গীতায় অর্জুনের যে দ্বিধা, সংশয়, তাতে কি একটা বড় দর্শন ছিল না? মানুষের কাজ কি শুধুই পূর্বনির্ধারিত ভাবে এগিয়ে যাওয়া, না কি বৃহত্তর কল্যাণের কথা মাথায় রেখে পা ফেলা— অমর্ত্য সেন ছাত্রবেলাতেই প্রশ্ন তুলেছিলেন। এই বৃহৎ কল্যাণের পথই তাঁর সারা জীবনের বিবিধ জ্ঞানচর্চা ও দর্শনবোধের ভিত্তি। তাঁর জীবন ও কাজকে নানা দিক থেকে দেখে বেশ কয়েকটি অসাধারণ প্রবন্ধ সঙ্কলিত: কল্যাণ, সক্ষমতা, ধর্মনিরপেক্ষতা, বামপন্থার সঙ্কট ও সম্ভাবনা নিয়ে। ‘চিন্তার ভিত্তি’ ‘চিন্তার প্রসার’ ‘চিন্তার অনুশীলন’, তিন ভাগে বিন্যস্ত লেখাগুলি। আর আছে তাঁর নির্বাচিত রচনাংশ, রচনাতালিকা। তিন অতিথি সম্পাদকের সম্পাদকীয় সূচনাপ্রবন্ধেরও উল্লেখ করতেই হয়।
অনুষ্টুপ, অমর্ত্য সেন বিশেষ সংখ্যা
সম্পা: অনিল আচার্য
৫০০.০০
একুশ শতকের এই আড়াই দশকে বঙ্গজীবন বহু অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছে, সমসময়ের ছোটগল্পে ধরা পড়েছে তার ছবি। এই সংখ্যায় আলোচিত এই সময়কালের নির্বাচিত সাহিত্যিকের গল্পরচনার বিষয়, বৈশিষ্ট্য। রবিশংকর বলের গল্পভুবন নিয়ে লিখেছেন গোপা দত্তভৌমিক, আনসারউদ্দিনের গল্প আলোচিত রুশতী সেনের কলমে। তৃষ্ণা বসাক সাত্যকি হালদার তন্বী হালদার প্রমুখের বর্ণনায় উঠে এসেছে গল্পনির্মাণের নেপথ্যকথা।
কোরক, আড়াই দশকের বাংলা ছোটগল্প (২০০১-২০২৫)
সম্পা: তাপস ভৌমিক
৩০০.০০
পথের পাঁচালী-র শুটিং টাকার অভাবে আটকে যাওয়ায় গায়ের গয়না খুলে দিয়েছিলেন সত্যজিৎ-পত্নী; মানিক থেকে সত্যজিৎ-যাত্রায় বিজয়া রায়ের গুরুত্ব, রতন ভট্টাচার্যের কলমে। রক্তকরবী-র একশো বছরে অশোক মজুমদারের নিবন্ধ। ইজ়রায়েল-প্যালেস্টাইন রক্তক্ষয়ী সংঘাত, ইরানের বিতর্কিত ও বিদ্রোহী কবি ফোরুগ ফারুখজ়াদ, নজরুলের কাব্যে মহানবি, এমনই নানা বিষয় উঠে এসেছে; ইলিশ নিয়ে মনোজ্ঞ রচনা ‘ইলিশ ও রাজনীতিকরা’। এ ছাড়াও গল্প কবিতা নিবন্ধ ভ্রমণ-রচনা।
উদার আকাশ, ইদ-শারদ উৎসব সংখ্যা ১৪৩২
সম্পা: ফারুক আহমেদ
১৫০.০০
“অত উঁচুতে চলে যেত স্বর যখন সে বুকফাটা আর্তনাদে ডাকত ‘অনু-প। শক্লু!’ সেই সঙ্গে চড়া সুরের বাঁশির আওয়াজ সেই স্বরের সঙ্গে মিলে কাঁপত। ওই দুই আওয়াজ মিলে একটা অদ্ভুত আশ্চর্য পরিবেশ রচনা করত।” নন্দিনী-সহ আরও নানা চরিত্রে তৃপ্তি মিত্রের অভিনয় দেখে শাঁওলীর স্মৃতিনির্ভর লিখন, নাট্যশিক্ষার্থীর অনুসন্ধিৎসা। তৃপ্তি মিত্রকে নিয়ে ক্রোড়পত্রে পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বিজয়লক্ষ্মী বর্মণ পঙ্কজ মুন্সী সুরঞ্জনা দাশগুপ্ত চৈতী ঘোষালেরও রচনা। শম্ভু মিত্র তাঁর নির্দেশনায় বহুরূপী-র প্রযোজনাটি নিয়ে লিখেছেন, আছে উৎপল দত্ত অশোক মুখোপাধ্যায় দেবাশিস মজুমদার প্রমুখের লেখাও। প্রবন্ধ, কবিতা, গল্প, বিজ্ঞানচর্চা, ভ্রমণ-রচনায় ঋদ্ধ সংখ্যাটিতে শতবর্ষের শ্রদ্ধার্ঘ্য ফাদার দ্যতিয়েন, গুরু দত্ত, পিটার্স সেলার্স, ভূপেন হাজারিকাকে।
পরম্পরা, উৎসব ১৪৩২
সম্পা: গৌতম দাস
৪৫০.০০
মতি নন্দীর লেখায় উত্তর কলকাতার জনজীবন, মূল্যবোধ, আশা-নিরাশার ছবিটা ক’জনের দেখা? তুষার সরকার লিখেছেন ‘নাগরিক মধ্যবিত্ত জীবনের রূপকার মতি নন্দী’। জীবনানন্দ দাশ, ঋত্বিককুমার ঘটক, মহাশ্বেতা দেবীর রচনা সম্বন্ধে কম-আলোচিত বা অনালোচিত নানা বিষয় উঠে এসেছে প্রাবন্ধিকদের কলমে। সংখ্যার শিরোনামেও তারই প্রতিধ্বনি। প্রতিভাধর যে লেখকেরা শুধুই খবরকাগজের লেখকবৃত্তে থাকতে চাননি, তাঁদের গল্পবই নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে।
ছাপাখানার গলি, দিক-ফেরানো স্বল্পালোচিত ছোটগল্প সঙ্কলন
সম্পা: দেবাশিস সাহা
৪৫০.০০
উপনিবেশের শাসকের নির্মমতার বিপরীতে, সংখ্যায় অল্প হলেও কিছু বিশিষ্ট ইউরোপীয় ভারতপ্রেমী ছিলেন, তাঁরা এ দেশের মানুষকে আলোকিত করতে, স্বাধীনতা আন্দোলনেও সহায়তায় এগিয়ে এসেছিলেন। এঁদের সক্রিয় মানবিক ভূমিকারই সবিস্তার আলোচনা সংখ্যা দু’টিতে। উইলিয়াম জোন্স, ম্যাক্সমুলার, উইলিয়াম কেরি, জেমস হিকি, ডেভিড হেয়ার, বেথুন, সিস্টার নিবেদিতা, চার্লস অ্যান্ড্রুজ়, জেমস লঙ, চার্লস উইলকিন্স, হ্যালহেড, আলেকজ়ান্ডার ডাফ প্রমুখ ভারতবন্ধু ইউরোপীয়দের জীবনকৃতির মূল্যায়ন। শুরুতে উপনিবেশের ইতিহাসের দ্বন্দ্বময় পাঠ প্রস্তুত করেছেন তপন বন্দ্যোপাধ্যায়।
পান্থজন, উপনিবেশিক শাসনে ভারতপ্রেমী ইউরোপীয় ১, ২
সম্পা: গৌর খাঁড়া
৬০০.০০
(২ খণ্ড একত্রে)
উত্তমকুমারকে নিয়ে পত্রিকায় সম্পাদককে বাহুল্যের সমস্যায় পড়তে হয়। এ কালের মূল্যায়ন বাদই দেওয়া গেল, অতীতের ভাল লেখা, স্মৃতিচারণও এত যে, পুনর্মুদ্রণের চাপ হয়ে ওঠে প্রবল। এই সংখ্যাটি সেই সমস্যা যুঝে উজ্জ্বল হয়েছে ভাবনার বিশিষ্টতায়। উত্তমকুমার অভিনীত নাটক শ্যামলী নিয়ে ক্রোড়পত্র বিশেষ প্রাপ্তি; ‘আধুনিক কথাশিল্পে উত্তমকুমার’ প্রসঙ্গে প্রভাতকুমার দাস সঞ্জয় সেনগুপ্ত সাধন চট্টোপাধ্যায়ের লেখাও। একটা বড় অংশ স্মৃতিচিত্রণ: সহ-অভিনেতৃ পরিচালক সাহিত্য-চলচ্চিত্রব্যক্তিত্ব ও পরিজনদের, উত্তমের নিজের কথাও। শেষে একাধিক পঞ্জি প্রকাশিত, খুব কাজের।
বৈশাখী, শতবর্ষে মহানায়ক
সম্পা: ধ্রুবজ্যোতি মণ্ডল
৪০০.০০
সৌম্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও দীপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অপ্রকাশিত পত্রাবলি— প্রসঙ্গসূত্র ও ভূমিকা-সহ— রয়েছে শুরুতেই। বিশেষ করে সৌম্যেন্দ্রনাথের সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব-ভাবনা, পঞ্চাশের দশকে কংগ্রেস-বিরোধী কৌশলগত জোট তৈরি ইত্যাদি পদক্ষেপের প্রেক্ষিতে চিঠিগুলির পাঠ জরুরি। পত্রিকাটির আসল সম্পদ যে তার প্রবন্ধগুলি, প্রমাণিত আবারও: তনিকা সরকার প্রভাত পট্টনায়ক আশীষ লাহিড়ি অনির্বাণ চট্টোপাধ্যায় কুমার রাণা বিশ্বজিৎ রায় প্রমুখ লিখেছেন ফ্যাসিবাদের বিপদ, হিন্দুত্ববাদ, বামপন্থী রাজনীতি, ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমেরিকা থেকে শুরু করে রক্তকরবী-র যক্ষপুরীর শ্রমিক-সঙ্ঘবদ্ধতা নিয়ে।
পরিচয়, শারদ-১৪৩২
সম্পা: অভ্র ঘোষ
২০০.০০
জীবনের বিচিত্র অন্ধকার কবিতা সিংহের উপন্যাসে। তীব্র ঈর্ষা বা প্রতিহিংসা যে অপরাধপ্রবণতার জন্ম দেয়, তারই বিশ্লেষণ; ঘটনার পরত খুলে চরিত্রের অন্তর্লোক উন্মোচন করে সত্যের দিকে এগোতে থাকেন তিনি। “এই শৈলী ডস্টয়ভস্কিকে মনে পড়ায়,” লিখেছেন গোপা দত্তভৌমিক। গোকুল নাগ কেতকী কুশারী ডাইসনের কথাসাহিত্য, অসীম রায়ের প্রবন্ধ, রাহুল পুরকায়স্থের কবিতা নিয়ে অনুসন্ধানী রচনায় ঋদ্ধ পত্রিকাটি। আছে থার্ড থিয়েটার আন্দোলন, মাতৃত্বের বহুস্বর নিয়ে আলোচনা; প্রচ্ছদ প্রকাশ কর্মকারের।
এবং মুশায়েরা, বৈশাখ-আষাঢ় ১৪৩২
সম্পা: সুবল সামন্ত
৬০০.০০
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)