E-Paper

স্মৃতি ও সত্তা ছুঁয়ে ছুঁয়ে চলা

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৯:৪২
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

‘চেলসি’ নামে এক বিলিতি সিগারেটের বিজ্ঞাপন এঁকেছিলেন সত্যজিৎ রায়। স্ট্রিপ কার্টুনে রেসে হারা এক বিমর্ষ সাহেবের গল্প: চেলসিতে সুখটান দিয়ে সে ফের চাঙ্গা হচ্ছে। দেবাশীষ দেব লিখেছেন, “আঙুলের ফাঁকে সিগারেট ধরা রেসুড়েটির চোখের বাঁকা চাউনি-সমেত মুখের গঠন দেখে মনে হতেই পারে সত্যজিৎ যেন তাঁর খ্যাপাটে (পাগলা) দাশুকে শুধু একটা টুপি পরিয়ে দিয়েছেন।” নরেশ গুহর কাব্যগ্রন্থ দুরন্ত দুপুর-এর প্রচ্ছদে ফরাসি শিল্পী অঁরি মাতিসের ড্রয়ি‌ংয়ের সাবলীলতা, আবার পরমপুরুষ শ্রীরামকৃষ্ণ-র প্রচ্ছদ জুড়ে বৈষ্ণব নামাবলির নকশা, মধ্যে পুঁথির আদলে বইটির নাম— আঁকিয়ে সত্যজিতের জানা-অজানা বহু দিক এই বইয়ে।

প্রচ্ছদের সত্যজিৎ ও অন্যান্য

দেবাশীষ দেব

৩৫০.০০

সপ্তর্ষি

কোথাও বেড়াতে যাওয়া মানে কি শুধু সেখানকার পাহাড় বা সমুদ্র উপভোগ করা, জঙ্গল বা শহরে হারিয়ে যাওয়া? বহু পর্যটকই তেমন ভাবে ঘোরেন বটে, কিন্তু যেখানে বেড়াতে যাওয়া, সেখানকার মানুষের সঙ্গে যদি না-ই মেশা যায়, তাঁদের জীবনের এক টুকরো ছুঁয়ে না-ই দেখা যায়, তা হলে তো ছবির বই দেখে নিলেই হয়। শ্রাবন্তী অরুণাচল প্রদেশের জনজাতি গোষ্ঠী সম্বন্ধে লিখেছেন, “‘ট্রাইব’ শুনলে যেমন একটু কম উন্নত মনে করার প্রবণতা হয় সাধারণ মানুষের, তেমন যে নয়, এটা বোঝার জন্যই এদের সঙ্গে কিছুটা সময় কাটিয়ে আসা দরকার।” কোরাপুটে জনজাতিভুক্ত দরিদ্র মহিলার ইশারা বুঝে তাঁর হাতে কিছু খাবার তুলে দেওয়ার পর তাঁর মনে হল, “ভাষা যে একমাত্র সংযোগরক্ষার বাহন নয়, সেটা বোঝা গেল।” রয়েছে মিশর ভ্রমণ নিয়েও এক দীর্ঘ লেখা।

মিঠির চিঠি

শ্রাবন্তী ভৌমিক

২৫০.০০

দে’জ

সন্দেশ, বাঙালির বহু প্রজন্মের নস্টালজিয়া। সেই পত্রিকায় প্রকাশিত স্মৃতিকথার সঙ্কলনের গুরুত্ব নিয়ে তাই প্রশ্ন চলে না। অমল চক্রবর্তী স্মৃতিচারণ করেছেন কার্টুনিস্ট শঙ্করের, তাঁর রাজনৈতিক কার্টুন নেতাদের জ্বালা ধরাত। জওহরলাল নেহরু তাঁর বন্ধু ছিলেন, প্রতি সপ্তাহেই তাঁকে নিয়ে কার্টুন আঁকতেন শঙ্কর। “এমনও হয়েছে যে, কোনো সপ্তাহে নেহরুর কার্টুন না বেরোলে তিনি শঙ্করকে ফোন করে জিজ্ঞাসা করতেন কেন তাঁর কার্টুন বেরোয়নি।” আজকের দিনে এমন ভাবা যায়! বিজয়া রায়ের স্মৃতিকথা তাঁর শাশুড়ি সুপ্রভা রায়কে নিয়ে। সবিতেন্দ্রনাথ রায় বলেছেন প্রচ্ছদশিল্পীদের কথা, বইয়ের আলোচনায় যাঁরা প্রায়ই বাদ! পুণ্যলতা চক্রবর্তীর কলমে সন্দেশ-এর আদিপর্বের কথা, আবার নলিনী দাশের স্মৃতিকথা পুণ্যলতাকে নিয়েই। রয়েছে অমিতা ঠাকুর সুভাষ মুখোপাধ্যায় শঙ্খ ঘোষ নবনীতা দেব সেনের লেখাও।

স্মৃতির সন্দেশ

সম্পা. সুগত রায়

৫৫০.০০

ঋত

লোকসংস্কৃতিতে বিশেষ গুরুত্ব লোকজ খেলাধুলার, অথচ এ ক্ষেত্রে লেখালিখি হয়েছে অল্প। বাংলাতেও লোকখেলা অগুনতি, অনেকগুলিই শহরে বিরল, গ্রামেও চল কমতি। গবেষণা ও ক্ষেত্রানুসন্ধানের পরে এগুলি নথিবদ্ধ করে রাখার গুরুত্বপূর্ণ কাজটি করেছেন লেখকদ্বয়। যত্ন ও শ্রমের যোগফলে বৃহত্তর বাংলার ৮৮টি লোকজ খেলার উপভোগ্য বিবরণে ধরা পড়েছে পরিবর্তনশীল সময়, সমাজ ও মন। বুড়িবসন্তই যে কালভেদে সীতাহরণ, চিনিবিস্কুট গোল্লাছুটের নামভেদ ইত্যাদি জানার সঙ্গেই পরিচয় বাজঘুড়ি, বাক্সঘুড়ির। জলজঙ্গলের বিপদ থেকে উৎসারিত বাঘবন্দি বা কুমির কুমির, জাদুক্রীড়া, জলক্রীড়ার পাশাপাশি মার্বেল, কড়ি খেলা ইত্যাদি নানা খেলার নিয়ম ফের প্রকাশ্যে: যেন ডালা খোলে বিনোদনের গুপ্তধনের। এলাটিং বেলাটিং, ওপেনটি বাইস্কোপ— ‘ছড়ার খেলা’ অংশ বইটির জৌলুস বাড়িয়েছে।

বাংলার লোকজ খেলাধূলা

পিনাকীনন্দন চৌধুরী, ঝর্ণা আচার্য্য

৪০০.০০

মান্দাস

কেন ১৯৪০-৭৭ এই সময়কালকেই বেছে নেওয়া? কথামুখে লেখক জানান, ‘স্বপ্ন আর স্বপ্নভঙ্গের এই দুই দশকের মাঝখানে বয়ে চলা’ সময়ে সমাজ-রাজনীতিতে বিশৃঙ্খলা, ও সেই সূত্রে উদ্ভূত ক্ষমতাতন্ত্রের উপজাত হল কলকাতার মস্তানরা। রাজনীতি, খেলার মাঠ থেকে পাড়ার জলসা, সর্বত্র যারা ক্ষমতার সমান্তরাল আধার; যাদের ‘গল্প’ আজও বেঁচে শহরের স্মৃতিতে। অলিগলি ঘুরে ফিল্ডওয়ার্ক, মৌখিক ইতিহাস তুলে আনা, অন্য দিকে নানা তথ্যসূত্র, সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে মস্তানদের সামাজিক ও তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ— শেষাবধি রূপ পেয়েছে গল্পের মতো সহজ ভাষায়। ভানু বোস গোপাল পাঁঠা বসন্তকুমার সাহা থেকে রাম চ্যাটার্জি, ‘চাইনিজ় ডন’ জারবাতি বা কলকাতার ‘প্রথম মহিলা মস্তান’ নির্মলা দাসী, কানা অজিত থেকে ফাটাকেষ্টর কথা।

কলকাতার তলপেট/ মস্তানির একাল সেকাল

১৯৪০-১৯৭৭

সৌরভ গুহ

৭০০.০০

ব্ল্যাকলেটার্স

লেখক বিরাট সংখ্যক বাঙালির শৈশবের নায়ক। সেই বিরল বহুমুখী প্রতিভাধারীদেরও এক জন, যিনি একাধিক পরিচয়ে বিখ্যাত হওয়ার সামর্থ্য রাখেন। ভারতীয় ফুটবলের এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়ে পায়ের জাদু দেখিয়েছেন, একই সঙ্গে বিশিষ্ট সঙ্গীতজ্ঞও। চোটের কারণে খেলাকে বিদায় জানানোর পর সঙ্গীত পরিবেশনায় যুক্ত হয়েছেন। আবার উচ্চপদস্থ ব্যাঙ্ককর্মী। তাঁর কলমটিও সাবলীল, মাসিক এক সাময়িকীতে ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত তাঁর জীবনের বহুবর্ণ অভিজ্ঞতা সে সময়ই বিশেষ সমাদর পেয়েছিল, এ বার সেই কাহিনি দু’মলাটে। বাড়ির জলহাওয়ার গুণে আশৈশব সংস্কৃতির নানা পরিসর ও ময়দানের গুণিজন-সংসর্গ, সে-কালের শান্ত কলকাতা, ও-পার বাংলার স্মৃতি, গণসংস্কৃতির স্বর্ণযুগকে কাছ থেকে দেখা, স্মরণীয় সব খেলার বিবরণ, অন্তরালে থাকা খেলোয়াড় জীবনের গল্প— অভিমান-দলবদল-ভক্তের চিঠি, শিল্ড জয়ের অনুভূতি। বিশেষ প্রাপ্তি সে সময়ের ছবিগুচ্ছ।

খেলা সুরের গল্পকথা

সুকুমার সমাজপতি

৬৭৫.০০

একলব্য

রবীন্দ্রনাথের ছেলেবেলা, জীবনস্মৃতি-তে তো বটেই, জোড়াসাঁকোর প্রবীণ-নবীন ও নানা প্রজন্মের আরও সদস্যের লেখালিখিতে ধরা আছে ঠাকুরবাড়ির নানা আড্ডার কথা। তার কিছু ঘরোয়া, মেয়েদের আসর; কিছু রীতিমতো পোশাকি, কিন্তু হাসি গান কবিতা অভিনয় খেলা খাওয়া সব মিলিয়ে এক সরেস পারিবারিক ও নান্দনিক পরিসর। আবার পরিবারের গণ্ডির বাইরের জ্ঞানী-গুণীরা যখন যোগ দিতেন সে আড্ডায়, তা পেত অন্য এক মাত্রা। জোড়াসাঁকো নাট্যশালা থেকে ড্রামাটিক ক্লাব, বিদ্বজ্জন সমাগম/সমাবেশ, সারস্বত সমাজ, খামখেয়ালী সভা, পূর্ণিমা মিলন, বিচিত্রা, সঙ্গীত সমাজ, ভাইবোন সমিতি-র চুম্বকে লেখক তুলে ধরেছেন ঠাকুরবাড়ির এই তৃতীয় পরিসরটি। অনেকটাই হয়তো বহুশ্রুত, তবু ছোট্ট বইটি আগ্রহী পাঠকের কাজে দেবে।

ঠাকুরবাড়ির আড্ডা

শুভঙ্কর রায়চৌধুরী

১৫০.০০

পুনশ্চ

শিশুসাথী পত্রিকায় চারমূর্তি-র আবির্ভাব, অভ্যুদয় প্রকাশ মন্দির থেকে বই হয়ে বেরিয়েছিল ১৯৫৭-য়। টেনিদা প্যালা হাবুল ক্যাবলার কাণ্ডকারখানার জয়জয়কার সে থেকেই, পরে নাটকও হয়েছে, আর চারমূর্তি নামেই সিনেমা এক ঘাট বাড়িয়ে দিয়েছে জনপ্রিয়তা। তবে কমিক্সও যে হয়ে গিয়েছে অন্তত ৫০ বছর আগে, আজকের বাঙালি কি মনে রেখেছে তা? যুগান্তর-এ প্রকাশিত, সুবোধ দাশগুপ্তের তেইশ কিস্তির সেই কমিক্সের প্রতিটি পাতা, মায়ের হাতে সেলাই করা খাতায় আঠা দিয়ে সেঁটে রেখেছিলেন দেবাশিস চক্রবর্তী। সেই খাতারই পুনরুদ্ধার এ বার দু’মলাটে। সঙ্গে সুবোধ দাশগুপ্তের ছবির জগৎ নিয়ে প্রাসঙ্গিক, সুলিখিত দু’টি গদ্যরচনাও। মূল কমিক্স অংশটুকু এখনকার প্রযুক্তির ব্যবহারে আর একটু স্পষ্ট, সুন্দর করে ছাপা যেত না?

চারমূর্তি: নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের কাহিনি অবলম্বনে সুবোধ দাশগুপ্তের গ্রাফিক নভেল

৪০০.০০

কলমকারি

বিদ্যাসাগরের জন্মদ্বিশতবর্ষের বছর থেকে অদ্যাবধি সাম্প্রতিক বিদ্যাসাগর-চর্চার অনেকাংশ বর্ণপরিচয় ঘিরে। আলোচ্য বইয়ে লেখক আলোকপাত করেছেন বর্ণপরিচয়-এর দ্বিতীয় ভাগের উপর, বেরিয়েছিল ১৮৫৫-র ১৪ জুন। প্রথম ভাগ নিয়ে আজ পর্যন্ত আলোচনা ও প্রতর্কের পরিমাণ যত, তুলনায় দ্বিতীয় ভাগের প্রতি মনোযোগ তত নয়। দ্বিতীয় ভাগ রচনার উদ্দেশ্য, বলা হয়েছিল, সংযুক্ত বর্ণ শিক্ষা; এর ৬২তম সংস্করণের বিজ্ঞপ্তিতে অতিরিক্ত চারটি পাঠের সন্নিবেশের কথা বলা হয়, সঙ্গে আর একটি বিজ্ঞাপনে জানা যায়, নারায়ণচন্দ্র বিদ্যারত্ন “আদ্যোপান্ত সংশোধন করিয়া... বিদ্যাসাগর মহাশয়ের প্রণীত বর্ণপরিচয় দ্বিতীয় ভাগের একটি সংস্করণ প্রকাশ করেন। উপস্থিত সংস্করণ সেই সংস্করণের অনুরূপ মাত্র...” এই সব তথ্য তো আছেই, সঙ্গে তিনটি লেখায় বর্ণপরিচয় ও শিশুশিক্ষা-র তুলনামূলক আলোচনা, নীতিশিক্ষা প্রসঙ্গে এই বইয়ের নিহিত মনোভাবও জানিয়েছেন লেখক।

বিষয়: বর্ণপরিচয়

সুগত মিত্র

১৫০.০০

পূর্বা

ভারতের হস্তশিল্পী-কারুশিল্পীদের জাতীয় পুরস্কারে সম্মানিত করার প্রথা শুরু হয় ১৯৬৫-তে। ১৯৬৫-২০১৯ সময়কালে সম্মানিত দেশের মোট ১১৫৫ জন শিল্পীর মধ্যে রয়েছেন বাংলার ১০৩ জন। জাতীয় স্তরে সিনেমা বা সাহিত্যে পুরস্কৃতদের নিয়ে যে চর্চা, এই শিল্পীদের নিয়ে তার কতটুকু হয়, সন্দেহ। সেই চেনানোর কাজটিই করেছেন লেখক, ১৯৬৫-৯৪ ত্রিশ বছরে বাংলার ৫২ জন কারুশিল্পীর জীবনকথা লিখেছেন। রজনীকান্ত চিত্রকর শম্ভুনাথ সূত্রধর মীরা মুখোপাধ্যায় নয়ন দত্ত আলিমা খাতুন শঙ্কর বসাক প্রমুখের শিল্পকৃতির বিশদ তথ্য, প্রাসঙ্গিক ছবি বইটিকে প্রামাণ্যতা দিয়েছে। প্রতি শিল্পীর নামের পাশে তাঁর শিল্পক্ষেত্রটি দেখলেই বোঝা যায় বাংলার শিল্পবৈচিত্রের বিস্তার: পটচিত্র পুতুল ডোকরা কাঁথা শোলা ধাতু কাঠ মাটি শঙ্খ মাদুরশিল্প হাতির দাঁতের কাজ জামদানি শাড়ি মসলিন ধুতি— আরও কত কী!

কারুশিল্প: বাংলার গৌরবগাথা

বাসুদেব ঘোষ

৫০০.০০

লোকসংস্কৃতি ও আদিবাসী সংস্কৃতি কেন্দ্র

পৃথিবীর সব জীবের উৎপত্তি, তাদের পারস্পরিক সম্পর্ক ও দীর্ঘ বিবর্তনকে একটি গাছের নকশার মাধ্যমে বিবৃত করেছিলেন চার্লস ডারউইন। এই ধারণাটিই অন দি অরিজিন অব স্পিশিজ়-এ বিবৃত এবং জীববিজ্ঞান, পরিবেশ, সংরক্ষণ সংক্রান্ত তাবৎ গবেষণার মূল ভিত্তি। এই যুগান্তকারী পর্যবেক্ষণের পশ্চাতে ছিল তাঁর দীর্ঘ অভিযাত্রিক অভিজ্ঞতা, যার অনেকখানিই সংগৃহীত প্রকৃতিবিদ রূপে, জাহাজে চেপে তাঁর বিশ্বভ্রমণে। গ্রন্থে সেই যাত্রা-শুরুর পূর্বকথা, গ্যালাপ্যাগোসে তাঁর নমুনা সংগ্রহের কাহিনি, কী ভাবে সেগুলি বিশ্লেষণের মাধ্যমে দীর্ঘ পরিশ্রমে তিনি ‘জীবনের গাছ’টিকে খাতায়-কলমে রূপায়িত করলেন— সেই ইতিবৃত্ত বিবৃত। জলপথের মানচিত্র, দ্বীপপুঞ্জের স্থলচর ও জলচরদের সাদা-কালো ও রঙিন আলোকচিত্র এবং সহায়ক গ্রন্থপঞ্জি বইটির সম্পদ। তবে তথ্যসমৃদ্ধ হলেও, পাঠসুখে ঘাটতি অনুভব হয় খানিক।

ডারউইন ও জীবনের গাছ

কৌশিক

১৯৯.০০

নেচারিজ়ম

দলিত, নারী, আদিবাসী, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ— এঁরা সকলেই একটি সূত্রে গাঁথা। রাষ্ট্রের বিচারে এঁদের সকলেরই অবস্থান ক্ষমতার কেন্দ্রের প্রান্তে, আর সমাজের বিচারে তাঁদের মনে করা হয় নগণ্য। এই প্রান্তিকীকরণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের যে ইতিহাস, এ দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক সংস্কৃতির একটি বড় অধ্যায় তা। সমাজ, রাষ্ট্র ও প্রান্তিকতা নিয়ে সেই আলোচনার বৃহত্তর পরিসরে আলোচ্য বইটি মূল্যবান। গ্রন্থবদ্ধ পঁচিশটি প্রবন্ধের মধ্যে বিশেষ করে উল্লেখ করতে হয়— নিম্ন জাতির মানুষ ও দেশভাগ, যোগেন্দ্রনাথ মণ্ডল, আম্বেডকর থেকে পেরিয়ার বিষয়ক লেখাগুলি। দলিত আন্দোলনের ইতিহাসের প্রেক্ষিতে যাঁরা উৎসাহী, তাঁরা উপকৃত হবেন এর অনেকগুলি প্রবন্ধ থেকেই।

সমাজ, রাষ্ট্র ও প্রান্তিকতা

দেবী চট্টোপাধ্যায়

৫০০.০০

অনুষ্টুপ

নিবন্ধগ্রন্থ, আখ্যানেরও সমাহার। অধিকাংশ রচনাই গত শতকের ষাট-সত্তর দশকের কলকাতার স্মৃতি, প্রত্যক্ষদর্শীর মানচিত্র। দু’টি রচনার পটভূমি ভাগলপুর, সেখানেও সূক্ষ্মশরীরে উপস্থিত এ শহর। উত্তর কলকাতার পুরনো নোনাধরা বাড়ি, বড় ফুটবল মাঠওয়ালা সরকারি স্কুল, অলস রোদের অলিগলি, ট্রামের শব্দ, জানলার খড়খড়ি দিয়ে ঘরে ঢুকে-পড়া সকালের রাস্তায় ছিটানো গঙ্গাজলের গন্ধ, অগুনতি অনুষঙ্গ পাঠককে নির্জন অনুভূতিতে পৌঁছে দেবে। মনে পড়াবে অস্থির সময়ের কথাও: মনোরম গদ্যের ভিতর লীন হয়ে আছে এক রাজনৈতিক ভাষ্য, শম্ভু মিত্রের নাট্যাভিঘাত থেকে রাষ্ট্রের সন্ত্রাস। চমৎকার প্রচ্ছদ-অলঙ্করণ করেছেন হিরণ মিত্র।

লাট্টুপাড়ার লেত্তি-কথা

অশোককুমার মুখোপাধ্যায়

৩৪৯.০০

সৃষ্টিসুখ

দাবায় সাদা-কালো ঘুঁটির লড়াইয়ে প্রথম দান দেওয়ার ‘অধিকার’ সাদার। দাবাখেলার প্রধান দুর্বলতাই যে ‘বর্ণবৈষম্য’, আমরা কি ভেবে দেখেছি তা? ইতিহাসেও তারই প্রতিফলন: আমেরিকায় একটা সময় কৃষ্ণাঙ্গ দাবাড়ুরা অভিজাত দাবা ক্লাবে অনুশীলনের সুযোগ পেতেন না, প্রতিযোগিতায় প্রবেশ মিলত না। আধুনিক প্রতিযোগিতামূলক দাবার আখ্যানের কেন্দ্রে রয়েছে পশ্চিমি বিশ্ব— পূর্বতন উপনিবেশের দাবাড়ুরা নির্মাণ করেছেন তার পাল্টা, প্রতিস্পর্ধী বয়ান। আবার দাবার বোর্ডে ছায়া ঘনিয়েই আছে পুরুষতন্ত্র ও লিঙ্গ-রাজনীতির, হাঙ্গেরি থেকে ভারত বা ইরানের মেয়েরা লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন তার বিরুদ্ধে। তিনটি গদ্যে লেখক তুলে ধরেছেন মূলধারার ক্রীড়া-লেখালিখিতে অনুচ্চারিত এই প্রান্তজনদের প্রতিরোধ-কথা।

স্পর্ধার ৬৪ খোপ: প্রান্তজনের দাবা

প্রবুদ্ধ ঘোষ

২৫০.০০

প্রতিক্ষণ

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Review Satyajit Ray chess Charles Darwin Jorasanko Thakur Bari

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy