ে প্রতীক্ষায় জেলে-পরিবার, কনকনে ভোরে গুলমার্গের রাস্তায় একাকী পোস্টম্যান, অফ-সিজ়নে ডাল লেকে শিকারা নিয়ে মাঝি রূঢ়, করুণ বাস্তবতা নিয়ে জেগে থাকে। কোনও কিছু ভেবে ছবি তোলেন না, ‘স্টেজড’ কোনও কিছু নিতান্ত নাপসন্দ। ডিগ্রিধারী ডাক্তার, কিন্তু ছবির প্রতি ভালবাসায় ছেড়েছেন সেই পেশা। আলোকচিত্রী-লেখক সচরাচর বিরল, তিনি তেমনই এক ব্যতিক্রম। কাশ্মীর নিয়ে নীলশ্রী বিশ্বাসের সঙ্গে লেখা বই, লাদাখ নিয়ে বই তার সাক্ষী। নিজেদের সংগ্রহে রাখবে বলে সম্প্রতি ওঁর বই চেয়ে নিয়েছে নিউ ইয়র্ক পাবলিক লাইব্রেরি, স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটিও। সামনে আছে বারাণসী নিয়ে বই, এমনকি প্রথম উপন্যাসের কাজও। কলকাতায় এলেন এই দ্বিতীয় বার, খুব ইচ্ছে এই শহর নিয়েও কাজ করার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE