Advertisement
E-Paper

অনুবাদে এগিয়ে বাংলাদেশ

ন‌ন্দন চত্বরে সদ্যসমাপ্ত বাংলাদেশ বইমেলা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, অনুবাদে তারা কী ভাবে পশ্চিমবঙ্গকে পাঁচ গোলে হারিয়েছে! গার্সিয়া মার্কেজ, মারিও ভার্গাস লোসা থেকে মিলান কুন্দেরা অনেকেই দুই মলাটের বাংলা অনুসৃজনে বিভিন্ন স্টলে হাজির। প্লাতো থেকে মাকিয়াভেলি বাদ যাননি কেউই।

শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০০:০১
প্লেটোর আইনকানুন, অনুবাদ: আমিনুল ইসলাম ভুইয়া। বাংলা একাডেমী ঢাকা, ৪৬০.০০

প্লেটোর আইনকানুন, অনুবাদ: আমিনুল ইসলাম ভুইয়া। বাংলা একাডেমী ঢাকা, ৪৬০.০০

ন‌ন্দন চত্বরে সদ্যসমাপ্ত বাংলাদেশ বইমেলা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, অনুবাদে তারা কী ভাবে পশ্চিমবঙ্গকে পাঁচ গোলে হারিয়েছে! গার্সিয়া মার্কেজ, মারিও ভার্গাস লোসা থেকে মিলান কুন্দেরা অনেকেই দুই মলাটের বাংলা অনুসৃজনে বিভিন্ন স্টলে হাজির। প্লাতো থেকে মাকিয়াভেলি বাদ যাননি কেউই। প্রায় ৫০০ পৃষ্ঠার টীকাসহ ঢাউস ইলিয়াড-ও হাজির। ইউরোপ থেকে লাতিন আমেরিকা, দুই মহাদেশের ধ্রুপদী এবং আধুনিক সাহিত্য কিছুই বাকি নেই। ঢাকা বাংলা একাডেমী গোড়া থেকেই অনুবাদে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। বিশেষ করে মধ্যযুগের বাংলার ইতিহাসের অনেক আকরগ্রন্থ তারা সরাসরি ফার্সি থেকে অনুবাদ করিয়েছে। নবতিপর আবুল কালাম মোহাম্মদ যাকারিয়া অনুবাদ করেছেন সিয়ার-উল-মুতাখ্‌খিরিন-এর মতো মহাগ্রন্থ (দিব্যপ্রকাশ)। বাংলাদেশের সৌজন্যে বাংলা ভাষা আর স্থাণু হয়ে নেই, অনুবাদের ট্রেডমিলে সে দুদ্দাড়িয়ে ছুটছে।

পশ্চিমবঙ্গের লেখক-প্রকাশকরা এটা দেখলেই মঙ্গল। এখানে মানবেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়, অরুণ সোমের মতো অনুবাদকরা আছেন, কিন্তু তাঁদের সে ভাবে তুলে ধরা হল কোথায়? এ বঙ্গে বড় প্রকাশকদের যুক্তি, লোকে ইংরেজিতেই কুন্দেরা, ভার্গাস লোসা পড়ে। ফলে বাংলায় বার করলেও বাজারে খায় না। লিট্ল ম্যাগের ছোট প্রকাশকরা মার্কেজ, কুন্দেরা সংখ্যা বের করেন। সেখানে অনেক সময়েই তত্ত্বসন্দর্ভের বদহজম। তত্ত্বের দরকার নেই, ভিন্ন দেশের ভিন্ন ভাষী লেখককে বাংলা ভাষায় নিয়ে এলেও অনেক কাজ হয়। একদা সুধীন্দ্রনাথ রাহার অনুবাদে বিশ্বসাহিত্যের অনেক কিছু সংক্ষিপ্তসারে ছোটদের সামনে হাজির হত। দেব সাহিত্য কুটীরের অনুবাদ সিরিজের মতো অভ্যুদয় প্রকাশ মন্দিরও বহু অনুবাদ প্রকাশ করেছে। বিশ্বসাহিত্যের প্রথম স্বাদ বাঙালি ছেলেমেয়েরা এখানেই পেত, তা সে সবের মান যাই হোক না কেন। তখন প্রেমেন্দ্র মিত্র কাম্যুর আউটসাইডার অনুবাদ করেন, লীলা মজুমদার লাস্ট ফর লাইফ। সেই জগৎটা নষ্ট করে সব দায় ইংরেজি মিডিয়াম, টিভি শো কি স্মার্ট ফোনের ঘাড়ে চাপালে হবে?

হায় পশ্চিমবাংলা! সোভিয়েত রাশিয়া টুকরো টুকরো, মস্কোর প্রগতি, ভস্তক, রাদুগা প্রকাশন, ননী ভৌমিকের মতো অনুবাদক নেই। বাংলাদেশ বইমেলা প্রমাণ দিল, বাংলা ভাষার শক্তিমত্তা অন্যত্র। সুপারপাওয়ারের পিঠ চাপড়ানি না থাকলেও সে নিজের জোরে, অনুবাদে অক্লেশে টিকে থাকতে পারে।

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy