ভোগান্তি: আহত বুলবুল শেখ (ইনসেটে)। হাসপাতালের বহির্বিভাগের সামনে রোগীর ভিড়। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
রোগীর পরিজন নয়। এ বার পুলিশের বিরুদ্ধেই জুনিয়র চিকিৎসক পেটানোর অভিযোগ উঠল। যার জেরে বুধবার প্রায় চার ঘণ্টা অচলাবস্থা তৈরি হল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। জরুরি বিভাগে পরিষেবা না পেয়ে ফিরে গেলেন রোগীরা। শেষ পর্যন্ত দোষীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত পদক্ষেপের আশ্বাসে সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
ঘটনাচক্রে, এ দিনই এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নিরাপত্তা পর্যালোচনা সংক্রান্ত বৈঠক করেছেন ডিসি (কমব্যাট) নভেন্দ্র সিংহ পাল। আগামিকাল, শুক্রবার কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ওই বৈঠক হওয়ার কথা।
হাসপাতাল সূত্রের খবর, দুপুর দেড়টার পরে হাউসস্টাফ ইউসুফ পাশাকে নিয়ে ডাক্তার দেখাতে বহির্বিভাগের টিকিট কাউন্টারে যান ইন্টার্ন বুলবুল শেখ। ওই ইন্টার্ন কাউন্টারের ভিতর থেকে টিকিট কাটায় রোগীর পরিজনেরা আপত্তি তোলেন। পুলিশ সূত্রের খবর, জুনিয়র চিকিৎসকের বক্তব্য ছিল, তিনি জরুরি প্রয়োজনে ও ভাবে টিকিট কাটছেন। এ নিয়ে রোগীর পরিজনেদের সঙ্গে তাঁদের বাদানুবাদ শুরু হয়। গন্ডগোলের কারণ দেখতে ঘটনাস্থলে গিয়ে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন কলকাতা পুলিশের রক্ষীরা। জুনিয়র চিকিৎসকদের অভিযোগ, পরিচয় দেওয়া সত্ত্বেও বুলবুলকে ফাঁড়িতে নিয়ে গিয়ে কয়েক জন পুলিশকর্মী চড় থাপ্পড় মারেন।
বিষয়টি জানাজানি হতেই পুলিশ ফাঁড়ির সামনে জড়ো হন জুনিয়র চিকিৎসকেরা। বিকেল ৩টে থেকে প্রায় দু’ঘণ্টা জুনিয়র চিকিৎসকেরা জরুরি বিভাগে না থাকায় নিরাপত্তারক্ষী রোগীদের ফিরিয়ে দিচ্ছেন, এমন দৃশ্যও দেখা যায়। সিনিয়র চিকিৎসকেরা এসে এক সময়ে পরিস্থিতি সামাল দেন। বিকেল পাঁচটা নাগাদ অধ্যক্ষ মঞ্জুশ্রী রায়ের ঘরে সুপার ইন্দ্রনীল বিশ্বাস, ডিসি (সেন্ট্রাল) সুধীর নীলকান্তমের উপস্থিতিতে শুরু হয় বৈঠক।
তবে এ দিনের ঘটনায় বেশ কিছু প্রশ্ন উঠেছে। বহির্বিভাগের টিকিটের জন্য হাসপাতালে অটোমেটিক ভেন্ডিং মেশিন রয়েছে। তা হলে কাউন্টারের ভিতর থেকে টিকিট কাটা হল কেন? ওই চিকিৎসকেরা অ্যাপ্রন পরে থাকলে এত দূর গড়াত না বলে মত কর্মীদের একাংশের। ইন্টার্নকে মারধরের আগে কেন ঘটনার কথা জানানো হল না, তা-ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বোধগম্য হচ্ছে না।
হাসপাতালের সুপার ইন্দ্রনীল বিশ্বাস বলেন, ‘‘সরকারি ভাবে কাজ কেউ বন্ধ করেননি। অভিযুক্ত সাত জন জুনিয়র চিকিৎসককে চিহ্নিত করা হয়েছে। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিতে সমস্যা মিটেছে।’’ জুনিয়র চিকিৎসকেরা জানান, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাসে তাঁরা কাজে যোগ দিয়েছেন। ডিসি (সেন্ট্রাল) বলেন, ‘‘সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে যথাযথ তদন্ত করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy