বিপর্যয়: ভেঙে পড়েছিল উড়ালপুলের এই অংশ। —নিজস্ব চিত্র।
যানজটের আশঙ্কায় ভেঙে পড়া বিবেকানন্দ উড়ালপুল নতুন করে তৈরি না-ও হতে পারে।
এই উড়ালপুল তৈরি হলে যানজটের সমস্যা আরও বাড়বে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন আইআইটি খড়্গপুরের বিশেষজ্ঞেরা। সন্দেহ নিরসনের জন্য পূর্ত দফতর এবং পরিবহণ দফতরের থেকে গাড়ি চলাচলের তথ্য সংগ্রহ শুরু করেছে পুলিশ। এ কাজে দেশের ট্র্যাফিক ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে যুক্ত বিশেষজ্ঞদেরও লাগানো হয়েছে। সেই তথ্য হাতে এলে, উড়ালপুল তৈরি হবে কি না, তা নিয়েই চূড়ান্ত রিপোর্ট দেবেন আইআইটি-র বিশেষজ্ঞেরা।
নবান্নের খবর, উড়ালপুলের ভবিষ্যৎ চূড়ান্ত করার জন্য রাজ্য সরকার মার্চ মাসে আইআইটি-র বিশেষজ্ঞদের নিয়োগ করে। তিন মাসের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে তাঁদের। পূর্ত দফতর সূত্রের খবর, কোনও রাস্তা করার সময়ে হিসেব কষা হয়, আগামী ১৫ বছর সেখান দিয়ে কত গাড়ি চলবে। সেতুর ক্ষেত্রে পঞ্চাশ বছর সময়সীমা ধরে নকশা তৈরি হয়। কত গাড়ি যাতায়াত করতে পারবে, তা-ও মাথায় রাখা হয়। কিন্তু বিবেকানন্দ উড়ালপুলের ক্ষেত্রে কোনও পরিকল্পনা ছিল না বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা। তাই ২০৪০ সালকে সামনে রেখে ওই উড়াপুল দিয়ে গাড়ি যাতায়াত করলে যানজট হবে কিনা, সেটাই এখন আইআইটি-র বিশেষজ্ঞদের প্রধান বিবেচ্য বিষয়।
পূর্ত দফতরের এক কর্তা জানান, হাওড়া থেকে গিরিশ পার্ক যেতে এবং গিরিশ পার্ক থেকে হাওড়ার দিকে আসতে ওই উড়ালপুলের উপরে যানজট হলে সরকারের সেতু তৈরি করে কোনও লাভ হবে না। তখন সেতু ভাঙা ছাড়া কোনও উপায় থাকবে না।
এ দিকে, উড়ালপুল তৈরির পরিকল্পনা ঘিরে বর্তমান ও প্রাক্তন নগরোন্নয়ন মন্ত্রীর চাপান-উতোর শুরু হয়েছে। বর্তমান নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের দাবি, উড়ালপুল তৈরির পরিকল্পনায় ভুল ছিল। তিনি বলেন, ‘‘ওই রাস্তা দিয়ে গাড়ি গেলে যানজট হতেই পারে। আমরা ক্ষমতায় আসার পরে যদি ভেঙে ফেলতাম, তা হলে বলা হতো বাম সরকারের তৈরি সেতু ভেঙে দেওয়া হল। তাই আইআইটি-র বিশেষজ্ঞেরা যা বলবেন, রাজ্য তার পরে সিদ্ধান্ত নেবে। মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে কমিটি সবটাই দেখছে।’’
বাম আমলের নগরোন্নয়ন মন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য়ের পাল্টা দাবি, উড়ালপুল তৈরির পরিকল্পনাতেই ভুল ছিল। তিনি বলেন, ‘‘সেতু তৈরির জন্য নকশা, কাগজপত্র দেখেই অর্থ মঞ্জুর করেছে কেন্দ্র। উড়ালপুলের যে অংশ ভেঙেছে, সেটা এই সরকারের আমলে হয়েছে।’’
আইআইটি-র বিশেষজ্ঞেরা সব দেখেশুনে বুঝেছেন, ওখানে উড়ালপুল তৈরির পরিকল্পনা ঠিক ছিল না। ঘিঞ্জি এলাকায় বাড়ির বারান্দা ঘেঁষে সেতু তৈরি করাও বিপজ্জনক পদক্ষেপ। এক বিশেষজ্ঞের মতে, উড়ালপুলের কোথায় কোথায় ত্রুটি রয়েছে, তা নিশ্চিত করা গিয়েছে। মেরামত করে উড়ালপুলটি চালু করাও সম্ভব। কিন্তু যানজট হলে লাভ হবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy