Advertisement
০৭ মে ২০২৪

পথ জুড়ে শাসক দলের মঞ্চ, নাস্তানাবুদ শহর

শুক্রবার সন্ধ্যায় শ্যামবাজার মোড়ে তৃণমূলের সভার জেরে সেই ভোগান্তি এমন পর্যায়ে পৌঁছল যে, কার্যত নাকানিচোবানি খেলেন সাধারণ মানুষ। দীর্ঘক্ষণ গাড়ির জটে আটকে থাকতে হল নিত্যযাত্রীদের।

রুদ্ধ: সমাবেশে আটকেছে রাস্তা। শ্যামবাজার মোড়ে, শুক্রবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

রুদ্ধ: সমাবেশে আটকেছে রাস্তা। শ্যামবাজার মোড়ে, শুক্রবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০১৯ ০০:১১
Share: Save:

প্রথমার্ধ যদি পুলিশের সাফল্যের হয়, দ্বিতীয়ার্ধ তা হলে অবশ্যই ভোগান্তির।

শুক্রবার সন্ধ্যায় শ্যামবাজার মোড়ে তৃণমূলের সভার জেরে সেই ভোগান্তি এমন পর্যায়ে পৌঁছল যে, কার্যত নাকানিচোবানি খেলেন সাধারণ মানুষ। দীর্ঘক্ষণ গাড়ির জটে আটকে থাকতে হল নিত্যযাত্রীদের। বাস, ট্যাক্সির লম্বা লাইন এক সময়ে পৌঁছে গেল বিধান সরণি হয়ে হাতিবাগান মোড় পর্যন্ত। একই রকম চাপ দেখা গেল রাজবল্লভপাড়া হয়ে যতীন্দ্রমোহন অ্যাভিনিউ এবং অন্য দিকে আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রোডে। আরও খারাপ অবস্থা হয় বি টি রোডের। সেখানে গলিপথ ধরেছিল যে সব গাড়ি, তারাও একে অন্যের মুখোমুখি আটকে দাঁড়িয়ে গেল মাঝ রাস্তাতেই।

কলকাতা পুলিশের নর্থ ডিভিশনের একাধিক ট্র্যাফিক গার্ডের কর্মীরা রাস্তায় নেমেও পরিস্থিতি সামাল দিতে পারলেন না। নাজেহাল এক ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীকে বলতে শোনা গেল, ‘‘রাস্তায় চাপ থাকবে জানতাম। কিন্তু এমন আকার নেবে, ভাবিনি।’’ প্রত্যক্ষদর্শীরা অবশ্য জানাচ্ছেন, শুধু উত্তর কলকাতার তৃণমূলের সভাই নয়, সঙ্গে এ দিন যুক্ত হয়েছে বামেদের একাধিক মিছিলও। মধ্য ও দক্ষিণ কলকাতাতেও প্রবল যানজটে পড়তে হয় যাত্রীদের।

এ দিন শ্যামবাজারের ভূপেন বসু অ্যাভিনিউয়ের এক দিক সম্পূর্ণ বন্ধ করে সভামঞ্চ তৈরি করেছিল উত্তর কলকাতা যুব তৃণমূল। পাঁচ মাথার মোড়ের ১০০ মিটারের মধ্যে সেই সভামঞ্চ হওয়ায় মানুষের ভিড় নেতাজি মূর্তি পর্যন্ত চলে আসার আশঙ্কা ছিল। সকালে শ্যামবাজারে কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের বলতে শোনা যায়, ‘‘এখন দেখে বোঝা যাবে না। বিকেলের পরে লোকের ভিড় পাঁচ মাথার মোড় পর্যন্ত চলে এলে কী করে সামলাব, জানি না।’’ বিকেল গড়াতে দেখা গেল, সেই আশঙ্কাই সত্যি হয়েছে। মানুষের ভিড় ১০০ মিটার রাস্তা পা়র করে পাঁচ মাথার মোড়ে উঠে আসে। যার জেরে কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে সেখানকার যান চলাচল। একমাত্র বি টি রোড হয়ে মানিকতলার দিকে যাওয়ার রাস্তাটাই খোলা ছিল। দিনের শুরুতে ভূপেন বসু অ্যাভিনিউয়ের যে দিকটি যান চলাচলের জন্য খোলা রেখেছিল পুলিশ, তা-ও বন্ধ করে দেওয়া হয়। শ্যামবাজার এলাকায় রয়েছে একাধিক স্কুল। বিকেলে মেয়েকে নিয়ে স্কুলফেরতা এক মা বলেন, ‘‘ওর বাবাকে ফোন করে বললাম, সন্ধ্যায় যেন এই পথে না আসে। এলেও মেট্রোয় যতটা পারবে আসুক।’’

ভিড় যে শ্যামবাজারের পাঁচ মাথার মোড়ে পৌঁছে যেতে পারে, তা বুঝেও কেন তার ১০০ মিটারের মধ্যে মঞ্চ গড়তে দেওয়া হল? এ প্রশ্নের উত্তরে বরাবরের মতোই চুপ কলকাতা পুলিশ। বারবার ফোন করা হলেও তা ধরেননি কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (ট্র্যাফিক) মীতেশ জৈন। উত্তর দেননি টেক্সট মেসেজেরও। তবে সভার অন্যতম উদ্যোক্তা, উত্তর কলকাতা যুব তৃণমূলের সভাপতি জীবন সাহা বলেন, ‘‘পুলিশ অনুমতি দিয়েছে। নিশ্চয়ই সব জেনে-বুঝেই দিয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Meeting TMC Shyambazar Suffering
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE