ছবি: সংগৃহীত।
শাবল দিয়ে আলমারির ভল্ট ভাঙছেন শিক্ষিকা! পাশে দাঁড়িয়ে রয়েছেন স্বামী। দু’জনে মিলে ভল্ট ভেঙে টাকা হাতিয়ে নিয়েই চম্পটও দিলেন।
বিধাননগরের একটি বেসরকারি ম্যানেজমেন্ট কলেজের গোপন ক্যামেরায় ধরা পড়ল ষাটের দোরগোড়ায় পৌঁছনো এক শিক্ষিকা এবং তার স্বামীর এই কীর্তি।
ওই শিক্ষিকা নিজের কলেজেরই টাকা এ ভাবে আত্মসাৎ করে গ্রেফতার হয়েছেন। তাঁর নাম কেয়া ওয়ালিয়া। তিনি ২০ বছর ধরে বিভিন্ন জায়গায় শিক্ষকতা করেছেন।
গভীর রাতে কলেজে কী ভাবে ঢুকলেন প্রবীণ এই দম্পতি?
কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত রবিবার রাতে খাবারের মধ্যে কাউকে দিয়ে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে নিরাপত্তারক্ষীদের দেওয়া হয়েছিল। সেই খাবার খেয়েই অচৈতন্য হয়ে পড়েন কলেজের রক্ষীরা। সেই সুযোগে ওই দম্পতি রাত দেড়টা নাগাদ কলেজের কলাপসিবল গেট ভেঙে কলেজের একটি নির্মিয়মাণ অংশে ঢুকে পড়েন। সেখান থেকে অ্যাকাউন্টস বিভাগের ঘরে তাঁরা পৌঁছে যান।
বেশ কিছু দিন ধরে অ্যাকাউন্টস বিভাগের ওই আলমারি থেকে টাকা গায়ব হচ্ছিল। সম্প্রতি ৮ লাখ টাকা চুরি হয়। প্রথমে অ্যাকাউন্টস বিভাগের কর্মীদের সন্দেহ করা হচ্ছিল। চোর ধরতেই ওই আলমারির কাছে একটি গোপন ক্যামেরা লাগানো হয়। তা জানতেন না অভিযুক্ত ওই শিক্ষিকা। মহালয়ার ভোরে ওই আলমারির ভল্ট ভেঙে টাকা নিয়ে চম্পট দেন তাঁরা। গোপন ক্যামেরায় শিক্ষিকার এই কীর্তি দেখে হতবাক কলেজ কর্তৃপক্ষ। তবে ঠিক কত টাকা খোয়া দিয়েছে এখনও তা জানা যায়নি। কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, হিসাব মিলিয়ে দেখা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: পুজোর সপ্তাহে কবে কত ক্ষণ চলবে মেট্রো, দেখে নি
সিসি ক্যামেরার ফুটেজে ধরা পড়ে, ৬২ পেরোনো স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে কী ভাবে ভল্ট ভেঙে টাকা বার করছেন কেয়া। ওই ফুটেজ হাতে পেয়েই কেয়াকে গ্রেফতার করে বিধাননগর থানার পুলিশ। গ্রেফতার হন তাঁর স্বামী গুরমিত সিংহ অহলুয়ালিয়া।
কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি, এর আগেও টাকা চুরি করেছেন ওই শিক্ষিকা। এ বার হাতেনাতে প্রমাণ পেয়েই কলেজের অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর থানায় অভিযোগ করেন ওই শিক্ষিকার নামে। তবে টাকা চুরির ঘটনায় আর কেউ জড়িত কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কলেজের তরফে আইনজীবী আনন্দরূপ ঘোষ বলেন, “আগেও এক বার আলমারি ভাঙার চেষ্টা হয়েছিল। তবে রবিবার রাতে ভল্ট ভেঙে চুরি করার ঘটনাতেই গ্রেফতার হয়েছেন ওই শিক্ষিকা এবং তাঁর স্বামী।”
আরও পড়ুন: মুম্বইয়ের ব্যাঙ্ক থেকে ১৪৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নিল হ্যাকাররা!
যদিও পুলিশের কাছে কেয়া দাবি করেছেন, সম্প্রতি বিভিন্ন কারণে ধারদেনায় জর্জরিত হয়েই তিনি এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন। এক প্রকার নিরুপায় হয়েই কলেজের তহবিলের টাকা সরিয়েছেন। তিনি সত্যি বলছেন কি না, পুলিশ তা-ও খতিয়ে দেখছে। শুক্রবার দু’জনকেই আদালতে তোলা হলে বিচারক ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত তাঁদের জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
(কলকাতার ঘটনা এবং দুর্ঘটনা, কলকাতার ক্রাইম, কলকাতার প্রেম - শহরের সব ধরনের সেরা খবর পেতে চোখ রাখুন আমাদের কলকাতা বিভাগে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy