রেস্তোরাঁয় বসে বকফুল ভাজা, শাক-চচ্চড়িতে বৈশাখ-বরণ অবাক কাণ্ড নয়। বরং এক ধরনের স্টেটমেন্টই বটে। ইলিশ-চিংড়ির বিশেষ পদকে উৎসব-পার্বণেও এখন বলে বলে গোল দিচ্ছে পালং শাক, বড়ির ঝোল। হোটেল-রেস্তোরাঁগুলির নববর্ষের মেনুকার্ডে অবশ্য দুইয়েরই সহাবস্থান।
হারিয়ে যাচ্ছে রোজকার সহজ পদগুলোই। সে দিকে নজর রেখে পোস্তো-ধনে পাতার বড়া, ফুলকপির শিঙাড়াও এখন রেস্তোরাঁর স্টার্টার তালিকায়। হোটেল হিন্দুস্থান ইন্টারন্যাশনালের কলস রেস্তোরাঁয় আবার এ সবের সঙ্গে থাকছে শাক-ভাত, বিউলির ডাল আর আলুপোস্ত।
ঘরোয়া থিম বেছে নিয়েছে মার্কোপোলো রেস্তোরাঁও। সোনা মুগ ডাল, ছানার ডালনা, আলুর দম, মুরগির ঝোল, কাঁচা আমের চাটনির মতো সহজ রান্নাই হচ্ছে বৈশাখ শুরুর দিনে। শেষপাতে দই-মিহিদানার যুগলবন্দি।
বৈদিক ভিলেজ-এ ঘরোয়া স্বাদ পেতে চেখে দেখা যায় পটলের দোলমা, বিক্রমপুরের কাঁচকলার দম, এঁচোড়ের ডালনা, দুধ চিংড়ি। পাকা পেয়ারা দইয়ের শরবতে শুরু হওয়া আহার শেষ হতে পারে পান্তুয়া আর মিষ্টি দইয়ে। ভুলে যাওয়া কিছু মাছের রেসিপিতে বৈশাখ শুরুর আহার জমতে পারে বালিগঞ্জের ফিশ ফিশ-এ। থাকছে মৌরলা ভাজা, আম কাসুন্দি কই, পুর ভরা ভেটকির ঝালের মতো পদ। সল্টলেকের চার্নক্সে ভোজ হোক নারকেল দিয়ে ছোলার ডাল, ঘি-ভাত, পটল ও বড়ি ভাজাতে।
ঠাকুরবাড়ির সাবেক খাওয়াদাওয়ার খোঁজ মিলবে পার্ক প্লাজার কে নাইনটিন-এ। আছে গন্ধ লেবুর শরবত, মাছের পাটিসাপটা, পেঁয়াজ পোস্তবড়া।
পঞ্চব্যঞ্জনের ছবি-সহ, ‘মাছ-ভাত অ্যাট ওহ্! ক্যালকাটা’ স্টেটাস আপডেট এখন ‘স্টেটাস সিম্বল’ও বটে। পয়লা বৈশাখটা ঝালে-ঝোলে-ককটেলে না কাটালে বাঙালি হওয়া যায় নাকি! সজনে ফুলের পাতুরি, তিল আমের মুরগি ভাপা, পাবদা সরষে, ধনে রসুনের চিংড়ির মতো ভুলে যাওয়া বা না দেখা কিছু বাঙালি পদকে চাখা যায় এই বেলা।
কম চেনা বাঙালি রান্না ৬ বালিগঞ্জ প্লেসে। মৌরলা মাছের পেঁয়াজি, ভেটকি রোল, ভুনা মাংস বা মুর্শিদাবাদী গ্রিলড চিকেনে শুরু হোক বৈশাখ।
তাজ হোটেলে কোরমা-কালিয়া-বাঙালি বিরিয়ানি মিলিয়ে রাজকীয় আয়োজন। ঝিঙ্গা দম মির্চ কোরমা, মোগলাই পনির চাপ, তন্দুরি লাছেদার পরোটা, মুর্গ দম বিরিয়ানিতে ভোজ।
বম্বে ব্রেসারি-তে আবার বৈশাখ-ভোজ জমানো যায় এক্কেবারে অন্য রকম মেজাজে। চেখে দেখা যায় মোগলাই কায়দার রকমারি কবাব, পারসি রসনা সাল্লি চিকেন, অমৃতসরি কুলফা, শাহি টুকরা। নববর্ষে ‘ব্রাঞ্চ’ সারতে যেতে পারেন হোটেল গেটওয়েতে। ঢাকাই স্যালাড, স্টাফ্ড ভেটকি, বৈশাখী শোরবায় হোক অন্য রকম আহার। আলিপুরের কাইজি এন’ কড়াই-এ দক্ষিণী প্ল্যাটার থেকে পিৎজা, পঞ্জাবি কবাব। ক্যামাক স্ট্রিটের দ্য ফ্যাক্টরি আউটলেট-এ স্টাফড কাসুন্দি মাশরুম, মাস্টার্ড ভেটকি, টক-ঝাল ডাব মোহিতোয় জমবে বছর শুরুর বিকেল।
চিনা খাবারে নববর্ষ পালন করা যায় বুদ্ধ বাইটস রেস্তোরাঁয়। বার্বিকিউ পোর্ক সসেজ, ল্যাম্ব ইন ওরিয়েন্টাল ভেজিস, জাম্বো প্রন ইন বাটার গার্লিক সস্, ডাক উইথ চিলি প্লামের সঙ্গে মাতুন আড্ডায়।
শেষ পাতে মিষ্টিমুখ। আম-বাঙালির উদ্যাপন জমুক মামা মিয়া-র স্পাইসড ম্যাঙ্গো জেলাতো, ম্যাঙ্গো পাই, ম্যাঙ্গো মুজ কেকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy